ভাসমান সবজি চাষে আনছে অসাধারণ সাফল্য। পরিবেশবান্ধব এ সবজি চাষ পেয়েছে বিশ্ব স্বীকৃতি। বাংলাদেশের কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে ভাসমান সবজি চাষ। সব ধরনের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া দরকার।
, ১৮ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৩ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ০১ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ১৭ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সম্পাদকীয়
তথ্যমতে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ অনেক জায়গায়ই হাওর-বাঁওড়, বিল-ঝিল ও নদী-নালায় আচ্ছাদিত। এদিকে সমুদ্রের কাছাকাছি এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে থাকে। সত্যি কথা বলতে কি, এই ধান-শালিকের দেশের সিংহভাগ এলাকা বছরের প্রায় ৭ মাস পানিবন্দি থাকে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, পানিমগ্ন থাকার কারণে কি কৃষি কাজ হয় না বা করা যাবে না? হ্যাঁ, অবশ্যই করা যাবে। এ প্রেক্ষাপটে অন্যতম নিয়ামক ও আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভাসমান সবজি চাষ। এ সূত্র ধরে উল্লেখ্য যে, দক্ষিণাঞ্চলের নাজিরপুর, বানারীপাড়া, উজিরপুর, স্বরূপকাঠি, আগৈলঝাড়া প্রভৃতি উপজেলার বিস্তীর্ণ পানিভূমিতে সবজি চাষ করে চলেছে উল্লেখ্যযোগ্যসংখ্যক কৃষক। এখানে ঢেঁড়শ, চিচিঙ্গা, পেঁপে, লাউ, কুমড়া, শিম, বরবটি, টমেটো, বেগুন, করলা, ঝিঙ্গা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, সবুজ কপি, ইত্যাদির চারা উৎপাদনসহ কলমিশাক, কচু, পাটশাক, লালশাক, লাউশাক, পালংশাক, ডাঁটাশাকও চাষ করা হয়। বর্ষা মৌসুমে এসব এলাকার হাজার হাজার হেক্টর নিচু জমি কচুরিপানা এবং অন্যান্য পানীজউদ্ভিদসহ পানিমগ্ন থাকে। কিন্তু জলাবদ্ধতা আর কচুরিপানা অভিশাপ হিসেবে মনে করা হলেও, এখন আর তা নয়। বাস্তবসম্মত কৌশলগত চাষের কারণে পরিণত হয়েছে আশীর্বাদে। যতদূর তথ্যাদি সংগ্রহ করেছি, তাতে প্রতীয়মান হয় যে এই ভাসমান সবজি চাষের পথ চলা শুরু হয় নাজিরপুর থেকে এবং কালক্রমে ধীরে ধীরে এ অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, কমবেশি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। মজার ব্যাপার হলো, এর জনপ্রিয়তা ও আর্থিক দিক দিয়ে, গ্রহণযোগ্যতার দিক দিয়ে সারণি ধরে বাংলাদেশের সবজি চাষকে স্বীকৃতি দিয়েছে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (জাতিসংঘ)। তাছাড়া ভাসমান আবাদ ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর গ্লোবাল অ্যাগ্রিকালচার হেরিটেজ সিস্টেম সাইট হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছে জাতিসংঘ থেকে, যা কম কথা নয়।
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার চর পালরদী গ্রামের কৃষক শাহীন রাড়ী ও জুলহাস মিয়াসহ অনেকেই পাঁচ বছর ধরেই ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ করছে। এবার ভাসমান বেডে সবজি চাষ করছে লাউ শশাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি। প্রতিটি সারিতে প্রায় ২০ মিটার লম্বা ভাসমান বেড প্রস্তুত করে তাতে চাষ করছে ফসল।
জানা যায়, ছোট ছোট বেড কচুরিপানা দিয়ে তৈরি করে সেখানে চাষ হচ্ছে ঢেঁড়স, বরবটি, লাউ, কুমড়া, লালশাকসহ বিভিন্ন ধরণের সবজি। সার কিংবা কীটনাশক ছাড়াই বর্ষা মৌসুমে বছরের প্রায় ৬ মাস এ পদ্ধতিতে চাষ করা যায়।
কৃষকরা বলছেন, বিগত কয়েক বছর ধরে তারা ভাসমান এই পদ্ধতিতে সবজির চাষ করছে। এর ফলে কম খরচে উৎপাদন বেশি হওয়ায় লাভও ভালো পাচ্ছে চাষিরা। অনেকে এক মৌসুমে ৪০-৫০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করছেন।
পানিবদ্ধ জমিতে যেখানে স্বাভাবিক পদ্ধতিতে চাষ করার কোনো সুযোগ নেই সেখানে এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ অর্গানিকভাবে এই সবজি উৎপাদিত হয় বলে জনস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। চাষ হচ্ছে বিষ মুক্ত সবজি।
ভাসমান বেডের সাথে অর্ধভাসমান পদ্ধতি, বস্তা পদ্ধতি, ঢালি পদ্ধতি, ড্রাম পদ্ধতি, ডাইক পদ্ধতি, প্যারামিড পদ্ধতিসহ ইত্যাদি ভাবে পানিবদ্ধ ও পানিমগ্ন পতিত জমিতে চাষ হচ্ছে।
এ প্রেক্ষিতে উল্লেখ্য যে, এক দশক আগে ভাসমান বেডে সবজি ও চারা উৎপাদন হতো মাত্র ৫০ থেকে ৭০ হাজার টন। এখন তা দেড় লাখ টন অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে বরিশাল ও পিরোজপুরের ‘মডেল’ দেশের ২৪টি জেলায় সম্প্রসারিত করা হয়েছে। এটা সত্য যে, বর্ষা মৌসুমে, বিশেষ করে কোনো এলাকা বন্যাকবলিত হলে, সেক্ষেত্রে সবজি ও চারার বড় অবলম্বন হলো ভাসমান চাষ পদ্ধতি। মজার ব্যাপার হলো, ঢাকা রাজধানীর সমুদয় ছাদবাগানের বাহারি চারার জোগান আসে এ এলাকা থেকে। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে, দেশের ৪৫ লাখ হেক্টর স্থান পানি সীমার মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১০ থেকে ২০ শতাংশ জমিতে যদি ভাসমান সবজির আবাদ করা যায়, তাহলে দেশের সবজি ও মসলা উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সম্ভব। এদিকে পরিবর্তিত পানিবায়ুর ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব ও সহায়ক হলো এই ভাসমান সবজি চাষ। তা ছাড়া বন্যা, ঝড় ও পানিচ্ছ্বাসেও তেমন ক্ষতির আশঙ্কা নেই। আর যদি সেইভাবে উদ্যোগ নেওয়া যায়, তাহলে এখনকার উৎপাদিত চারা আশপাশের দেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হতে পারে। তা ছাড়া ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নতুন মাত্রায় যোগ হয়েছে। এই কারণে আগের অনাবাদি জমির মূল্য ও কদর বেড়েছে। এ ব্যাপারে উল্লেখ্য যে, সংশ্লিষ্ট চাষিরা নিজেরা স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার পাশাপাশি অন্যদেরও প্রকারান্তরে স্বাবলম্বী করার পথ খুলে দিয়েছেন। কেননা সবজি ও চারা কেনা-বেচা এবং পরিবহনের সুবাদে কয়েক লাখ লোকের জীবিকার পথ সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয়, সৌন্দর্যের দিক দিয়েও কম নয়। সারি সারি এসব ভাসমান ধাপের অপরূপ সৌন্দর্য বাঙালির মনে বাড়তি হিল্লোল বয়ে আনছে বললে অত্যুক্তি হবে না।
পরিশেষে বলতে চাই, এই পরিবেশবান্ধব ভাসমান সবজি প্রযুক্তি আমাদের নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড়ের দেশে সত্যি আশীর্বাদস্বরূপ এবং আগামী দিনের আলোকবর্তিকা। তাই এই পটেনশিয়াল কার্যক্রমকে আরও প্রসার এবং অর্থবহ করে তোলার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পর্যায়ের লোকদের অংশীদারত্বের আদলে বিভিন্ন আঙ্গিকে তৎপরসহ এগিয়ে আসতে হবে ইনশাআল্লাহ।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ব্যাংক গ্রাহকদের খালি হাতে বা নাম মাত্র অর্থে ফেরানো যাবে না কথিত অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিশ্চয়তার পাশাপাশি যথাযথ ব্যবস্থা প্রদান করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিশ্বে জ্বালানীর দাম এমনেই কমছে পাশাপাশি শুধুমাত্র কাঠামো সংস্কারই ১৫ টাকা কমানো সম্ভব হলেও সেদিকে নজর দিচ্ছে না কেন অন্তর্বর্তী সরকার? জ্বালানী তেলের দাম কমালে দ্রব্যমূল্যের দাম সহজেই কমবে
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলাদেশে মিডিয়াগুলো ইহুদীদের অদৃশ্য ইশারায় দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের উচিত- দেশের সব মিডিয়া বর্জন করে আলাদাভাবে সম্মানিত ইসলামী মিডিয়া গঠন করা।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক হুমকী স্বরূপ আরাকান আর্মিকে এক্ষুনি প্রতিহত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশে সাড়ে ৩ কোটি শুধু শিশুই সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং সব প্রাপ্ত বয়স্করাও ক্ষতিগ্রস্থ সিসার ক্ষতি থেকে বাঁচতে সুন্নতী তৈজসপত্র ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের জিনিস ক্রয়ে নিবেদিত হতে হবে ইনশাআল্লাহ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহাব্যার্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জ্বালানী তেলের দাম এক্ষুনি কমাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনেক কিছু করার প্রচারনা চালালেও জিডিপি এবং দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি অর্থনীতির লাইফ লাইন এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই করছে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিঙ্গাপুর, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী জোরদার হচ্ছে, সংস্কারের দাবীদার সরকার কী করে নির্বিকার থাকতে পারে?
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এক্ষুনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পাচারকৃত ১৭ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে শামুকের মত ধীর গতি বরদাশতের বাইরে
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)