মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা হজ্ব শরীফ উনার ৩৭নং আয়াত শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট (কুরবানীর পশুর) রক্ত এবং গোশত কোনটাই পৌঁছেনা, বরং উনার নিকট তোমাদের তাক্বওয়া,পরহেযগারী পৌঁছে। ”
কুরবানী করতে হবে খালিছভাবে। যারা খালিছভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য কুরবানী করেন, তাদের কুরবানীর পশুর রক্ত মাটিতে পতিত হওয়ার পূর্বেই মহান আল্লাহ পাক তিনি তা কবুল করেন।
প্রত্যেক মুসলমানের দ্বায়িত্ব-কর্তব্য হলো- মহান আল্লাহ পাক উনার ও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খালিছ সন্তুষ্টি-রেযামন্দি হাছিল করার উদ্দেশ্যে সর্বপ্রকার লৌকিকতা মুক্ত হয়ে শরঈ নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে কুরবানী করা।
, ০১ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১০ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ০৮ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ২৫ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহাপবিত্র ক্বওল শরীফ-২
আল-ইহসান প্রতিবেদন:
ছাহিবাতু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, হাবীবাতুল্লাহ, ছাহিবায়ে নেয়ামত, রহমাতুল্লিল আলামীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট ইয়াওমুন নহরে সকালের সবচেয়ে প্রিয় আমল হচ্ছে কুরবানী করা। আদম সন্তানের জন্য এদিন কুরবানী করার চেয়ে অধিক কোন উত্তম আমল মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট নেই। এই কারণে কুরবানীর পশুর শিং, পশম এবং খুর যেগুলো ফেলে দেওয়া হয় সেগুলোও কিয়ামতের দিন ওজনের পাল্লায় আনা হবে। এমনকি সেই পশুর রক্ত মাটিতে পতিত হওয়ার পূর্বেই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কুরবানী কবুল হয়। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, কুরবানী করতে হবে খালিছভাবে। যারা খালিছভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য কুরবানী করেন, তাদের কুরবানীর পশুর রক্ত মাটিতে পতিত হওয়ার পূর্বেই মহান আল্লাহ পাক তিনি তা কবুল করেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা হজ্ব শরীফ উনার ৩৭নং আয়াত শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট (কুরবানীর পশুর) রক্ত এবং গোশত কোনটাই পৌঁছেনা, বরং উনার নিকট তোমাদের তাক্বওয়া,পরহেযগারী পৌঁছে। ” অর্থাৎ কুরবানী কতটুকু মহান আল্লাহ পাক উনার উদ্দেশ্যে করা হলো, মহান আল্লাহ পাক তা দেখেন। সুতরাং কুরবানীসহ সমস্ত ইবাদত-বন্দেগী মহান আল্লাহ পাক উনার জন্যই করতে হবে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা আনয়াম শরীফ উনার ১৬২নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই আমার নামায, আমার কুরবানী এবং হায়াত-মউত সমস্ত কিছু মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। ” তাই যে কুরবানী মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য করা হবে, সেটাই মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে পৌঁছাবে। আর যদি কুরবানীর মধ্যে লৌকিকতা থাকে, তখন এই কুরবানীর দ্বারা কোন ফযিলত পাওয়া যাবে না।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, সমস্ত আমল একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য করতে হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, (আমার সম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলে দিন, নিশ্চয়ই আমার নামায, আমার কুরবানী, আমার হায়াত, মউত সবই মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। ” তাই সম্মানিত ছলাত এবং কুরবানী যখন মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য করা হবে তখন বান্দার জন্য সীমাহীন খায়ের, বরকত এবং কামিয়াবী থাকবে। অন্যথায় কোন কামিয়াবী নেই।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত মিখনাফ ইবনে সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আরাফার দিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে অবস্থান করছিলাম। আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, “হে লোক সকল! নিশ্চয়ই প্রত্যেক আহলে বাইত তথা প্রত্যেক মালিকে নিসাবের পক্ষ থেকে প্রত্যেক বছরই পবিত্র কুরবানী করা ওয়াজিব। ”
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, হানাফী মাযহাব মতে যারা মালিকে নিছাব, তাদের উপর কুরবানী ওয়াজীব। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তির কুরবানী করার সামর্থ রয়েছে, সে যদি কুরবানী না করে, তাহলে সে যেন ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয় অর্থাৎ ঈদগাহে না আসে। ” তাই যারা মালিকে নিছাব হবে, তারা অবশ্যই কুরবানী করবে। মালিকে নিছাব ঐ ব্যক্তিকে বলা হয়, যার কাছে কুরবানীর তিন দিন অর্থাৎ যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার ১০ তারিখ সুবহে সাদিক হতে ১২ তারিখ মাগরিব পর্যন্ত সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপার সমপরিমান টাকা রয়েছে। আর কারো যদি হাওয়ায়েযে আছলিয়া তথা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অতিরিক্ত সম্পদ থাকে যা নিছাব পরিমাণ তবে সেও কুরবানী করবে।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি পবিত্র কুরবানী উনার দিনকে ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারণ করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি। মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত দিনকে এই উম্মতের জন্য (ঈদের দিন হিসেবে) সাব্যস্ত করেছেন। অর্থাৎ, মহান আল্লøাহ পাক তিনি প্রতিটি আমলের মধ্যে বান্দার জন্য বেহিসাব নেয়ামত, বরকত, ফজিলত এবং সওয়াব রেখেছেন। তারপরও বান্দা শুকরিয়া করে না, আমল করার কোশেশ করেনা। নিজেকে নেককার ও জান্নাতী বানানোর কোশেশ করেননা।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, মূলকথা হলো-কুরবানী করতে হবে খালিছভাবে। যারা খালিছভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য কুরবানী করেন, তাদের কুরবানীর পশুর রক্ত মাটিতে পতিত হওয়ার পূর্বেই মহান আল্লাহ পাক তিনি তা কবুল করেন। প্রত্যেক মুসলমানের দ্বায়িত্ব-কর্তব্য হলো- মহান আল্লাহ পাক উনার ও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খালিছ সন্তুষ্টি-রেযামন্দি হাছিল করার উদ্দেশ্যে সর্বপ্রকার লৌকিকতা মুক্ত হয়ে শরঈ নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে কুরবানী করা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিশেষ আইয়্যামুল্লাহ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২২শে জুমাদাল ঊলা শরীফ। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সকলের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে- এ মহান দিবস অত্যন্ত জওক-শওক এবং সাখাওয়াতির সাথে ব্যাপকভাবে উদযাপনে সার্বিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করা।।
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবত্রি সুন্নত মুবারক পালনরে অফুরন্ত ফযীলত মুবারক।
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
উত্তম কথা উত্তম গাছরে ন্যায় ফলদায়ক।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আপনি বলুন, দুনিয়াবী সম্পদ সামান্য। আর মুত্তাকীগণ উনাদের জন্য পরকালই উত্তম এবং তোমাদের প্রতি সামান্য অবিচারও করা হবে না। " পরকালরে তুলনায় দুনযি়াবী সম্পদ অতি সামান্য।
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যখন তোমরা কাউকে আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে গালি দিতে দেখবে তখন তোমরা বলবে, তোমাদের এ মন্দ কাজের জন্য তোমাদের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে তিরস্কার করা, গালমন্দ করা কঠিন লা’নতের কারণ।
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক বা পবিত্র জীবনী মুবারক জানা ও বেশি বেশি সর্বত্র আলোচনা করা এবং প্রতিক্ষেত্রে উনাকে পরিপূর্ণরূপে অনুসরণ-অনুকরণ করা সকলের জন্যই ফরয।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বর্তমানে মুসলমানরা যে সারাবিশ্বে ইহুদী-নাছারাদের দ্বারা যুলুম ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তার একটাই কারণ- মুসলমানরা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। নাঊযুবিল্লাহ!¬
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পর্দা বা বোরকা মুসলমানগণ উনাদের দ্বীনি অধিকার আর খাছ করে মুসলিম মহিলাগণ উনাদের সম্মান এবং ব্যক্তিত্বেরও প্রতীক।
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
অন্তর থেকে বদ খাছলতসমূহ দূর করে দিয়ে পবিত্র নেক খাছলতসমূহ পয়দা করার মাধ্যমেই হাক্বীক্বী ইছলাহ বা পরিশুদ্ধতা লাভ সম্ভব। মুহলিকাতের (বদ খাছলত) কারণে ক্বলব বিনষ্ট হয়। আর মুনজিয়াতের (নেক খাছলত) কারণে ক্বলব পরিশুদ্ধ হয়।
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনাকে সম্মান করবেন, আমি ক্বিয়ামতের দিন উনার জন্য শাফা‘য়াতকারী হবো। ” সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সর্বোচ্চ রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সমুন্নত শান-মান মুবারক নিয়ে সংশয় ও সন্দেহ করা, উনাদের সমালোচনা করা সুস্পষ্ট হারাম, কুফরী ও কবীরাহ গুণাহ এবং কঠিন লা’নতগ্রস্ত হওয়ার কারণ। মূলত, উনারাই হচ্ছেন ঈমান এবং জান্নাতের মালিক। উনাদের প্রতি ঈমান না আনলে ঈমানদার হওয়া যায়না। জান্নাতীও হওয়া যায়না।
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার যিকিরকারী ব্যক্তি জীবিত আর যে মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির করেনা সে ব্যক্তি মৃত।
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)