আজ মহা-মহিমান্বিত ১৫ই রজবুল হারাম শরীফ! সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত সিবত্বতু রসূল আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। এবং সম্মানিত ক্বিবলা মুবারক পরিবর্তন দিবস। সুবহানাল্লাহ!
এ সুমহান দিবস মুবারক উনার তাৎপর্য অনুধাবন করা গোটা মুসলিম উম্মাহর জন্য ফরয।
, ১৫ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ৩০ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ২৮ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ১৩ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সম্পাদকীয়
মুহব্বত মুবারক উনার পূর্ব শর্ত হলো মা’রিফত মুবারক অর্জন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মা’রিফত মুবারক অর্জন তখনই হবে, যখন উনার পবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মা’রিফত মুবারকও অর্জন হবে। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আয় মহান আল্লাহ পাক! আমার পবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালামগণ উনারা নিশ্চয়ই মহান পবিত্র। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
এই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার আলোকে নি¤েœাক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ মুবারক নাযিল হয়, “নিশ্চয়ই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি চান হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে পবিত্র মুবারক করার মতো পবিত্র মুবারক করতে অর্থাৎ উনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সৃষ্টি মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মুবারক সৃষ্টির মধ্যে একক ও বেমেছাল। উনার সাথে কারো তুলনা হয় না। কাজেই উনার সাথে নিসবত মুবারকযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তিত্ব, বস্তু, বিষয় ইত্যাদিই সর্বশ্রেষ্ঠ ও মর্যাদাবান। উনার পবিত্র ক্বদম মুবারক উনার স্পর্শধন্য মাটি মুবারক- পবিত্র কা’বা শরীফ, পবিত্র আরশে আযীম শরীফ, পবিত্র কুরসী মুবারক, পবিত্র লওহ মুবারক, পবিত্র কলম মুবারক থেকে অধিকতর সম্মানিত ও মর্যাদাবান। সেক্ষেত্রে উনার আখাছ্ছুল খাছ নিসবতযুক্ত, তায়াল্লুক প্রাপ্ত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মর্যাদা-মর্তবা মুবারক, ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কিরূপ হবে- তা সহজেই অনুমেয়।
প্রসঙ্গত, আজ পবিত্র ১৫ই রজবুল হারাম শরীফ। আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত সিবত্বতু রসূল আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ! সঙ্গতকারণেই আজকের দিনটি অব্যক্ত, অবর্ণনীয় রহমত মুবারক, বরকত মুবারক, নাজাত মুবারক ও ফযীলতপূর্ণ একটি দিন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
সঙ্গতকারণেই, সকল মুসলমানের জন্য ফরয হলো, উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক জেনে প্রতি ক্ষেত্রে উনাকে অনুসরণ-অনুকরণ করা। আর সরকারের জন্যও ফরয হচ্ছে- উনার পবিত্র জীবনী মুবারক শিশুশ্রেণী থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ শ্রেণী পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করা। পাশাপাশি এদিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা।
অপরদিকে উল্লেখ্য, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র হিজরত মুবারক করার পর ১৬ মাস ৩ দিন মুসলমানগণ উনারা পবিত্র বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ উনার দিকে মুখ করে নামায আদায় করেন। আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে অবস্থানকালীন পবিত্র কা’বা শরীফ ও পবিত্র বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ উনাদের উভয়কে সামনে রেখে নামায আদায় করতেন। পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে হিজরত মুবারক করার পর পবিত্র কা’বা শরীফ একদিকে ও পবিত্র বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ অন্যদিকে পড়ে যায়; তাই তিনি বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ উনার দিকে মুখ করে নামায আদায় করেন। তবে আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চাচ্ছিলেন যেন হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ক্বিবলাই আমাদের ক্বিবলা হয়। অবশেষে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করে সম্মানিত ক্বিবলা উনাকে পরিবর্তন করে দিলেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-“আমি লক্ষ্য করেছি আকাশের দিকে আপনার বারবার তাকানোর বিষয়টি। অতএব, আমি আপনার আকাঙ্খিত সম্মানিত ক্বিবলা উনার প্রতিই আপনাকে ফিরিয়ে দিচ্ছি, যা আপনি পছন্দ করেন। অতএব, আপনি পবিত্র মসজিদে হারাম শরীফ উনার দিকে মুখ মুবারক ফিরিয়ে নামায আদায় করুন। আপনারা যেখানেই থাকুন না কেন, উহার দিকে মুখ ফিরান এবং যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তারাও নিশ্চিতভাবে জানে যে, ইহা তাদের রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে প্রেরিত হক্ব বা সত্য। তারা যা কিছু করে সে সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি অবহিত।” সুবহানাল্লাহ!
“সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত বারা ইবনে মারূর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বিছাল শরীফ গ্রহণের পর উনার বাড়িতে তাশরীফ মুবারক নেন। হযরত বারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পুত্রের নাম ছিলো হযরত বাশার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। উনার মাতা তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খাবার প্রস্তুত করতে শুরু করলেন। ইত্যবসরে পবিত্র যুহর নামায উনার সময় হলো। উপস্থিত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে নিয়ে তিনি পবিত্র যুহর উনার নামায পড়া শুরু করলেন। দু’রাকায়াত নামায শেষ হতেই হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র ওহী মুবারক নিয়ে এলেন যে, এখন বাইতুল্লাহ শরীফ পবিত্র ক্বিবলা। আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তৎক্ষণাৎ সম্পূর্ণ জামায়াতসহ পবিত্র কা’বা শরীফ উনার দিকে চেহারা বা মুখ মুবারক ফিরিয়ে অবশিষ্ট দু’রাকায়াত নামায আদায় করলেন। তখন থেকে বনী সালমার ওই মসজিদকে যুলক্বিবলাতাইন বা দু’কিবলা বিশিষ্ট বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!
যখন সম্মানিত ক্বিবলা পরিবর্তন হলো তখন যারা ইহুদী ও মুনাফিক তারা চু- চেরা ক্বীল-ক্বাল শুরু করলো। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করেন- আপনি এতদিন যে ক্বিবলা উনার অনুসরণ করেছেন তাকে এ উদ্দেশ্যে পরিবর্তন করেছি যাতে আমি জানতে পারি কে আমার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ করে এবং কে ফিরে যায়? মহান আল্লাহ পাক তিনি দয়া ইহসান করে যাকে সৎ পথে পরিচালিত করবেন তারা ব্যতীত অন্যান্যদের নিকট ইহা নিশ্চয়ই কঠিন। মহান আল্লাহ পাক তিনি এরূপ নন যে, তোমাদের পবিত্র ঈমান উনাকে বিনষ্ট করবেন। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত মানুষের প্রতি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু।”
প্রসঙ্গত, আজ ঐতিহাসিক সুমহান মহাপবিত্র ১৫ই রজবুল হারাম শরীফ। সম্মানিত ক্বিবলা পরিবর্তন দিবস। সুবহানাল্লাহ! তাই, এই মহাসম্মানিত দিবস যথাযথ তা’যীম, তাকরীম, জওক-শওক এবং সাখাওয়াতির সাথে ব্যাপকভাবে উদযাপন করা সকলের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ব্যাংক গ্রাহকদের খালি হাতে বা নাম মাত্র অর্থে ফেরানো যাবে না কথিত অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিশ্চয়তার পাশাপাশি যথাযথ ব্যবস্থা প্রদান করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিশ্বে জ্বালানীর দাম এমনেই কমছে পাশাপাশি শুধুমাত্র কাঠামো সংস্কারই ১৫ টাকা কমানো সম্ভব হলেও সেদিকে নজর দিচ্ছে না কেন অন্তর্বর্তী সরকার? জ্বালানী তেলের দাম কমালে দ্রব্যমূল্যের দাম সহজেই কমবে
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলাদেশে মিডিয়াগুলো ইহুদীদের অদৃশ্য ইশারায় দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের উচিত- দেশের সব মিডিয়া বর্জন করে আলাদাভাবে সম্মানিত ইসলামী মিডিয়া গঠন করা।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক হুমকী স্বরূপ আরাকান আর্মিকে এক্ষুনি প্রতিহত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশে সাড়ে ৩ কোটি শুধু শিশুই সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং সব প্রাপ্ত বয়স্করাও ক্ষতিগ্রস্থ সিসার ক্ষতি থেকে বাঁচতে সুন্নতী তৈজসপত্র ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের জিনিস ক্রয়ে নিবেদিত হতে হবে ইনশাআল্লাহ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহাব্যার্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জ্বালানী তেলের দাম এক্ষুনি কমাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনেক কিছু করার প্রচারনা চালালেও জিডিপি এবং দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি অর্থনীতির লাইফ লাইন এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই করছে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিঙ্গাপুর, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী জোরদার হচ্ছে, সংস্কারের দাবীদার সরকার কী করে নির্বিকার থাকতে পারে?
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এক্ষুনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পাচারকৃত ১৭ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে শামুকের মত ধীর গতি বরদাশতের বাইরে
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)