সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত সাওয়ানেহ মুবারক
, ১৫ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০১ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ৩০ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র নাম মুবারক হযরত যয়নাব আলাইহাস সালাম। কুরাইশ গোত্রের বনু আসাদ বংশে উনার বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ। উনার সম্মানিত পিতার নাম হযরত জাহাশ আলাইহিস সালাম, যিনি ইসলাম-পূর্ব যুগে বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। পিতার দিক থেকে তিনি ১০ম পুরুষে গিয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ। উনার ৯ম পূর্ব-পুরুষ হচ্ছেন হযরত আসাদ ইবনে খুযাইমা আলাইহিস সালাম। হযরত আসাদ আলাইহিস সালাম ছিলেন বনু আসাদ বংশের প্রথম পুরুষ এবং একজন প্রসিদ্ধ ব্যক্তিত্ব। উনার নাম মুবারক অনুযায়ী উনার বংশের নামকরণ হয়েছে “বনু আসাদ”।
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার মাতা হযরত উমাইমাহ বিনতু আবদুল মুত্তালিব আলাইহাস সালাম ছিলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আপন ফুফু। সেই হিসাবে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার আপন ফুফাতো বোন।
উনার তিন ভাই এবং দুই বোন ছিলেন। তিন ভাই- হযরত আবদুল্লাহ বিন জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবু আহমদ বিন জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং ওবায়দুল্লাহ বিন জাহাশ। এক ভাই হযরত আবদুল্লাহ বিন জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উহুদের জিহাদে শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। কাফিরগুলো উনার পেট মুবারক ফেঁড়ে জিসিম মুবারক ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলেছিল। উনাকে উনার সম্মানিত মামা, সাইয়্যিদুশ শুহাদা, সাইয়্যিদুনা হযরত হামযা আলাইহিস সালাম উনার সাথে একই মাজার শরীফে দাফন মুবারক করা হয়।
উনার দুই বোন হযরত হামনা বিনতে জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা এবং হযরত উম্মে হাবীবা বিনতে জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বিশিষ্ট ছাহাবিয়া ছিলেন। উনাদের ‘ইস্তিহাজা’ রোগ ছিল। উনারা দু’জনই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এ রোগ সম্পর্কে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে নানা মাসয়ালা জিজ্ঞেস করে জেনে নিতেন। এজন্য পবিত্র হাদীছ শরীফে উনাদের নাম উল্লেখ রয়েছে। (সিয়ারু আলামিন নুবালা, তিরমিযী শরীফ)
বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশের ২০ বছর পূর্বে পবিত্র মাহে রবীউছ ছানী শরীফ উনার ১৯ তারিখ ইয়াওমুল জুমু‘য়াহ্ শরীফ সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি পবিত্র মক্কা শরীফে বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! (দৈনিক আল-ইহসান শরীফ)
দ্বীন ইসলাম গ্রহণ এবং হাবশায় হিজরত:
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং উনার সকল ভাই-বোন দ্বীন ইসলাম উনার প্রথম যুগেই ইসলাম কবুল করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দারুল আরকামে যাওয়ার পূর্বেই উনারা সকলেই মুসলমান হয়েছিলেন। অতঃপর পরিবারের সব সদস্য একসঙ্গে হাবশায় হিজরত করেন। সেখানে উনাদের ভাই ওবায়দুল্লাহ বিন জাহাশ ঈসায়ী ধর্ম গ্রহণ করে, কিন্তু তার আহলিয়া সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মে হাবীবা আলাইহাস সালাম বিনতে হযরত আবু সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার উপর অটল থাকেন। হাবশার বাদশাহ নাজ্জাসী রহমতুল্লাহি আলাইহি স্বয়ং নিজে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মে হাবীবা আলাইহাস সালাম বিনতে হযরত আবু সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উনার ব্যবস্থা করে উনাকে পবিত্র মদীনা শরীফ পাঠিয়ে দেন এবং তিনি ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল হাদিয়াহ আশার আলাইহাস সালাম’ লক্বব মুবারকে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। এক পর্যায়ে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম এবং উনার অন্যান্য ভাই বোন সকলে হাবশা থেকে পবিত্র মক্কা শরীফে ফিরে আসেন। শুধু ওবায়দুল্লাহ বিন জাহাশ ঈসায়ী ধর্ম গ্রহণ করার কারণে হাবশায় থেকে যায়। পরবর্তীতে সে অত্যধিক মদ পান করে অকালে মৃত্যুবরণ করে। নাঊযুবিল্লাহ!
পবিত্র মদীনা শরীফে হিজরত:
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হিজরত করে পবিত্র মদীনা শরীফে তাশরীফ মুবারক আনয়ন করলে হযরত আবদুল্লাহ বিন জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত আবু আহমদ বিন জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আপন পরিবারবর্গ এবং বোনদের নিয়ে একসঙ্গে পবিত্র মদীনা শরীফে হিজরত করেন। (আসাহহুস সিয়ার)
ঐতিহাসিকদের মতে এই পরিবারই পবিত্র মদীনা শরীফে প্রথম হিজরতকারী পরিবার ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
শাদী মুবারক:
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক নির্দেশে উনার পালক পুত্র হযরত যায়িদ বিন হারিছা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সঙ্গে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার শাদী মুবারক অনুষ্ঠিত হয়। শাদী মুবারকের সময় উনার বয়স মুবারক হয়েছিল ৩৪ বছর এবং তিনি অবিবাহিতা ছিলেন বলে জানা যায়। অন্য এক বর্ণনায় উনাকে বিধবা বলা হয়েছে, কিন্তু উনার প্রথম আহালের নাম উল্লেখ করা হয়নি। এই মতের সমর্থনে যে রেওয়ায়েতটি পাওয়া যায়, তা হলো এই যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত যায়িদ ইবনে হারিছা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সঙ্গে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার শাদী মুবারকের প্রস্তাব দিলে তিনি বলেছিলেন- ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! উনাকে আমি আমার জন্য পছন্দ করি না। কারণ, আমি কুরাইশ বংশের একজন বিধবা মহিলা। (তাবাকাত)
পবিত্র কা’বা শরীফ উনার খাদিম হিসাবে গোটা আরবে কুরাইশ খান্দান, বিশেষত বনু হাশিমের যে উচ্চ মর্যাদা ও সম্মানের আসন ছিল, তৎকালীন ইয়েমেনের কোন বাদশাহও উনাদের সমকক্ষতার দাবী করতে দুঃসাহসী হতো না। হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ছিলেন পিতৃকুলের দিক দিয়ে আরবের অন্যতম মশহুর খান্দান বনু কাল্ব এবং মাতৃকুলের দিক দিয়ে ত্বাঈ গোত্রের। মর্যাদায় ও আভিজাত্যে এই দুই গোত্র কুরাইশ গোত্রের চেয়ে কম ছিলেন না। কিন্ত বাল্যকালে একদল দস্যু হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বন্দী করে নিয়ে যায় এবং উকাজ মেলায় বিক্রয় করে দেয়। সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার ভ্রাতুষ্পুত্র হযরত হাকীম ইবনে হিযাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনাকে খরিদ করে নিয়ে আসেন এবং ফুফুর খিদমতে পেশ করেন। সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমতে পেশ করলে তিনি উনাকে আযাদ করে দেন এবং পালক পুত্র হিসাবে লালন পালন করেন। যালিমের যুলুমের কারণে উনাকে গোলামীর শিকলে আবদ্ধ হতে হয়েছিলো। তাই এটাকে দাসত্ব বলা যায় না। কিন্তু সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি একে দাসত্ব মনে না করলেও কুরাইশ খান্দানের হাশেমী বংশের সমকক্ষ মনে করেননি। তাই তিনি এ শাদী মুবারক নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। কিন্তু শুধু নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ মুবারক পালনের জন্যই তিনি এই শাদী মুবারকে সম্মতি জ্ঞাপন করেছিলেন। তদনুযায়ী শাদী মুবারক অনুষ্ঠিত হয়ে যায়।
ইহা সুস্পষ্ট যে, ইসলামী সাম্যের বাস্তব শিক্ষাদান ছিল এই শাদী মুবারকে উদ্দেশ্য। দ্বীন ইসলাম স্বাধীন অথবা দাস হওয়ার মধ্যে মর্যাদার পার্থক্য নির্ধারণ করে না। তাক্বওয়া বা পরহেজগারীতাই হচ্ছে মর্যাদা নির্ধারণের মানদন্ড। তাক্বওয়া ও পরহেজগারীতে যে ব্যক্তি অগ্রগন্য তিনিই মর্যাদাবান হিসাবে পরিগণিত। এই শাদী মুবারকের আরো একটি উদ্দেশ্য ছিল, যা হযরত ইবনুল আছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেছেন এভাবে-
زَوَّجَهَا لِيُعَلِّمَهَا كِتَابَ اللهِ وَ سُنَّةَ رَسُوْلِهِ
অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সাথে হযরত যয়নাব আলাইহাস সালাম উনার শাদী মুবারক এজন্য দিয়েছিলেন, যাতে হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত যয়নাব আলাইহাস সালাম উনাকে কিতাবুল্লাহ এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত মুবারকের তা’লীম ও তারবিয়ত দান করেন। (উসুদুল গাবা)
কুরাইশ বংশের হাশেমী শাখার সম্ভ্রান্ত মহিলা, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার শাদী মুবারক হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সাথে স্থায়ী হয়নি। শাদী মুবারকের এক বছর পার না হতেই হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দরবার শরীফে এসে অভিযোগ পেশ করেন। তিনি বলেন যে, উনার আহলিয়া উনার সাথে কড়া ভাষায় কথা বলেন, কোন ভাবেই উনাদের বনি-বনা হচ্ছে না, সেজন্য তিনি উনাকে তালাক দিতে ইচ্ছা করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে এ ব্যাপারে নিষেধ করেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করতে বলেন। (তাফসীরে সূরা আহযাব শরীফ)
কিন্তু শেষ পর্যন্ত উনাদের মনোমালিন্য এতটুকু পৌঁছে গেল যে, হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনাকে তালাক দিতে বাধ্য হলেন এবং তালাক দেয়ার পর তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এ বিষয়ে অবহিত করেন।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে নিসবতে আযীমাহ শরীফ:
ইতোমধ্যে খ¦ালিক, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ হতে পবিত্র কুরআন পাক উনার পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হয় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার নিসবাতুল আযীমাহ শরীফের বিষয়ে। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চিন্তা করছিলেন, কারণ হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ছিলেন উনার পালক পুত্র। পালক পুত্রের আহলিয়ার সাথে কিভাবে উনার নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ অনুষ্ঠিত হতে পারে? তখন খ¦ালিক, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ হতে এই মর্মে পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হয়- মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা- আরবে যে কু-প্রথা প্রচলিত আছে, পালক পুত্রকে আপন পুত্রের সমান জ্ঞান করা হয়, ইহা রহিত করা। মহান আল্লাহ পাক তিনি নাযিল করলেন-
مَا كَانَ مُحَمَّدٌ أبَا أحَدٍ مِنْ رِجَالِكُمْ
অর্থ: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের পুরুষদের মধ্য থেকে কারো পিতা নন।
মহান আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ মুবারক করলেন-
أدْعُوْهُمْ لِأبَآئِهِمْ هُوَ أقْسَطُ عِنْدَ اللهِ - (الأحزاب-৩৭)
অর্থ: তাদেরকে তাদের পিতৃ পরিচয়ে ডাকো, ইহা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অধিকতর ন্যায়সঙ্গত।
তখন হতে পালক পুত্র হিসাবে হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে যায়িদ বিন মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ডাকার পরিবর্তে, এই নিয়ম রহিত করে উনার আসল পিতার নামে অর্থাৎ যায়িদ বিন হারেছা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলে ডাকা হতে লাগল। অতঃপর খ¦ালিক, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশক্রমে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার নিসবতে আযীমাহ শরীফ অনুষ্ঠিত হলো। পবিত্র কুরআন শরীফে একখানা পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করে মহান আল্লাহ পাক তিনি বিষয়টি পরিষ্কার করে দিলেন যে, এই নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উনার ব্যবস্থা মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই করেছেন। এ বিষয়ে পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হলো-
فَلَمَّا قَضَى زَيْدٌ مِنْهَا وَطَرًا زَوَّجْنَاكَهَا لِكَىْ لَا يَكُوْنُ عَلَى الْمُؤْمِنِيْنَ حَرَجٌ فِى أزْوَاجِ أدْعِيَائِهِمْ إذَا قَضَوْا مِنْهُنَّ وَطَرًا وَ كَانَ أمْرُ اللهِ مَفْعُوْلًا.
অর্থ: হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যখন উনার নিকট থেকে নিজ প্রয়োজন পূর্ণ করে নিলেন, তখন আমি আপনার সাথে উনার নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ অনুষ্ঠিত করে দিলাম। যেন নিজেদের মুখে-ডাকা পুত্রদের আহলিয়াদের ব্যাপারে মু’মিন লোকদের কোন অসুবিধা না থাকে- যখন তারা তাদের নিকট থেকে নিজেদের প্রয়োজন পূর্ণ করে নেয়। মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ তো বাস্তবায়ন হতেই হবে। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৩৭)
এই একখানা আয়াত শরীফ দ্বারা খ¦ালিক, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন যে, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে আপনার নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উনার কাজটি আমিই সমাধা করে দিলাম। এ ব্যাপারে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার ইচ্ছা বা অনিচ্ছার কোন প্রয়োজন ছিল না। পবিত্র আয়াত শরীফে উল্লেখিত, “আমি আপনার সাথে উনার নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ করিয়ে দিলাম” এই ক্বওল শরীফ ও ব্যবহৃত শব্দ মুবারকগুলো দ্বারা একথা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এই নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উনার নিজের মুবারক ইরাদা উনার ভিত্তিতে হয়নি, বরং মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক ইরাদা ও মুবারক নির্দেশ মতই সম্পাদিত হয়েছে। এই নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উনার কাজটি সম্পন্ন হয় ৫ম হিজরী সনের পবিত্র যিলক্বদ শরীফ মাসের ৮ তারিখ, লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ অর্থাৎ লাইলাতুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ (সোমবার)। সুবহানাল্লাহ! এই সময় সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার বয়স মুবারক হয়েছিল ৩৭ বছর ৬ মাস ১৯ দিন। সুবহানাল্লাহ! (সিয়ারু আলামিন নুবালা, দৈনিক আল-ইহসান শরীফ)
ওলীমা মুবারক অনুষ্ঠান:
পবিত্র নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এ উপলক্ষে পবিত্র ওলীমা মুবারক উনার অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করেন। খাদিমু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে রেওয়ায়েত আছে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার ওলীমা মুবারকের মত আর কারো ওলীমা মুবারকে এত পর্যাপ্ত পরিমাণে আহারের ব্যবস্থা করেননি। এতে তিনি বকরি জবাই করে রুটি ও গোশতের ব্যবস্থা করেন।
হযরত আবদুল আযীয ইবনে সুহায়র রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে রেওয়ায়েত করেন, এত উত্তম ও এত বেশী পরিমাণে খাবার-দাবারের ব্যবস্থা তিনি অন্য কারো ওলীমা শরীফে করেননি যেরূপ তিনি সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার ওলীমা শরীফে করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (আসাহহুস সিয়ার)
এই অনুষ্ঠানে খাদ্য পরিবেশন সম্পর্কে অপর একটি বর্ণনা রয়েছে। এই অনুষ্ঠানে খাদিমু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সম্মানিত মাতা হযরত উম্মে সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা, যিনি সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খালা হতেন, তিনি হাদিয়া হিসাবে কিছু খাবার পাঠিয়েছিলেন। হযরত আবু হাতিম রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত- হযরত উম্মে সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি ‘হাইস’ (খেজুর ও অন্যান্য উপকরণ দ্বারা তৈরী) এক প্রকার উপাদেয় খাবার তৈরী করে কাঠের পাত্রে ঢালেন। তারপর উনার ছেলে হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে ডেকে বলেন- ইহা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট নিয়ে গিয়ে বলবে, আমাদের পক্ষ থেকে (এই ওলীমা শরীফ উপলক্ষে) সামান্য হাদিয়া। হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, মানুষ সে সময় দারুণ অন্নকষ্টে ছিল। আমি পাত্রটি নিয়ে গিয়ে বললাম, এটা উম্মে সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা আপনার নিকট পাঠিয়েছেন। তিনি আপনাকে সালাম পেশ করেছেন এবং বলেছেন- এ হচ্ছে আমাদের তরফ থেকে সামান্য হাদিয়া। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পাত্রটির দিকে তাকিয়ে বললেন- এটা ঘরের এক কোণে রাখুন এবং অমুক অমুককে ডেকে আনুন। তিনি অনেক লোকের নাম বললেন। তাছাড়া আরো বললেন- পথে যে মুসলমানের সাথে দেখা হবে, সাথে নিয়ে আসবেন। হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন- যাঁদের নাম তিনি বলেছিলেন, উনাদেরকে তো দাওয়াত দিলাম। আর পথে আমার সাথে যে মুসলমানের দেখা হলো উনাদের সকলকেও দাওয়াত দিলাম। আমি ফিরে এসে দেখি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গোটা বাড়ী, আহলে সুফফার স্থান ও হুজরা শরীফ- সবই লোকে লোকারণ্য।
বর্ণনাকারী হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে জিজ্ঞেস করলেন, সেখানে লোকসংখ্যা কত হবে? তিনি বললেন, প্রায় তিন শত। হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে খাবার পাত্রটি আনতে বললেন। আমি উহা উনার কাছে নিয়ে আসলাম। তিনি পাত্রটির উপর উনার নূরুল মাগফিরাত মুবারক অর্থাৎ হাত মুবারক রেখে দোয়া করলেন। তারপর বললেন- আপনারা দশজন দশজন করে বসবেন, বিসমিল্লাহ শরীফ বলবেন এবং প্রত্যেকে নিজের পাশ থেকে খাবার গ্রহণ করবেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ মুবারক মত সবাই তৃপ্তি সহকারে খেলেন। তারপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে বললেন- পাত্রটি উঠিয়ে নিন। হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি এগিয়ে এসে পাত্রটি উঠালাম। এর মধ্যে তাকিয়ে দেখলাম। কিন্তু আমি বলতে পারব না, যখন ইহা রেখেছিলাম তখন এতে খাবার বেশী ছিল, না যখন উঠালাম তখন খাবার বেশী ছিল। অর্থাৎ তিন শত লোকে আহার করার পরও উক্ত খাদ্য একটুও কমেনি এবং সেজন্য কম-বেশী তিনি অনুমান করতে পারেননি। সুবহানাল্লাহ! (হায়াতুছ ছাহাবা)
পবিত্র নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উনার বিশেষ বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
১) পালিত ও ধর্মপুত্রকে যে ঔরসজাত পুত্রের সমান জ্ঞান করা হতো, সেই ভ্রান্তি দূর করে দেয়া হয়।
২) সম-সাময়িক আরবে কেনা গোলাম ও স্বাধীন ব্যক্তির মধ্যে মর্যাদার যে পর্বত পরিমাণ ব্যবধান ছিল তা দূর করে ইসলামী সাম্যের বাস্তব দৃষ্টান্ত এই নিসবাতুল আযীমাহ শরীফে প্রতিষ্ঠিত হয়। হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে ক্রয় করে লালন পালন করা হয়েছিল অতঃপর উনাকে আরবের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বাধিক অভিজাত খান্দান বনু হাশিমের সম-মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করা হয়।
৩) এই নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উনাকে কেন্দ্র করে হিজাবের (পর্দার) হুকুম নাযিল হয় অথবা বলা চলে এই নিসবাতুল আযীমাহ শরীফই ছিল হিজাব বা পর্দার হুকুম নাযিলের পটভূমি।
৪) এই নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উনার জন্য ওহী মুবারক নাযিল হয়।
বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি হিজরী ২০ সনের ২৩শে জুমাদাল ঊখরা শরীফ, সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ অর্থাৎ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ (সোমবার) বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার হায়াত মুবারক তখন হয়েছিলেন ৫২ বছর ২ মাস ৪ দিন। পবিত্র জান্নাতুল বাকী শরীফে উনার পবিত্র রওযা শরীফ।
জীবিত থাকতেই তিনি উনার নিজ কাফন মুবারক প্রস্তুত করে রেখেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ওছীয়ত মুবারক করে যান যে আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম যদি আর একটি কাফনের ব্যবস্থা করেন, তবে উনার নিজের কাফনটি যেন গরীবদের মধ্যে বন্টন করা হয়। তিনি আরো ওছীয়ত মুবারক করে যান যে, উনার জিসিম মুবারক যেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জিসিম মুবারক যে মুবারক খাটিয়ায় রাখা হয়েছিল, সে খাটিয়ায় বহন করে নেয়া হয়। আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার পর তিনিই প্রথম মহিলা যে, উনাকে এই পবিত্র খাটিয়ায় উঠানো হয়। এভাবে উনার দু’টি ওছীয়ত মুবারকই পালিত হয়। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি উনার জানাযার নামায পড়ান। সুবহানাল্লাহ!
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সুলাইত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন- আমি হযরত আবু আহমদ ইবনে জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (হযরত যয়নাব আলাইহাস সালাম উনার ভাই) উনাকে দেখলাম কাঁদতে কাঁদতে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার জিসিম মুবারকবাহী খাটিয়া মুবারক নিজ কাঁধে বহন করছেন। তিনি ছিলেন অন্ধ। আমি শুনলাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে বলছেন, হে আবু আহমদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনি খাটিয়া থেকে সরে আসুন, যাতে মানুষের চাপে কষ্ট না পান। হযরত আবু আহমদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, জেনে রাখুন, উনারই মুবারক উছীলায় আমরা সব ধরণের খায়ের ও বরকত লাভ করেছি। আমার এই কান্না আমার ভিতরের তীব্র জ্বালাকে প্রশমিত করছে। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম বললেন, ঠিক আছে, থাকুন, থাকুন। সুবহানাল্লাহ! (তাবাক্বাত, হায়াতুছ ছাহাবা)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের নিকট ইরশাদ মুবারক করেছিলেন-
أسرعكن بى لحوقا اطولكن يدًا.
(আপনাদের মধ্যে যাঁর হাত মুবারক সবচেয়ে লম্বা তিনি আমার সঙ্গে অতিসত্ত্বর সাক্ষাত করবেন)।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিছালী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ দীদার মুবারকে তাশরীফ মুবারক নেয়ার পর হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে উক্ত মজলিসে উপস্থিত হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা প্রথমে শাব্দিক অর্থ হিসাবে যাঁর হাত লম্বা তিনিই প্রথমে বিছালী শান মুবারক গ্রহণ করবেন, এইরূপ ধারণা পোষণ করতেন। সেই হিসাবে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্কেই সকলের ধারণা ছিল যে, তিনিই প্রথমে বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করবেন। কারণ উনার হাত মুবারক সকলের চেয়ে লম্বা ছিলেন। পরে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি যখন বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করলেন, উনারা সকলেই বুঝতে পারলেন যে, হাত লম্বা দ্বারা অত্যধিক দানশীলা বুঝানো হয়েছে।
কারণ সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার মুবারক হাত স্বাভাবিক থেকে বেশী লম্বা ছিল না। সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি এ সম্পর্কে বলেন-
كَانَتْ أطْوَلُنَا يَدًا زَيْنَبُ لِأنَّهَا كَانَتْ تَعْمَلُ بِيَدٍ وَ تَتَصَدَّقُ
অর্থ: আমাদের মধ্যে সবচেয়ে লম্বা হাতের অধিকারিণী ছিলেন হযরত যয়নাব আলাইহাস সালাম। কারণ, তিনি হাতের কাজ করিয়ে উপার্জিত অর্থ প্রচুর দান করতেন।
ফযীলত ও মর্যাদা মুবারক:
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি মাঝেমধ্যে উনার নিজ নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উনার কথা উল্লেখ করে বলতেন, অন্যান্যদের নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উনাদের পিতা-মাতা ব্যবস্থা করেছেন, আর আমার নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ স্বয়ং খ¦ালিক, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং আসমানে ব্যবস্থা করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (ইছাবা)
একবার কোন এক প্রসঙ্গে তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মুখে বলেছিলেন- ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনার অন্য কোন আহলিয়ার মত নই। উনাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যার নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উনার পিতা, ভাই, অথবা খান্দানের কোন অভিভাবক ব্যবস্থা করেননি। একমাত্র আমার নিসবাতুল আযীমাহ শরীফই মহান আল্লাহ পাক তিনি আসমান থেকে আপনার সাথে সম্পন্ন করিয়েছেন। আপনার ও আমার দাদা একই সম্মানিত ব্যক্তি অর্থাৎ হযরত আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম। আর আমার নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উনার ব্যাপারে হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম ছিলেন দূত। সুবহানাল্লাহ! (তাবাক্বাত, আনসাবুল আশরাফ)
হাফেজ যাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
فَزَوَّجَهَا اللهُ بِنَبِيِّهِ بِلَا وَلِىٍّ وَ لَا شَاهِدٍ
অর্থাৎ খ¦ালিক, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উনার সম্মানিত নবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে কোন অভিভাবক ও সাক্ষী ছাড়াই করিয়ে দেন। (সিয়ারু আলামিন নুবালা)
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি উনার সম্পর্কে মন্তব্য করেন-
يَرْحَمُ اللهُ زَيْنَبْ بِنْتِ جَحْشٍ لَقَدْ نَالَتْ فِىْ هَذِهِ الدُّنْيَا الشَّرَفَ لَا يَبْلُغُهُ شَرَفٌ - إنّ اللهَ زَوَّجَهَا بنبيهِ فِى الدُّنْيَا وَ نَطَقَ بِهِ الْقُرْآنُ
অর্থ: খ¦ালিক, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত যয়নাব বিনতে জাহাশ আলাইহাস সালাম উনার প্রতি সদয় হোন! সত্যিই তিনি দুনিয়াতে অতুলনীয় সম্মান ও মর্যাদা লাভ করেছেন। খ¦ালিক, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক স্বয়ং উনার সম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উনার নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উনার ব্যবস্থা করিয়ে দিয়েছেন এবং উনার সম্মানার্থে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার কয়েকটি আয়াত শরীফ নাযিল হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (তাবাক্বাত)
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাদিসাহ আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার প্রশংসায় বলেন-
كَانَتْ صَالِحةً صَوَّامَةً قَوّاَمَةً
অর্থাৎ তিনি ছিলেন খুব বেশী সৎকর্মশীলা, বেশী রোযা পালনকারিনী ও বেশী বেশী ছলাত বা নামায আদায়কারিণী। সুবহানাল্লাহ! (ইছাবা, সিয়ারু আলামিন নুবালা)
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি খুব বেশী দান খয়রাত করতেন। তিনি নিজস্ব প্রক্রিয়ায় চামড়া দাবাগত করে পাকা করাতেন এবং তা থেকে যে আয় হতো তা সবই অভাবী লোকদের দান করে দিতেন। (সিয়ারু আলামিন নুবালা, ইছাবা)
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি উনার প্রশংসায় আরো বলেন, সম্মানিত দ্বীন সংক্রান্ত ব্যাপারে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন যয়নাব আলাইহাস সালাম অপেক্ষা উত্তম কোন মহিলা আমি দেখিনি, যিনি ছিলেন অত্যন্ত খোদাভীরু, অত্যন্ত সত্যবাদী, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারিণী, শ্রেষ্ঠ আমানতদার ও দান-খয়রাতকারিণী।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একবার সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, হযরত যয়নাব বিনতে জাহাশ আলাইহাস সালাম لأَوَّاحَةٌ (অর্থাৎ অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি অনুরাগিনী)। এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি অনুরাগিনীর অর্থ কি? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনাকে অধিক ভয়কারিনী এবং অধিক ক্রন্দনকারিনী। সুবহানাল্লাহ!
আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের প্রত্যেকের জন্য বায়তুল মাল থেকে বার্ষিক নির্ধারিত বরাদ্দকৃত ভাতা নির্ধারণ করেন। তরতীব অনুযায়ী সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আত্বওয়ালু ইয়াদান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার নিকট ১২ হাজার দিরহাম পাঠালেন। তিনি ইহা গ্রহণ করে আত্মীয়-স্বজন ও ইয়াতিমদের মধ্যে বন্টন করে দিলেন। অতঃপর দোয়া করলেন, আয় মহান আল্লাহ পাক! সাইয়্যিদুনা হযরত উমর ইবনে খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার ভাতা যেন এরপর আমার নিকট আর না পৌঁছে। অতঃপর এক বছর শেষ না হতেই তিনি বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার প্রদত্ত ভাতা আর উনাকে গ্রহণ করতে হয়নি। (ইছাবা)
উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি উনার প্রশংসায় বলেন যে, এই সম্মানিতা নারী তিনি আর হায়াত মুবারকে নেই। তাই ইয়াতীম ও বিধবাগণ এখন ভগ্ন হƒদয় হয়ে গেল। (তাবাকাত)
উনার পর উনার কোন সম্পদ বাকি ছিল না। কারণ যা কিছু উনার নিকট আসত, সবই তিনি দান করে দিতেন। পবিত্র মদীনা শরীফের গরীব দুঃখীরাসহ সকলেই উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর গভীর শোক প্রকাশ করেছিল। (ইছাবা)
সূত্রসমূহ: উসুদুল গাবা, ইছাবা, তাবাকাত, আসাহহুস সিয়ার, অন্যান্য সীরত গ্রন্থাবলী, দৈনিক আল-ইহসান শরীফ।
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনভী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নিকাহ বা বিবাহের ফযীলত (১৯)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ইলিম চর্চায় কতবেশি মনোযোগ!
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
শিশু সন্তান জন্ম গ্রহণের ৭ম দিনে সুন্দর অর্থবোধক নাম রাখা
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দেনমোহর নিয়ে কিছু কথা.... (১)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (১)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইতিহাস কথা বলে: নারী নির্যাতনের সাথে বিধর্মীদের সম্পৃক্ততার অনুসন্ধানে
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হাত-পা, চেহারা খোলার মাধ্যমে অবশ্যই সৌন্দর্য প্রকাশ পায়
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইতিহাস কথা বলে- ‘বোরকা’ বাঙালি মুসলমানদের আদি সংস্কৃতি
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আপনি চান, আপনার সন্তান সুশ্রী এবং সুন্দর হয়ে জন্মগ্রহণ করুক?
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে ব্যক্তিত্ব বা আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
‘শরয়ী পর্দা’ মেয়েদের অন্তরের পবিত্রতার সাথে সাথে বাহ্যিক সৌন্দর্য্য ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখে
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)