পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার “প্রথম দশ দিন-রাত” উনাদের মহাসম্মানিত সুন্নতী আমল মুবারক ও সীমাহীন ফযীলত মুবারক-২
, ০২ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১১ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ০৯ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ২৬ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, দিনসমূহের মধ্যে এমন কোন দিন নেই যে দিন সমূহের ইবাদত মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার প্রথম দশ দিনের ইবাদত অপেক্ষা অধিক প্রিয় বা পছন্দনীয়। পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার ১ম দশ দিনের প্রতি দিনের পবিত্র রোযা উনার ফযীলত হচ্ছে ১ বছর রোযা রাখার সমপরিমাণ এবং প্রতি রাতের ইবাদত উনার ফযীলত হচ্ছে পবিত্র ক্বদরের রাত উনার ইবাদতের সমপরিমাণ। ” সুবহানাল্লাহ! (মিশকাত শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, তিরমিযী শরীফ)
যারা পবিত্র কুরবানী দেয়ার নিয়ত রাখেন, তাদের পক্ষে পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার চাঁদ ওঠার পর থেকে এই চাঁদের ১০ তারিখ পবিত্র কুরবানী করা পর্যন্ত মাথার চুল, হাতের ও পায়ের নখ ইত্যাদি না কাটা মুস্তাহাব। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن سيدتنا حضرت أم المؤمنين السادسة عَلَيْهَا اسَّلَامُ قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ رَاىَ هِلَالَ ذِى الْـحِجَّةِ وَاَرَادَ اَنْ يُّضَحّىَ فَلَا يَأْخُذْ مِنْ شَعْرِه وَلَا مِنْ اَظْفَارِه.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাদিসাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার চাঁদ দেখলো এবং পবিত্র কুরবানী করার নিয়ত করলো, সে যেনো (পবিত্র কুরবানী না করা পর্যন্ত) তার শরীরের চুল, নখ ইত্যাদি না কাটে। ” (মুসলিম শরীফ)
মূলতঃ ছহীহ্ ও গ্রহণযোগ্য মত হলো এই যে, যারা পবিত্র কুরবানী করবে এবং যারা কুরবানী করবে না, তাদের উভয়ের জন্যই উক্ত আমল মুস্তাহাব ও ফযীলতের কারণ। আর এ ব্যাপারে দলীল হলো নিম্নোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা। যেমন বর্ণিত রয়েছে -
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اُمِرْتُ بِيَوْمِ الْاُضْحِىَّ عِيْدًا جَعَلَهُ اللهُ لِـهٰذِه الْاُمَّةِ قَالَ لَهُ رَجُلٌ يَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَرَايْتَ اِنْ لَّـمْ اَجِدْ اِلَّا َمَنِيْحَةَ اُنْثٰى اَفَاُضَحِّىْ بِـهَا قَالَ لَا وَلٰكِنْ خُذْ مِنْ شَعْرِكَ وَاَظْفَارِكَ وَتَقُصُّ شَارَبَكَ وَتَـحْلَقُ عَانَتَكَ فَذٰلِكَ تَـمَامُ اُضْحِيَّتَكَ عِنْدَ اللهِ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি পবিত্র কুরবানী উনার দিনকে ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারণ করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি। মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত দিনটিকে এই উম্মতের জন্য ঈদ হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। এক ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি যদি একটি মাদী মানীহা (উটনী) ব্যতীত অন্য কোন পশু পবিত্র কুরবানী উনার জন্য না পাই, তাহলে উক্ত মাদী মানীহাকে কুরবানী করার ব্যাপারে আপনার কি মত মুবারক? জবাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, না। আপনি উক্ত পশুটিকে কুরবানী করবেন না বরং আপনি পবিত্র কুরবানী উনার দিন আপনার (মাথার চুল ও হাত-পায়ের নখ কাটবেন। আপনার গোঁফ খাট করবেন এবং আপনার দেহের নিম্নাংশের পশম কাটবেন। এটাই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট আপনার পূর্ণ কুরবানী অর্থাৎ এর দ্বারা আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট পবিত্র কুরবানী উনার পূর্ণ ছওয়াব পাবেন। ” (আবূ দাঊদ শরীফ)
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় উল্লেখ আছে যে, যারা পবিত্র কুরবানী করবে না, তাদের জন্যও পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাসের চাঁদ দেখার পর থেকে পবিত্র কুরবানী করার পূর্ব পর্যন্ত নিজ শরীরের চুল, নখ ইত্যাদি না কাটা মুস্তাহাব। আর যে ব্যক্তি তা কাটা থেকে বিরত থাকবে, সে একটি পবিত্র কুরবানী উনার ছওয়াব পাবে।
পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাসে যেসকল আমল করা বেমেছাল ফযীলত মুবারক লাভের কারণ-
১) পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাসের চাঁদ দেখার পর থেকে পবিত্র কুরবানী করার পূর্ব পর্যন্ত নিজ শরীরের চুল, নখ ইত্যাদি না কাটা। আর যে ব্যক্তি তা কাটা থেকে বিরত থাকবে, সে একটি পবিত্র কুরবানী উনার ছওয়াব পাবে।
২) দিনসমূহের মধ্যে এমন কোন দিন নেই; যে দিন সমূহের ইবাদত মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার প্রথম দশ দিনের ইবাদত অপেক্ষা অধিক প্রিয় বা পছন্দনীয়।
কাজেই, এ দিন সমূহে ইবাদত-বন্দেগী, দোয়া-ইস্তেগফার বেশি বেশি করে করতে হবে।
৩) পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার ১ম দশ দিনের প্রতি দিনের পবিত্র রোযা উনার ফযীলত হচ্ছে ১ বছর রোযা রাখার সমপরিমাণ।
৪) পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার ১ম দশ রাতের ইবাদত উনার ফযীলত হচ্ছে, পবিত্র ক্বদরের রাত উনার ইবাদতের সমপরিমাণ।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার পরিচয় ও প্রকারভেদ (২)
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘চাদর’
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবারের পাত্র কাঠের বাটি বা পেয়ালা
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী চামড়ার বালিশ
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুন্নত মুবারক পালনে কোন হীনম্মন্যতা নয়, বরং সব পরিবেশেই দৃঢ়চিত্ত থাকতে হবে
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবা ও মুহাব্বত মুবারকে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল দৃষ্টান্ত মুবারক
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘আঙুর’
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সকল ধরণের সুন্নতী খাবার বরকতময় রোগমুক্ত শিফা দানকারী সুন্নতী খাদ্য “ভাত”
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাছ সুন্নতী “টুপি
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)