প্রসঙ্গ: সিডও সনদ
নারী অধিকার নিয়ে অনেক আইন থাকার পরও নারী অপরাধ দমনে নারীবাদীরা নিস্ক্রিয় থাকলেও ‘সিডও’ সনদের সম্মানিত দ্বীন ইসলাম বিরোধী ধারা বাস্তবায়নে নারীবাদীরা অতি সক্রিয় কেন?
, ১৬ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১০ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন, ৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ২৫ই মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মহিলাদের পাতা
সিডও সনদ অনুমোদনের আগে নারীবাদীরা সরকারকে হুমকী দিয়ে যাচ্ছিল। এর প্রেক্ষিতে সরকারের উপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টিতে ২০১১ সালের ১২ই জানুয়ারী রাজধানীর ইস্কাটনের ‘বিয়াম অডিটরিয়ামে সিটিজেন ইনিশিয়েটিভস অন সিডও’ বাংলাদেশ, আয়োজিত ‘সিডও সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন’ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম বিরুদ্ধবাদী নারীবাদী সংগঠনগুলো। সম্মেলনে ৩৮টি এনজিও এবং কথিত মানবাধিকার সংস্থার লোকেরা ছাড়াও সারাদেশের প্রায় ৫০০টি সংগঠন অংশগ্রহণ করে বলেছে, “দরকার হলে সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়ে সিডও সনদে পূর্ণ অনুমোদন দান ও বাস্তবায়নে বাধ্য করতে হবে। সরকার ওই সনদ অনুমোদনে কিছু লোকের ধর্মীয় মনোভাবকে প্রাধান্য দিচ্ছে। নারীর অধিকার ও অনুভূতিকে আমলে নিচ্ছে না।’
উল্লেখ্য, কথিত নারী অধিকার নিয়ে করা অনেক আইনেরই বাস্তবায়ন নেই!
* যেমন, সংবিধানের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী:
অনুচ্ছেদ ১৮ (২) ও ৩৪ (১)-অনুযায়ী গণিকাবৃত্তি ও জুয়াখেলা নিরোধের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং সকল প্রকার জবরদস্তি শ্রম নিষিদ্ধ ও আইনত দন্ডনীয়।
আইনি বিধান:
দেহ ব্যবসা নিরোধ দণ্ডবিধি ১৮৬০-ধারা ৩৭২; অবৈধ নারী পাচার দমন এ্যাক্ট ১৯৩৩; নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে পতিতাবৃত্তি আইনত নিষিদ্ধ। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন পতিতালয় রয়েছে। যেগুলো সম্পর্কে কম-বেশী সবাই অবগত। আইনানুযায়ী পতিতাদের উদ্ধার করে সম্মানজনকভাবে পুনর্বাসন করার কথা। সারাদেশে গণিকাবৃত্তি ও জুয়াখেলার রমরমা বাণিজ্য হলেও এই আইনের প্রয়োগে বিদেশীদের পোষ্য নারীবাদীদের কোন তৎপরতা নেই। কোন আন্দোলন নেই।
* আমাদের দেশে প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় নারী ও কন্যা শিশু সম্ভ্রমহরণ, খুন, এসিড নিক্ষেপ, প্রতারণা ও লাঞ্চনার খবর পাওয়া যায়। দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং নারী পাচার দমন আইনও আছে।
বিভিন্ন সমীক্ষা মতে, প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৪ হাজার নারী ও শিশু বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়। তাদেরকে বাধ্যতামূলক পতিতাবৃত্তি, শ্রমদাসত্ব, অশ্লীল ছবি ও ভিক্ষাবৃত্তিতে ব্যবহার করা হয়। এখনো প্রায় ৪০ হাজার বাংলাদেশী কিশোরী পাকিস্তানে পতিতাবৃত্তিতে আটকে আছে; কলকাতার গণিকালয়ে ১৪% নারী বাংলাদেশী।
উল্লেখ্য, কর্মক্ষেত্রে হরহামেশাই নারীরা সম্ভ্রমহরণসহ নানাবিধ যৌন নিপীড়নের শিকার হয়। পরকিয়া সম্পর্কে লিপ্ত হয়। অধিকাংশ কারখানাতেই নারীদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ও বিশুদ্ধ পানীয়ের ব্যবস্থা নেই। এক সমীক্ষায় দেখা যায়, গার্মেন্টসে কর্মরত নারীদের শতকরা ৩০ ভাগ পেটের পীড়ায়, ২০ ভাগ মূত্রনালীর সংক্রমণ, ২৫ ভাগ চোখের অসুখ ও মাথাব্যথা এবং ১৫ ভাগ দুর্বলতায় ভোগে। এসব সমস্যাকে কথিত নারীবাদীরা কোন সমস্যাই মনে করেনা। কোন তৎপরতাও দেখায় না।
* নাটক, সিনেমা ও বিজ্ঞাপনে নারীকে ভোগ্যপণ্য বা যৌন সামগ্রীরূপে দেখানো হয়। এসব মাধ্যমে অশ্লীলতা চরম মাত্রা অতিক্রম করেছে। নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপন, ফ্যাশন শো ইত্যাদিতে পুরুষের কাছে আকর্ষণীয়ভাবে নারী দেহ উপস্থাপনের মহড়া দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে নারীকে ভোগ্যপণ্য হিসেবে নারীদের সম্মান মর্যাদাহানী করা হচ্ছে। ফলে নারীরা ব্যাপক মাত্রায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এসব অশ্লীলতা বন্ধে কথিত নারীবাদীদের কোনও চিন্তা-মাথাব্যথা নেই। তারা বরং এসব অশ্লীলতাকে উৎসাহ দেয় এবং পৃষ্ঠপোষকতা করে।
নারী অধিকার নিয়ে অনেক আইন থাকার পরও উল্লেখিত অপরাধ দমনে তারা নিষ্ক্রীয়। এসব অপরাধের ক্ষেত্রে নারীবাদীদের কোন বক্তব্য, বিবৃতি বা প্রতিক্রিয়া নেই। কিন্তু যখন সম্মানিত দ্বীন ইসলাম কোন বিষয়ে নারীদের নির্দেশনা মুবারক দিয়েছেন, সেই সুমহান নির্দেশনাকে অবজ্ঞা করতে হেন কোন উপায় নেই যা তারা করেনা। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম বিরোধী এ রকমই একটি সনদ হলো, কথিত ‘সিডও’ সনদ। যা প্রণয়ন করে জাতিসংঘ মুসলিম বিশ্বের উপর চাপিয়ে দিয়েছে।
নারীবাদীরা নারী স্বার্থ রক্ষার প্রচলিত আইনগুলো যথাযথ পালন না করলেও যেহেতু ‘সিডও’ সনদে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম বিরোধী ধারা রয়েছে, তাই সেটা বাস্তবায়নে তারা বেপরোয়া। এমনকি সরকারকে হুমকি দিতেও তারা পিছপা হয়নি। তাদের মূল উদ্দেশ্য সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আইনগুলো পরিবর্তন করে খোদ মুসলিমদেরকেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিরুদ্ধাচরণে অভ্যস্ত করে তোলা। নাউযুবিল্লাহ!
সরকারের উচিত, অতি সত্ত্বর কথিত এই ‘সিডও’ সনদের সম্মানিত দ্বীন ইসলাম বিরোধী ধারাগুলো বাতিল করে কথিত নারীবাদীদের সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও দেশ বিরোধী চক্রান্ত থেকে সতর্ক থাকা।
-আহমদ মুবাশ্বশিরা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
জন্মের প্রথম মাস
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে মু’মীনদের জীবন গড়ে তোলা দায়িত্ব-কর্তব্য
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৩)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নারীবাদী বলে কথা........
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)