কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীনদের সঙ্গে কখনই মুহব্বত করা ও সাদৃশ্য রাখা যাবে না
, ২১ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ৩০ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ২৮ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ১৪ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
কিতাবের মধ্যে একটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়, হিন্দুস্থানে মহান আল্লাহ পাক উনার একজন ওলী ছিলেন উনার বিছাল শরীফ গ্রহণ করার পর অন্য একজন বুযুর্গ ব্যক্তি উনাকে স্বপ্নে দেখে জিজ্ঞাসা করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী আপনি কেমন আছেন? মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী তিনি জাওয়াবে বললেন, আপাতত আমি ভালোই আছি কিন্তু আমার উপর দিয়ে এক কঠিন সময় অতিবাহিত হয়েছে যা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমার ইন্তিকালের পর আমাকে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সরাসরি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মুখে পেশ করেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে বলেন, “হে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম! আপনারা তাকে এখানে কেন নিয়ে এসেছেন? হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা বললেন, আয় মহান আল্লাহ পাক! আমরা উনাকে আপনার খাছ বান্দা হিসেবে আপনার সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য নিয়ে এসেছি। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তাকে এখান থেকে নিয়ে যাও, তার হাশর-নাশর হবে হিন্দুদের সাথে, কেননা সে পূজা করেছে। এ কথা শুনে আমি ভয় পেয়ে গেলাম এবং আমার সমস্ত শরীর ভয়ে কাঁপতে লাগল। তখন আমি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট আরজী পেশ করলাম, “আয় মহান আল্লাহ পাক! আমার হাশর-নাশর হিন্দুদের সাথে হবে কেন? আমি তো সবসময় আপনার এবং আপনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ আপনাদের ফরমাবরদার ছিলাম, কখনো ইচ্ছাকৃত নাফরমানি করিনি এবং পূজা করা তো দূরের কথা, মন্দিরের নিকটবর্তীও কখনো হইনি। মহান আল্লাহ পাক তিনি তখন বললেন, তুমি সেই দিনের কথা স্মরণ করো, যেদিন হিন্দুস্থানে হোলি পূজা হচ্ছিল। তোমার সামনে-পিছনে, ডানে-বামে, উপরে-নিচে সমস্ত গাছপালা-তরুলতা, পশু-পাখি, কীট-পতঙ্গ সবকিছুই রং দেয়া হয়েছিল। এমন অবস্থায় তোমার সামনে দিয়ে একটি গাধা যাচ্ছিল, যাকে রং দেয়া হয়নি। তখন তুমি পান চিবাচ্ছিলে, তুমি সেই গর্দভের গায়ে এক চিপটি পানের রঙিন রস নিক্ষেপ করে বলেছিলে হে গর্দভ! তোমাকে তো কেউ রং দেয়নি, এই হোলি পূজার দিনে আমি তোমাকে রং দিয়ে দিলাম। এটা কি তোমার পূজা হয়নি? তুমি কি জানো না “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত এবং তার হাশর-নাশর তাদের সাথে হবে। সুতরাং তোমার হাশর-নাশর হিন্দুদের সাথে হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি যখন এই কথা মুবারক বললেন, তখন আমি লা-জাওয়াব হয়ে গেলাম এবং ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে গেলাম এবং বললাম, আয় বারে ইলাহী মহান আল্লাহ পাক! আমি এটা বুঝতে পারিনি। “মহান আল্লাহ পাক তিনি কিছুক্ষণ পর বললেন, হ্যাঁ তোমাকে অন্যান্য আমলের কারণে ক্ষমা করা হয়েছে। এই ঘটনা থেকে জানা গেল যে, এই বুযুর্গ ব্যক্তি উনার সমস্ত আমল ভালো ছিল, তিনি না জেনে না বুঝে ওই আমলটা করেছিলেন, এজন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন।
উপরোক্ত ঘটনা থেকে বুঝা গেলো, কোন অবস্থাতেই কাফের-মুশরিক, বিধর্মীদের অনুসরণ করা যাবেনা।
সর্বাবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ-অনুকরণ মুবারক করতে হবে।
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা নিয়ে এসেছেন তা আঁকড়িয়ে ধরো এবং যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তা থেকে বিরত থাকো। ” (পবিত্র সূরা হাশর শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ.
অর্থ: “আমার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, যদি তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করো বা মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত মুবারক হাছিল করতে চাও, তবে তোমরা আমার অনুসরণ করো। তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদেরকে মুহব্বত করবেন এবং তোমাদের গুনাহখাতা ক্ষমা করে দিবেন। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি অত্যধিক ক্ষমাশীল ও দয়ালু। ” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩১)
কাজেই সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুসরণ করা প্রত্যেকের জন্য ফরয।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবারের পাত্র কাঠের বাটি বা পেয়ালা
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী চামড়ার বালিশ
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুন্নত মুবারক পালনে কোন হীনম্মন্যতা নয়, বরং সব পরিবেশেই দৃঢ়চিত্ত থাকতে হবে
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবা ও মুহাব্বত মুবারকে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল দৃষ্টান্ত মুবারক
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘আঙুর’
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সকল ধরণের সুন্নতী খাবার বরকতময় রোগমুক্ত শিফা দানকারী সুন্নতী খাদ্য “ভাত”
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাছ সুন্নতী “টুপি
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘ডুমুর’
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)