.“অবশ্যই এই ঘটনাসমূহের মধ্যে রয়েছে জ্ঞানীদের জন্য নছীহত।” (সূরা ইউসুফ শরীফ: ১১১)

“পূর্ববর্তীদের ঘটনাসমূহ পরবর্তীদের জন্য নছীহত স্বরূপ”

ঘটনা-৪২: একটি রুটি ও তিনটি স্বর্ণের ইট

মহান আল্লাহ পাক উনার নবী হযরত ঈসা রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম, উনার প্রতি নাযিলকৃত কিতাব ইনজিল শরীফ অনুসারে তিনি মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত দিতেন। এই উদ্দেশ্যে সারা এলাকা তিনি সফর করে বেড়াতেন। একদিন সফর করতে করতে তিনি এক স্থানে গিয়ে পৌঁছালেন। সেখানে একজন ইহুদী লোক ছিল। সে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনাকে বললো, ‘হে মহান আল্লাহ পাক উনার নবী হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম! আমি চাচ্ছি আপনার দ্বীন গ্রহণ করতে। আপনার অনুসারী হতে।' তার কথা শুনে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম খুশী হলেন। লোকটা উনার দ্বীন গ্রহণ করার পর হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম বললেন, 'আমি তো এখন চলে যাবো, কারণ আমি সফর করতে বের হয়েছি। তোমাকে যা নিয়ম-কানুন বলে দিলাম, তুমি সে অনুযায়ী আমল করবে।' কিন্তু লোকটা বললো, “হুযূর, বেয়াদবী মাফ করবেন। আমার মনে আপনার সঙ্গে সফর করার ইচ্ছা ছিল। আমি মহান আল্লাহ পাক উনার যমীন একটু ঘুরে দেখতে চাই আর আপনার ছোহবত ইখতিয়ার করে মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে চাই। আপনি দয়া করে আমাকে আপনার সঙ্গে নিন।' লোকটার কাকুতি-মিনতি শুনে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম রাজী হলেন। লোকটাকে সাথে নিয়ে রওয়ানা হলেন।

বেশ কিছুদূর সফর করার পর হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার ক্ষুধা লাগলো। উনার কাছে একটা আটার রুটি ছিল। তিনি সেটা বের করে খেলেন। ইহুদীর কাছেও রুটি ছিল, সেও একটা রুটি বের করে খেল। হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনারা সবাই মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে গায়েবী ইলিমপ্রাপ্ত। সুতরাং হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম জানতেন যে, ইহুদীর কাছে আরেকটি রুটি রয়েছে। কিন্তু তাকে যখন এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলেন, সে বললো, 'না হুযূর! আমার কাছে দ্বিতীয় কোনো রুটি নেই; একটাই রুটি ছিল। আপনি যেমন একটা রুটি খেলেন, আমিও একটা খেলাম।' তার অস্বীকার করার কারণ হলো, সে ভেবেছিল দ্বিতীয় রুটিটা বের করলে অর্ধেক রুটি হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনাকে দিতে হবে। নাউযুবিল্লাহ! হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম আর বেশী কিছু না বলে সফর করতে লাগলেন।

বেশ কিছুদূর যাওয়ার পর আবার ক্ষুধা লাগলো। কিন্তু সেখানে খাদ্যের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। কোনো ঘর-বাড়ীও ছিল না, শুধু একটা লোক মেষ চরাচ্ছিল। হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম সেই মেষপালকের কাছে নিজের পরিচয় দিয়ে বললেন যে, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার নবী হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম। পরিচয় পেয়ে মেষপালক ব্যাকুল হয়ে গেল, কারণ সে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনাকে অনেক তালাশ করেছে, কিন্তু কোথাও পায়নি। আর আজকে তিনি নিজে এসে পরিচয় দিয়েছেন। সে মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া আদায় করে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনাকে বললো, 'হুযুর! আমি আপনার কি খিদমত করতে পারি? আপনি আমাকে আদেশ করুন। তখন হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম বললেন, 'তোমাকে তেমন কোনো খিদমত করতে হবে না। তবে আমাদের ক্ষুধা লেগেছে আর তোমার অনেক মেষ রয়েছে। তাই একটা মেষ যদি আমাকে দাও, আমি আবার সেটা ফিরিয়ে দিবো তোমাকে। মেষপালক বললো, 'হুযূর! শুধু একটা কেন, আপনি যদি চান আমার সমস্ত মেষপাল আপনাকে দিয়ে দিবো। হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম বললেন, 'না সবটা তো আমার দরকার নেই।' তিনি একটা পছন্দমত মেষ নিলেন ও সেটা যবেহ করে খাওয়া-দাওয়া করলেন। খাওয়া শেষে মেষের হাড়গুলো একসাথে করে বললেন

قم باذن الله

“মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশে যিন্দা হয়ে যাও।' মেষটা আবার যিন্দা হয়ে গেল। তিনি মেষপালককে মেষটা ফেরত দিয়ে বললেন, 'তোমার থেকে আমি যে মেষ নিয়েছিলাম, তা শোধ করে দিলাম।' সুবহানাল্লাহ! তারপর হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম সেই ইহুদীকে বললেন, ‘মহান আল্লাহ পাক উনার কসম, যে মহান আল্লাহ পাক এই মুর্দা মেষটাকে যিন্দা করে দিলেন! তোমার সাথে তো দ্বিতীয় আরেকটা রুটি ছিল। সেটা কোথায় গেল বলো দেখি?' ইহুদী বললো, 'মহান আল্লাহ পাক উনার কসম, আমার সাথে কোনো দ্বিতীয় রুটি নেই।' হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম আর কিছু না বলে চলতে থাকলেন।

হযরত রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে একটা আছা বা লাঠি মুবারক ছিল। সেই লাঠি মুবারকের গুণাবলী সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেছেন, “সেই লাঠিটা দিয়ে যদি কোনো মুর্দাকে স্পর্শ করা হতো তবে সে মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশে যিন্দা হয়ে যেত। জন্মান্ধকে যদি স্পর্শ করা হত, সে চোখ ফিরে পেত। কুষ্ঠ রোগীকে স্পর্শ করলে সে সুস্থ হয়ে যেত।” সুবহানাল্লাহ! তো সফর করতে করতে কিছুদূর গিয়ে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম দেখলেন, একটা লোক মরে পড়ে আছে। তিনি সেই

قم باذن الله

মুর্দা জিন্দা হয়ে গেল, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার সাথে সালাম-কালাম করে বিদায় নিয়ে চলে গেল। তখন হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম ঐ ইহুদীকে আবার বললেন, 'মহান আল্লাহ পাক উনার কসম, যে মহান আল্লাহ পাক এই মুর্দাকে যিন্দা করলেন! তোমার দ্বিতীয় রুটিটা কোথায়?” ইহুদী এবারও অস্বীকার করলো। তারপর হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম সেখান থেকে কিছুদূর গিয়ে একটা জন্মান্ধকে লাঠি দ্বারা স্পর্শ করলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরতে জন্মান্ধ সুস্থ হয়ে গেল। তিনি আবার ইহুদীকে কসম দিয়ে বললেন, 'তোমার দ্বিতীয় রুটিটা কোথায়?' সে আবারও অস্বীকার করলো। এরপর হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম একটা কুষ্ঠ রোগীকে লাঠি দ্বারা স্পর্শ করলেন, সেও সুস্থ হয়ে গেল। আবার তিনি কসম দিয়ে ইহুদীকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, 'তোমার দ্বিতীয় রুটিটা কোথায়?' ইহুদী এবারও অস্বীকার করলো।



হযরত রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম সফর করতে করতে অনেক দূর চলে গেলেন। একস্থানে গিয়ে দেখলেন, তিনটা স্বর্ণের ইট পড়ে রয়েছে। ইহুদী বললো, “হুযূর! এই স্বর্ণের ইট তিনটা আমরা নিয়ে নেই। আমাদের কাজে লাগবে।” কিন্তু হযরত ঈসা রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম বললেন, “আমাদের এগুলো দরকার নেই। মহান আল্লাহ পাক কুদরতীভাবে আমাদের সবকিছুর ফায়সালা করবেন। এগুলো যারা দুনিয়াদার তাদের জন্য।” তারপর হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম সেখান থেকে সরে অন্যস্থানে চলে গেলেন। ক্লান্তির কারণে একটি গাছের ছায়ায় উনার লাঠি মুবারক পাশে রেখে শুয়ে ঘুমিয়ে গেলেন। এই সুযোগে সেই ইহুদীটা লাঠি মুবারক চুরি করে নিয়ে পালিয়ে গেল। হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম যখন সজাগ হলেন, তখন দেখলেন যে, ইহুদীও নেই, লাঠিও নেই। তিনি বুঝতে পারলেন, ইহুদীই লাঠিটি নিয়ে পালিয়েছে।

এদিকে ইহুদী লোকটা অনেক দূরে চলে গেল। এক এলাকায় গিয়ে দেখে, সেখানকার এক নবাব খুব অসুস্থ। ঘোষণা করা হচ্ছে, ‘যে ডাক্তার, কবিরাজ বা হেকিম নবাবকে সুস্থ করে দিবে, তাকে পাঁচ হাজার দিরহাম দেয়া হবে।’ ঘোষণা শুনে ইহুদী গেল লাঠি নিয়ে, কারণ সে তো মনে করেছে স্পর্শ করলেই সুস্থ হয়ে যাবে। সে বললো, ‘আমি যদি সুস্থ করে দিতে পারি, আমাকে কি তোমরা পাঁচ হাজার দিরহাম দিবে?’ লোকেরা বললো, ‘হ্যাঁ দিব।’ তখন ইহুদী লাঠি মুবারক দিয়ে নবাবকে স্পর্শ করলো। মহান আল্লাহ পাক উনার কি কুদরত! সেই নবাব ইন্তেকাল করলো। এটা দেখে লোকেরা ইহুদীকে পাকড়াও করলো। তারা বললো, ‘তোমাকে মৃত্যুদ- দেয়া হবে। কারণ তুমি নবাবকে মেরে ফেলেছো।’

ঘটনাক্রমে হযরত রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনিও সফর করতে করতে সেখানে এসে পৌঁছালেন। ইহুদীকে ফাঁসি দেয়া হবে সেজন্য সেখানে অনেক লোক ভীড় করেছিল। হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম লক্ষ্য করলেন, যাকে ফাঁসি দেয়া হবে, সে হলো সেই ইহুদী। তিনি ইহুদীকে বললেন, ‘তোমার এই অবস্থা?’ সেতো উনার ক্বদম মুবারক ধরে কান্নাকাটি করতে শুরু করলো, বারবার অনুরোধ করতে লাগলো, ‘হুযূর! আমাকে বাঁচান। এবারকার মতো আমাকে বাঁচিয়ে দিন।’ হযরত রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তার থেকে সম্পূর্ণ ঘটনা শুনলেন। তারপর এলাকাবাসীদের বললেন, ‘হে এলাকাবাসী! আমি যদি তোমাদের সেই নবাবকে সুস্থ করে দিতে পারি, যিন্দা করে দিতে পারি, তাহলে কি তোমরা এই ব্যক্তিকে ছেড়ে দিবে?’ এলাকাবাসী তাতে রাজী হলো। তখন হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম গিয়ে মৃত নবাবকে স্পর্শ করলেন, সাথে সাথে সে যিন্দা হয়ে গেল। সুবহানাল্লাহ! তারপর ইহুদীকে মুক্ত করে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম জিজ্ঞাসা করলেন, ‘সেই মহান আল্লাহ পাক উনার কসম, যিনি তোমাকে মৃত্যু থেকে বাঁচালেন! তোমার দ্বিতীয় রুটিটা কোথায়, বলো দেখি?’ দুনিয়ার মুহব্বত কত কঠিন! সে এবারও বললো, “আমার কোনো দ্বিতীয় রুটি নেই।” (নাঊযুবিল্লাহ!)

ঘুরতে ঘুরতে হযরত রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম আবার সেই আগের স্থানে এসে পৌঁছালেন, যেখানে তিনটি স্বর্ণের ইট ছিল। এবার সেখানে দেখলেন, চারটা লোক মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। তিনি প্রতিটা লোককে যিন্দা করে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমরা এখানে কি কারণে মারা গিয়েছো? আমরা তো কিছুক্ষণ আগে এই রাস্তা দিয়ে গিয়েছিলাম এখানে আমরা কাউকে দেখিনি। তোমরা কোথা থেকে এসে কি কারণে মারা গেলে এখানে?’ তখন তারা বললো, ‘হুযূর! বেয়াদবি মাফ করবেন। আমরা দুনিয়ার মোহে মোহগ্রস্ত ছিলাম, যার জন্য মারা গিয়েছি। এখানে আমরা যে চারজন লোক রয়েছি, তার মধ্যে তিনজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু, আর একজন বাইরের লোক। আমরা যখন এখানে এসে তিনটা স্বর্ণের ইট দেখলাম, তখন মনে মনে চিন্তা করলাম যে, তিনটা ইট নিয়ে কি করা যেতে পারে? কারণ আমরা তো তিনজন বন্ধু, আর একজন অতিরিক্ত। তারপর আমরা সেই অতিরিক্ত একজনকে বাজারে পাঠালাম কিছু খাদ্য নিয়ে আসার জন্য। সে চলে গেলে আমরা পরিকল্পনা করলাম, সে ফিরে আসার সাথে সাথেই তাকে পিটিয়ে হত্যা করবো, আর তিনজনে তিনটা ইট ভাগ করে নিয়ে যাবো। এদিকে অতিরিক্ত লোকটা বাজারে গিয়ে মনে মনে ফিকির করলো, সে যদি আমাদের মেরে ফেলতে পারে, তাহলে নিজেই তিনটা ইট নিয়ে নিতে পারবে। তাই সে খাদ্যের মধ্যে বিষ মিশিয়ে নিয়ে আসলো। তারপর সে খাবার নিয়ে ফিরে আসার সাথে সাথে আমরা তাকে পিটিয়ে মেরে ফেললাম। আর তার বিষযুক্ত খাদ্য খেয়ে নিজেরাও মারা গেলাম।’ তারপর তারা বললো, ‘হুযূর আমাদেরকে মাফ করে দিন! আমরা আর দুনিয়ার মোহে মোহগ্রস্ত থাকবো না। আমরা যেন মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল উনার মতে-পথে আমাদের বাকী জীবন অতিবাহিত করতে পারি, সেজন্য দোয়া করবেন।’ তারা সেই স্বর্ণের ইটগুলো রেখে চলে গেল।

তখন হযরত রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম বললেন, ‘হে ইহুদী, তুমি তো সফরে আমার সঙ্গী। এখন যেহেতু স্বর্ণের ইট তিনটা পাওয়া গিয়েছে, তাহলে বন্টন হবে কি করে? আমার একটা, তোমার একটা। আর অতিরিক্ত একটি রুটি যার কাছে রয়েছে, সে পাবে আরেকটি ইট।’ তখন সেই দুষ্ট ইহুদী তার কোমর থেকে একটি রুটি বের করে বললো, ‘হুযূর! আপনি তো দেখেছেন আমাকে একটা খেতে, আর এই হলো আরেকটা। কাজেই আমাকে দুইটা ইট দিয়ে দিন।’ তখন হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম বললেন, “তুমি কতবড় বদনসীব! আমি তোমাকে এতবার মহান আল্লাহ পাক উনার কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, তুমি একবারও স্বীকার করলে না। কিন্তু এখন স্বর্ণের ইট পাওয়ার লোভে তুমি স্বীকার করছো। হে বখীল! তুমি তিনটা ইটই নিয়ে যাও, অতিশীঘ্রই তোমার উপর মহান আল্লাহ পাক উনার গযব পড়বে।” ইহুদী ব্যক্তিটি এতই নিকৃষ্ট যে হযরত রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার কথায় ভীত না হয়ে বরং খুশি মনে তিনটি ইট নিয়ে রওয়ানা হলো। মহান আল্লাহ পাক উনার নবী, উনার কথা তো ওহী মুবারকের অন্তর্ভুক্ত। তাই কথা অনুসারে ওই ব্যক্তি কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পর পরই তার উপরে মাটি ধ্বসে সে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। নাঊযুবিল্লাহি মিন যালিক!

-০-