হাযির-নাযির শান মুবারক নিয়ে বাতিলপন্থীদের চূ-চেরা:
একজন সম্মানিত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার চোখের সামনেই মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি জগত উন্মুক্ত, তাহলে সৃষ্টির যিনি মূল; নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক কি হবে?
, ০৯ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৬ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৯ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হাযির নাযির শান মুবারক নিয়ে বাতিল ফিরক্বার লোকেরা আপত্তি করে। নাউযুবিল্লাহ! অথচ তাদের এ কথাটিই জানা নেই যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ছোহবত মুবারক লাভ করে একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার চোখের সামনেই মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি জগৎ প্রকাশিত। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنِ الْحَارِثِ بْنِ مَالِكٍ الأَنْصَارِيِّ، أَنَّهُ مَرَّ بِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَقَالَ لَهُ: يَا حَارِثُ، كَيْفَ أَصْبَحْتَ؟ قَالَ: أَصْبَحْتُ مُؤْمِنًا حَقًّا، فَقَالَ: انْظُرْ مَا تَقُولُ، إِنَّ لِكُلِّ حَقٍّ حَقِيقَةً، قَالَ: أَلَسْتُ قَدْ عَزَفْتُ الدُّنْيَا عَنْ نَفْسِي، وَأَظْمَأْتُ نَهَارِي، وَأَسْهَرْتُ لَيْلِي، وَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى عَرْشِ رَبِّي بَارِزًا، وَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى أَهْلِ الْجَنَّةِ يَتَزَاوَرُونَ فِيهَا، وَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى أَهْلِ النَّارِ يَتَضَاغَوْنَ فِيهَا يَعْنِي يَصِيحُونَ، قَالَ: يَا حَارِثُ، عَرَفْتَ فَالْزَمْ، ثَلاَثَ مَرَّاتٍ.
হযরত হারিছ ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি একদিন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে আসলে তিনি বললেন, হে হযরত হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! সকালটা আপনার কেমন কেটেছে? হযরত হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, একজন প্রকৃত মু’মিন হিসাবে। তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, খুব চিন্তা করে বলুন। প্রতিটি জিনিসের একটা হাক্বীক্বত থাকে। (আপনার হাক্বীক্বত কি?) হযরত হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, আমি দুনিয়ার মুহব্বত থেকে নিজেকে ফিরিয়ে নিয়েছি। দিনে রোযা রাখি, রাতে ইবাদত করি এবং নিজেকে এমন পাই, যেন মহান আল্লাহ পাক উনার আরশ মুবারক আমার সামনে উন্মুক্ত। জান্নাতবাসীদের জান্নাতে পরস্পর সাক্ষাৎ করতে দেখছি, জাহান্নামবাসীদের দেখছি তারা কষ্ট ও বিপদে পতিত হয়েছে। তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, হে হযরত হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাহলে আপনি হাক্বীক্বতে পৌঁছেছেন, এর উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার চেষ্টা করুন। এ কথা তিনবার বললেন। (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ ৪২/১১: হাদীছ ৩১০৬২, মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক ১১/১২৯: হাদীছ ২০১১৪, মুসনাদে আব্দ ইবনে হুমাইদ ১/৩৬০: হাদীছ ৪৪৪- লেখক হযরত ইমাম হযরত আব্দ ইবনে হুমাইদ ইবনে নছর (ওফাত: ২৪৯ হিজরী), তাফসিরে আব্দুর রাজ্জাক সানআনী ৩/২২৫, তাফসীরে ইবনে কাছীর ৪/১৩, মু’জামুল কবীর তাবরানী ৩/৪৩০, শুয়াবুল ঈমান ১০১০৬, ১০১০৭, মা’রিফাতুছ ছাহাবী ৬/১৫৩, হিলইয়াতুল আউলিয়া ১০/২৭৩, উসুদুল গাবা ১/২১৯)
[ইমাম হযরত বায়হাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি ভিন্ন সনদেও এ পবিত্র হাদীছ শরীফখানা শুয়াবুল ঈমান কিতাবে বর্ণনা করেছেন। ]
এই হলো হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদের ঈমানের হাক্বীক্বত। উনাদের চোখের সামনে মহান আল্লাহ পাক উনার আরশ, কুরসি, জান্নাত, জাহান্নাম সমস্ত সৃষ্টি-কায়িনাত উন্মুক্ত। সেখানে যিনি ঈমানের মূল, যাঁকে মুহব্বত করলে ঈমানদার হওয়ার দলীল পাওয়া যায় সেই সম্মানিত রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক কি হবে?
একজন সম্মানিত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তো অনেক উপরের কথা একজন ওলীআল্লাহ উনার শান কি হয় উনাদের ঈমানে হাক্বীক্বত কি হয় সেটাও জানা দরকার। দারু কুতুব আল ইলমিয়া, লেবানন থেকে প্রকাশিত সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “সাফিনাতুল কাদরিয়া” কিতাবের ২৩ নং পংক্তিতে বলেন-
نَظَرْتُ اِلٰى بِلَادِ اللهِ جَمَعًا + كَخَرْدَلَةٍ عَلٰى حُكْمِ اِتِّصَالٍ
“আমি মহান আল্লাহ পাক উনার সকল সাম্রাজ্যে নজর করে দেখলাম, মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুমে সবকিছু যেন সরিষার দানার ন্যায়। ”
তাহলে যিনি সৃষ্টির মূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক কেমন হবে? মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেন-
إنّ الله قدْ رَفَعَ لِيَ الدُّنْيا فأنا أنْظُرُ إلَيْها وإِلَى ما هُوَ كائِنٌ فيها إلى يَوْم القيَامَةِ كأنَّما أنْظُرُ إلى كَفّي هذِهِ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক এই দুনিয়াকে আমার চোখের সামনে এরূপভাবে রেখেছেন যে, আমি এ সমগ্র পৃথিবীকে এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত এর মধ্যে যা কিছু সৃজিত হবে তদসমূহকে এমনভাবে দেখি যেন তা সবই আমার হাতের তালুর মধ্যে। ” (আল ফিতান লি আবু নুয়াইম: হাদীছ ২, কানযুল উম্মাল ৩১৯৭১, হিলইয়াতুল আউলিয়া ৬/১০১, ফতহুল কবীর ১/৩১৬, খাছায়েছুল কুবরা ২/১৬৮, তাবরানী)
বাতিলরা বলে এই বর্ণনার সনদে দুর্বলতা আছে। তর্কের খাতিরে যদি সনদ দুর্বলও ধরে নেয়া হয় তবে উপরোক্ত হযরত হারিছ ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ঘটনা এবং হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের শান যদি এমন হয় তবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক কেমন হবে এটা চিন্তা ও ফিকিরের বিষয়। অর্থাৎ সনদগতভাবে দুর্বল হলেও মতনগতভাবে এ বর্ণনা ছহীহ প্রমাণিত।
-খাজা মুহম্মদ নুরুদ্দীন পলাশ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ্ আলাইহিস সালাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৮)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৭)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২০)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৪)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৭)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৯)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৬)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৮)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)