“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
, ৩ রা জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৮ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
আপত্তির খন্ড
১ নং আপত্তি : পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ ৭ম হিজরী শতকে বাদশা মালেক মুজাফফর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সময় থেকে শুরু হয়েছে। যদি তাই হয় তবে হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা কিভাবে পালনের কথা বলেন?
জওয়াব :
অতএব, পরবর্তী উম্মত যদি পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে তবে উক্ত আমল মুবারক সুন্নতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হবে।
৫) স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতেন এবং পালন করার জন্য হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকেও আদেশ মুবারক করেছেন।
৬) কেউ যদি পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা বিদ্‘য়াত বলে তাহলে একটি খাছ সুন্নতকে বিদ্‘য়াত বলার কারণে কুফরী হবে।
৭) কেউ যদি বলে, পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবীল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খইরুল কুরূনে ছিলো না, কথাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা হবে এবং সে পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিদ্বেষী, মিথ্যাবাদী ও কাট্টা গুমরাহ হবে।
৮) কেউ যদি বলে, ৬০০ হিজরীর পরে ঈদে মীলাদে হাবীবীল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চালু হয়েছে সেটাও ডাহা মিথ্যা বলে গণ্য হবে এবং সে পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিদ্বেষী, মিথ্যাবাদী ও কাট্টা গুমরাহ হবে।
যেহেতু ইবাদতের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করতে হয় তাই কেউ যদি ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন উপলক্ষে ছলাত-সালাম পাঠ করে, পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করে, পবিত্র যিকির করে, মানুষকে খাবার খাওয়ায়, দান ছদ্কা করে, পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে আলোচনা করে সবই গ্রহণযোগ্য। কারণ প্রতিটিই ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে রোযা রেখে শুকরিয়া আদায় করে ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনের বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এখন উম্মত সম্মানিত শরীয়ত সম্মত যে কোন উপায়ে শুকরিয়া আদায় করতে পারবে। সবচাইতে বড় কথা, এই বিশেষ দিবসসমূহ পালনের আদেশ স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনিই দিয়েছেন। বিশেষ দিনসমূহ স্মরণ করা সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَذَكِّرْهُمْ بِاَيَّامِ اللّٰـهِ ۚ اِنَّ فِىْ ذٰلِكَ لَاٰيَاتٍ لِّكُلِّ صَبَّارٍ شَكُوْرٍ.
অর্থ : “তাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার দিনসমূহ স্মরণ করিয়ে দিন। নিশ্চয়ই এতে প্রত্যেক ধৈর্য্যশীল শোকরগুযার বান্দা বান্দিদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। (পবিত্র সূরা ইবরাহীম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)
পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার দিন কেমন বিশেষ দিন সে বিষয়ে হানাফী মাযহাবের বিখ্যাত ফিক্বহের কিতাব “রদ্দুল মুহতার আলা দুররিল মুখতার” বা ফতোয়ায়ে শামীতে উল্লেখ আছে-
اَنَّ اَفْضَلَ اللَّيَالِىْ لَيْلَةُ مَوْلِدِهٖ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُـمَّ لَيْلَةُ الْقَدْرِ ثُـمَّ لَيْلَةُ الْاِسْرَاءِ وَالْمِعْرَاجِ ثُـمَّ لَيْلَةُ عَرَفَةَ ثُـمَّ لَيْلَةُ الْـجُمُعَةِ ثُـمَّ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ ثُـمَّ لَيْلَةُ الْعِيْدِ.
অর্থ: “রাতসমূহের মধ্যে উত্তম রাত হচ্ছে পবিত্র মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রাত, অতঃপর পবিত্র ক্বদর উনার রাত, অতঃপর মি’রাজ শরীফ উনার রাত, অতঃপর পবিত্র আরাফা উনার রাত, অতঃপর পবিত্র জুমুয়া উনার রাত, অতঃপর পবিত্র ১৫ শা’বান (শবে বরাত) উনার রাত, অতঃপর পবিত্র ঈদের রাত। ” (রদ্দুল মুহতার আলা দুররিল মুখতার ৩/৫২৮-৫২৯ : কিতাবুল হজ্জ; তাফসীরে রূহুল মায়ানী ১৯/১৯৪, সূরা ক্বদর শরীফ উনার তাফসীর)
ফিকিরের বিষয় হচ্ছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের দিবস কতটা তাৎপর্যপূর্ণ ও ফযীলতপূর্ণ। এই দিন হচ্ছেন অন্য সকল দিনের চাইতেও শ্রেষ্ঠ। আর এমন দিনের স্মরণ করানোর আদেশ মুবারক মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই দিয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারক অনুযায়ী এই বিশেষ দিন স্মরণ করা, সে দিনের বিশেষ ঘটনাবলী আলোচনা করা, সেদিন যে মহান ব্যক্তিত্ব উনার কারণে শ্রেষ্ঠ হলেন উনার ছানা-ছিফত মুবারক করা, শুকরিয়া মুবারক আদায় করা এটা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক উনার অন্তর্র্ভুক্ত। আর হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা যে উক্ত দিবস পালন করতে বলবেন, উনার ফযীলত তুলে ধরবেন এটাইতো স্বাভাবিক।
আর এদিন উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা ও শুকরিয়া আদায় করা একমাত্র ধৈর্য্যশীল ও শোকরগুজার বান্দাদের পক্ষেই সম্ভব। কোন নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিদ্বেষী বিদ্‘য়াতী, গুমরাহ, মিথ্যাবাদী, ওহাবী ও জাহান্নামীদের পক্ষে সম্ভব নয়।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
একখানা পবিত্র হাদীছ শরীফ ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৫)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইবলিসের পরে দ্বিতীয় উলামায়ে সূ হলো বালয়াম বিন বাউরা
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মুহব্বত ঈমান, আর উনাদের সমালোচনা করা লা’নতগ্রস্ত হওয়ার কারণ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন (৪)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)