“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
, ২৫শে জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩১ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ২৮ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
আপত্তির খন্ড
১ নং আপত্তি : পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ ৭ম হিজরী শতকে বাদশা মালেক মুজাফফর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সময় থেকে শুরু হয়েছে। যদি তাই হয় তবে হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা কিভাবে পালনের কথা বলেন?
জওয়াব :
এখানেই শেষ নয়, বিখ্যাত মুহাদ্দিছ হযরত ইমাম ইবনে হিব্বান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাব “ছহীহ ইবনে হিব্বান” রোযা অধ্যায়ে একটা পরিচ্ছেদ রচনা করেছেন যার নাম দিয়েছেন-
ذِكْرُ اِسْتِحْبَابِ صَوْمِ يَوْمِ الِاثْنَيْنِ، لِاَنَّ فِيْهِ وُلِدَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَفِيْهِ اُنْزِلَ عَلَيْهِ ابْتِدَاءُ الْوَحْيِ.
“ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার রোযা রাখা মুস্তাহাব, কারণ এদিনে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র বিলাদতী শান শরীফ প্রকাশ করেছেন, এ দিনেই ওহী মুবারকের সূচনা হয়। ”
এ অধ্যায়ের নাম থেকে বোঝা যায়, ইছনাইনিল আযীম শরীফ রোযা রাখা মুস্তাহাব। কারণ এ দিন হচ্ছে পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার দিন।
“ছহীহ ইবনে হিব্বান” উনার উক্ত অধ্যায়ে একটি হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ قَتَادَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ اَنَّ اَعْرَابِيًّا سَاَلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ صَوْمِ الدَّهْرِ؟ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا صَامَ وَلَا اَفْطَرَ اَوْ قَالَ لَا اَفْطَرَ وَلَا صَامَ فَقَامَ غَيْرُهُ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَرَاَيْتَ رَجُلًا يَصُوْمُ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ثَلَاثَةَ اَيَّامٍ؟ قَالَ ذَاكَ صَوْمُ الدَّهْرِ قَالَ اَرَاَيْتَ رَجُلًا يَصُوْمُ يَوْمَ الِاثْنَيْنِ قَالَ ذَاكَ يَوْمٌ وُلِدْتُ فِيْهِ وَيَوْمٌ اُنْزِلَ عَلَيَّ قَالَ اَرَاَيْتَ رَجُلًا يَصُوْمُ يَوْمًا وَيُفْطِرُ يَوْمًا؟ قَالَ ذَاكَ صَوْمُ اَخِيْ دَاوُدَ.
অর্থ: “হযরত আবূ কাতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। এক বেদুঈন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বছর ব্যাপী রোযা রাখার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেন,উত্তরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, বছর ব্যাপী রোযা ও ইফতারের বিধান নেই। অথবা ইফতার বা রোযার বিধান নেই। অপর এক ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে আপনার রায় বা অভিমত কি? যিনি প্রত্যেক মাসে তিনদিন রোযা রাখেন? উত্তরে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, এটাই বছর ব্যাপী রোযার সমতুল্য। পুনরায় উক্ত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে আপনার কি ফায়ছালা যিনি ইয়াওমুল ইছনাইন শরীফ রোযা রাখেন? উত্তরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, এ দিন এমন একটি দিন যেদিনে আমি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছি এবং এ দিনে আমার প্রতি (আনুষ্ঠানিকভাবে) ওহী মুবারক নাযিল হয়েছে। ” (ছহীহ ইবনে হিব্বান ৩৬৪২ নং হাদীছ)
এমনকি সরাসরি ইয়াওমুল ইছনাইন শরীফ রোযা রাখার ব্যাপারে আদেশ মুবারক রয়েছে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে।
ইমাম হযরত ইবনে আছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিশ্ব বিখ্যাত কিতাব “উসদুল গবা ফি মা’রিফাতিছ ছাহাবা” যা দারু কুতুব আল ইলমিয়া থেকে প্রকাশিত, যার ১ম খ- ১২৭ পৃষ্ঠায় লেখা আছে-
حَدَّثَنَ حَضْرَتْ مَكْحُوْلْ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِبِلَالٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ لَا يُغَادِرَنَّكَ صِيَامُ يَوْمِ الْاِثْنَيْنِ، فاِنّـِىْ وُلِدْتُّ يَوْمَ الْاِثْنَيْنِ، وَاُوْحِيَ اِلَيَّ يَوْمَ الْاِثْنَيْنِ، وَهَاجَرْتُ يَوْمَ الْاِثْنَيْنِ
অর্থ: “হযরত মাকহুল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললেন, হে বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনি কখনো ইছনাইনিল আযীম শরীফ রোযা রাখা পরিত্যাগ করবেন না। কারণ আমি ইছনাইনিল আযীম শরীফ পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছি। এ দিন ওহী মুবারক নাযিল হয়, এ দিন হিজরত করি। ”
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ থেকে যে বিষয়গুলো পরিষ্কার হচ্ছে সেটা হলো-
১) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই নিজের পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষ্যে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেছেন।
২) পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন উপলক্ষে তিনি শুকরিয়া স্বরূপ রোযা রেখেছেন।
৩) এতটাই গুরুত্ব¡ দিয়েছেন যে, প্রতি সপ্তাহে বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষ্যে উনার যে বার অর্থাৎ পবিত্র ইছনাইনিল আযীম শরীফ সেদিন নির্দিষ্ট করে নিয়ে পালন করেছেন।
৪) পবিত্র ইছনাইনিল আযীম শরীফ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা পবিত্র বিলাদত শরীফ বা পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষ্যে রোযা রাখতেন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সকল কাফিররাই মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৫)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৪)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১৩)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৭)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)