“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
, ১১ ই জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৭ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ১৪ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৯ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
(পূর্বপ্রকাশিতের পর)
আপত্তির খ-ন
১ নং আপত্তি : পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ ৭ম হিজরীতে বাদশা মালেক মুজাফফর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সময় থেকে শুরু হয়েছে। যদি তাই হয় তবে হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা কিভাবে পালনের কথা বলেন?
জওয়াব :
উল্লেখ্য যে, কথিত খলীফা হারুনুর রশীদের যামানা ছিলো খইরুল কুরূন। উপরোক্ত ঘটনায় বোঝা যায়, সে সময় পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠের রীতি ছিলো। তাই এক ব্যক্তি তার আমল কিছুটা মন্দ হলেও পবিত্র মীলাদ শরীফ উনাকে তা’যীম করাকে মহান আল্লাহ পাক তার মর্যাদার কারণ হিসাবে প্রকাশ করলেন এবং সম্মানিত ওলীআল্লাহ হিসাবে গ্রহণ করলেন। সুবহানাল্লাহ!
আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ানের (ওফাত ৮৬ হিজরী) শাসনকালে মীলাদ শরীফ :
أَنَّهٗ كَانَ فِيْ زَمَانِ الْـخَلِيْفَةِ عَبْدِ الْـمَلِكِ بْنِ مَرْوَانَ شَابٌّ حُسْنُ الصُّوْرَةِ فِي الشَّامِ، وَكَانَ يَلْهُوْ بِرُكُوْبِ الْـخَيْلِ فَبَيْنَمَا هُوَ ذَاتَ يَوْمٍ عَلٰى ظَهْرِ حِصَانِهٖ إِذْ أَجْفَلَ الْـحِصَانُ وَحَـمِلَهٗ فِيْ سِكَكِ الشَّامِ وَلَـمْ يَكُنْ لَّهٗ قُدْرَةٌ عَلٰى مَنْعِهٖ فَوَقَعَ طَرِيْقَهٗ عَلٰى بَابِ الْـخَلِيْفَةِ فَصَادَفَ وَلَدُهٗ وَلَـمْ يَقْدِرِ الْوَلَدُ عَلٰى رَدِّ الْـحِصَانِ فَصَدَمَهٗ بِالْفَرَسِ وَقَتَلَهٗ، فَوَصَلَ الْـخَبْرَ إِلَى الْـخَلِيْفَةِ فَأَمَرَ بِإِحْضَارِهٖ، فَلَمَّا أَنْ أُشْرِفَ إِلَيْهِ خَطْرٌ عَلٰى بَالِهٖ أَنَّ قَالَ إِنْ خَلَّصَنِيَ اللهُ تَعَالٰى مِنْ هٰذِهِ الْوَاقِعَةِ أَعْمَلُ وَلِيْمَةً عَظِيْمَةً وَأسْتَقَرّٰئ فِيْهَا مَوْلِدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا حَضَرَ قَدَامَهٗ وَنَظَرَ إِلَيْهِ ضَحِكَ بَعْدَ مَا كَانَ يَـخْنِقُهُ الْغَضَبَ، فَقَالَ: يَا هٰذَا أَتَـحْسِنُ السِّحْرَ؟ قَالَ لَا وَاللهِ يَا أَمِيْرَ الْـمُؤْمِنِيْنَ. فَقَالَ عَفُوْتُ عَنْكَ، وَلٰكِنْ قُلْ لِّيْ مَاذَا قُلْتَ؟ قَالَ: قُلْتُ إِنْ خَلَّصَنِيَ اللهُ تَعَالٰى مِنْ هٰذِهِ الْوَاقِعَةِ الْـجَسِيْمَةِ أَعْمَلُ لَهٗ وَلِيْمَةً لِاَجْلِ مَوْلِدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فَقَالَ الْـخَلِيْفَةُ قَدْ عَفُوْتُ عَنْكَ، وَهٰذِهٖ أَلْفَ دِيْنَارٍ لِاَجْلِ مَوْلِدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَنْتَ فِىْ حَلِّ مِنْ دَمِ وَلَدِىْ. فَخَرَجَ الشَّابُّ وَعَفِىَ عَنِ الْقِصَاصِ وَأَخَذَ أَلْفَ دِيْنَارٍ بِبَرَكَةِ مَوْلِدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. وَإِنَّـمَا أَطَّلَتِ الْكَلَامُ فِىْ ذٰلِكَ لِاَجْلِ أَنْ يْعْتَنٰى وَيَرْغَبَ جَـمِيْعُ الْاِخْوَانِ، فِىْ قِرَاءَةِ مَوْلِدِ سَيِّدِ وُلْدِ عَدْنَانَ، لِاَنَّ مِنْ لِاَجْلِهٖ خُلِقَتِ الْاَرْوَاحُ وَالْاَجْسَامُ، بِـحَقِّ أَنْ يَّهْدِىَ لَهٗ الرُّوْحَ وَالْـمَالَ وَالطَّعَامَ.
অর্থ : “শাসক আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ানের খিলাফাতকালে শামদেশের এক সুদর্শন যুবক সে ঘোড়ায় চড়ে খেলতেছিল। একদিন হঠাৎ সে তার ঘোড়ার পিঠ থেকে পড়ে যায়। অতঃপর ঘোড়ার পিঠে উঠলে ঘোড়াটি তাকে নিয়ে শাম দেশের পথে চলতে শুরু করে। ঘোড়াটিকে সে থামাতে সক্ষম হচ্ছিল না। অতঃপর ঘোড়াটি খলীফার দরজায় গিয়ে উপনীত হলো। তখন খলীফার ছেলেটি ঘোড়ার সামনে চলে আসলো এবং খলীফার ছেলেটিও ঘোড়াটিকে ফিরিয়ে রাখতে সক্ষম হলো না বরং সে ঘোড়ার দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং নিহত হয়। এই সংবাদ খলীফার নিকট পৌঁছলে খলীফা উক্ত যুবককে তার দরবারে উপস্থিত হওয়ার জন্য আদেশ করলো। খলীফার আদেশ যখন তার প্রতি ঘোষণা করা হলো, সেটা কঠিন বিপদ মনে করে সেই যুবক বললো যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি আমাকে এই কঠিন বিপদ থেকে উদ্ধার করেন তাহলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান বিলাদত শরীফ উপলক্ষে আমি বড় করে ওলীমা বা খাবারের মজলিসের ব্যবস্থা করবো এবং তা (প্রতিবছর) জারী রাখবো। অতঃপর সেই যুবক খলীফার সমীপে উপস্থিত হলো এবং তার দিকে দৃষ্টি দিল। তখন হত্যা করার গোস্বা সত্ত্বেও খলীফা হেসে দিল। অতঃপর বললো, হে ব্যক্তি! তুমি কি জাদু করো? সে বললো, হে আমীরুল মু’মিনীন! মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি জাদু করি না। অতঃপর খলীফা বললো, আমি তোমার অপরাধ ক্ষমা করে দিলাম। অতএব, তুমি যা বলার তা আমাকে বলতে পারো। তখন সেই যুবক বললো, আমি নিয়ত করেছিলাম, মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি আমাকে এই কঠিন বিপদ থেকে উদ্ধার করেন তাহলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান বিলাদত শরীফ বা মীলাদ শরীফ উপলক্ষে ওলীমা মাহফিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো এবং প্রতিবছর তা জারী রাখবো।
অতঃপর খলীফা পুনরায় বললো, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম এবং তোমাকে সুমহান মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপলক্ষে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা হাদিয়া করলাম এবং আমার ছেলের হত্যার অপরাধ থেকেও মুক্তি দান করলাম। যুবক খলীফার দরবার থেকে মৃত্যুদন্ডের শাস্তি থেকে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে বের হলো এবং সুমহান মীলাদে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বরকতে এক হাজার স্বর্ণ মুদ্রা গ্রহণ করলো। এ বিষয়টি যখন প্রকাশিত হলো, তখন যুবকের সমস্ত ভাই মনযোগী ও আগ্রহী হলো আদনান গোত্রের শ্রেষ্ঠতম সন্তান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান বিলাদত শরীফ তথা মীলাদ শরীফ পালনের ব্যাপারে। কেননা উনার কারণেই সমস্ত রূহ ও দেহ সৃষ্টি হয়েছে এবং উনার সম্মানার্থে তারা লাভ করেছে জীবন, সম্পদ ও খাদ্য। ” (ইয়ানাতুত ত্বালিবীন: ৩য় খন্ড পৃষ্ঠা নং ৬১৩)
(“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাব থেকে সংকলিত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মসজিদে ইবাদত করতে বাধা দেয়া বা মসজিদ উচ্ছেদ করা কুফরী
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (১)
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
একখানা পবিত্র হাদীছ শরীফ ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৫)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইবলিসের পরে দ্বিতীয় উলামায়ে সূ হলো বালয়াম বিন বাউরা
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মুহব্বত ঈমান, আর উনাদের সমালোচনা করা লা’নতগ্রস্ত হওয়ার কারণ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)