‘অদৃশ্য আদেশে’ থেকেই সংস্কার হয়েছিল যে ঐতিহাসিক মসজিদের
, ০৫ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৫ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ২৪ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ১০ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) স্থাপত্য নিদর্শন

পুরান ঢাকার ১২ নম্বর রোকনপুরের কাজী বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করলে দেখা যাবে মোঘল আমলের নকশায় নির্মিত ঐতিহাসিক কাজী বাড়ী জামে মসজিদ। বাইরে থেকে বোঝা না গেলেও ভিতরে প্রবেশ করে কারুকার্য করা এই মসজিদ দেখে অবাক হন মুসল্লিরা। মসজিদের সাথেই কাজী বাড়ী।
মসজিদের ভেতরে-বাইরে দেয়াল বর্ণিল টাইলসে আবৃত। এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটির প্রশস্ততা একেবারেই কম। একসঙ্গে পঞ্চাশজন মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
মসজিদের গায়ের কারুকার্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। অনেক দূর থেকেও লোকে এখানে আসে ইবাদত করতে। পর্যটকরাও পুরান ঢাকার মসজিদটি না দেখে যান না।
কাজী আবদুর রউফের পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া এ স্থানে বহুকালের পুরাতন জীর্ণ দালানি মসজিদ ছিল। পরে ১৯১৫ খৃ: তা ভেঙে পুনরায় নির্মাণ করা হয়। স্থানীয় প্রবীনদের কাছ থেকে জানা যায় অদৃশ্য আদেশপ্রাপ্ত হয়েই মসজিদটি সংস্কার করা হয়।
সেখানে আছেন ১৬ শতাব্দীতে আরব দেশ থেকে আসা পীর সাইয়্যিদ আহমদ বক্স এর বংশধর কাজী সাদ উল্লাহীল আলীম। তাঁর কাছেই জানা যায় মসজিদ নির্মাণের ইতিহাস। তিনি জানান ১৬ শতাব্দীতে সাইয়্যিদ আহমেদ বক্স মোঘল সম্রাটের কাছ থেকে জায়গারী পাওয়ার পর ধোলাই খাল সংলগ্ন এলাকায় জঙ্গল পরিস্কার করে এই মসজিদ নির্মাণ করেন এবং পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রচার শুরু করেন।
এই মসজিদের পাশেই আছে সাইয়্যিদ আহমেদ বক্স পীর সাহেবের মাজার। মসজিদের ভিতরে আছে কষ্টি পাথর দিয়ে করা একটি শিলালিপি। সাদ জানান তখনকার দিনে আর্কিটেকচারাল ডিজাইন অনুসারে মসজিদের উপরে চিনি টুকরা বা প্লেট ভেঙ্গে করা ছোট ছোট গ্লাসের টুকরা দিয়ে নকশা করা হয়েছে।
এর সাথে আছে কিছু মোঘল আমলের স্ট্রাকচার। সাইয়্যিদ আহমেদ বক্স পীর সাহেবের উত্তর পুরুষ ছিলেন পীর সাহেব কাজী আবদুর রউফ। জানা যায় মসজিদ নির্মাণের ২’শ/৩’শ বছর পর তাঁকে স্বপ্নে নির্দেশ দেওয়ার পর এই মসজিদ তিনি সংস্কার করেন।
এরপরে কাজী আবদুর রউফ এর ছেলে কাজী আবদুল মতিন মসজিদের সামনে ছাউনি করে দেন। কালের পরিক্রমায় কিছু পরিবর্তন হলেও মূল কাঠামো একই রয়ে গেছে। ১৮৫০ খৃ: কাজী আবদুর রউফের বাবা মৌলভী রহিম বক্স আবারো মসজিদটির সংস্কার করেন।
তিনিও পীর সাহেব ছিলেন। তাঁর চেষ্টায় এখানে জুম্মার পড়া শুরু হয় বলে জানা যায়। তখন পীর সাহেবের মসজিদ হিসেবে পরিচিত ছিল। কাজী বাড়ীর পারিবরিক মসজিদ হলেও সবাই নামাজ পড়তে পারেন। ঢাকার যে কোন জায়গা থেকে ধোলাই খালের টায়ারের গলি এসে কাজী বাড়ী জামে মসজিদের নাম বললে দেখিয়ে দেবে সবাই।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুঘল আমলের নিরাপত্তা নিদর্শন হাজীগঞ্জ দুর্গ
০৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রাচীন মসজিদের অজানা ইতিহাস
০৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
তাজ-উল-মসজিদ ভারতের সর্ববৃহৎ মসজিদ
২৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
টাইম ম্যাগাজিনের তালিকায় আশুলিয়ার জেবুন নেসা মসজিদ
২১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক চুনাখোলা মসজিদ
১৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১৪)
১৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (৩)
১২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (২)
০৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (১)
২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১১)
২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঐতিহাসিক রোয়াইলবাড়ি দুর্গ (৩)
১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১০)
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)