৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৪)
, ২৯ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৫ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ০২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৭ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) আইন ও জিহাদ
সম্মানিত ছলাতুল ফজর উনার পর সবার আগে হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি প্রস্তুত হয়ে ৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনাদেরকে বের হতে বললেন এবং উনাদেরকে উদ্দেশ্য করে এই কবিতা মুবারক আবৃত্তি করলেন-
هبوا جميع اخوتى ارواحا. نحو العدو نبتغى الكفاحا
ويرزق الله لنا صلاحا. فى نصرنا الغدو والرواحا
অর্থ: “আমার সকল ভাইগণ প্রাণ নিয়ে জেগে উঠুন। আমরা শত্রুর দিকে সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ যাবো। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে সঠিকত্বের বুঝ দিবেন, আমাদের সকাল-সন্ধ্যার বিজয় যুদ্ধে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে সর্বোচ্চ কামিয়াবী মুবারক হাদিয়া করবেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সবাই একে একে হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট একত্রিত হলেন। সর্বশেষ উপস্থিত হলেন হযরত যুবাইর ইবনে আওয়াম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি। উনার সম্মানিতা আহলিয়া ছিলেন হযরত আসমা বিনতে ছিদ্দীক্বে আকবর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। হযরত আসমা বিনতে ছিদ্দীক্বে আকবর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি উনার সম্মানিত ভাই হযরত আব্দুর রহমান ইবনে ছিদ্দীক্বে আকবর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট এসে উনাদের সম্মানিত বিজয় মুবারক এবং নিরাপত্তা মুবারক উনার জন্য দু‘আ মুবারক করলেন এবং সম্মানিত ভাই উনাকে বললেন, ‘হে আমার সম্মানিত ভাই! আপনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ফুফাতো ভাই হযরত যুবাইর ইবনে আওয়াম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার কাছাকাছি থাকবেন এবং উনার অনুসরণে কাফিরদেরকে আক্রমণ করবেন। মহান আল্লাহ পাক উনার ব্যাপারে কারো তিরস্কার যেন আপনাদেরকে প্রভাবিত না করে। ’
হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার তত্ত্বাবধানে ৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা আরব খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে সম্মানিত জিহাদ মুবারক করার জন্য অবস্থান গ্রহণ করলেন। মুসলমান উনাদের এই ক্ষুদ্র দল দেখে আরব খ্রিষ্টানরা মনে করলো, উনারা দূত হিসেবে আগমন করেছেন। কিন্তু হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি যখন তাদেরকে যুদ্ধের জন্য এগিয়ে আসতে আহ্বান মুবারক করলেন, তখন তাদের ভুল ভাঙ্গে এবং তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়। এ সময় জাবালা নামক এক খ্রিষ্টান নিম্নোক্ত কবিতা আবৃত্তি করতে করতে সামনে অগ্রসর হয়-
إنا لمن عبدوا الصليب ومن به. نسطو على من عابنا بفعالنا
ولقد علونا بالمسيح وامه. والحرب تعلم انها ميراثنا
انا خرجنا والصليب امامنا. حتى تبددكم سيوف رجالنا
“নিশ্চয়ই আমরা ক্রুশেরই পূজারী এবং তার সাহায্যে আমরা আমাদের কর্ম দ্বারা শত্রুদের উপর বিজয়ী হই। আমরা মসীহ ও তার মাতার সম্মানের দ্বারা উপরে উঠেছি এবং যুদ্ধ জানে যে, সে আমাদের ঐতিহ্য। ক্রুশকে সামনে রেখে আমরা বের হয়েছি, যাতে আমাদের লোকদের তরবারী আপনাদেরকে ধ্বংস করে। ”
অতঃপর জাবালা বললো, ‘আমাদেরকে যুদ্ধের জন্য ডাক দিয়েছেন কে?’
হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বললেন, ‘আমি ডেকেছি। কাজেই তুমি যুদ্ধের জন্য চলে আসো। ’
কাফির জাবালা বললো, ‘আমরা আপনাদের সাথে যুদ্ধের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। অন্যদিকে আপনারা যুদ্ধ থেকে বিরত থাকতে চাচ্ছেন। মসীহের ক্বসম! আমরা আপনাদের সন্ধির আহ্বানে সাড়া দেবো না। আপনারা আপনাদের লোকজন উনাদের কাছে ফিরে গিয়ে বলুন যে, আমরা যুদ্ধই করতে চাই। ’
কাফির জাবালার কথার জবাবে হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি দ্বীপ্ত কণ্ঠে পাল্টা প্রশ্ন করলেন, ‘হে কাফির জাবালা! তুই কি মনে করেছিস যে, আমরা তোর কাছে দূত হিসেবে এসেছি?’
জাবালা বললো, ‘হ্যাঁ; আমি তাই মনে করি। ’
হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বললেন-
لا تظن ذلك أبدا فوالله ما خرجنا إلا لحربكم وقتالكم فإن قلتم اننا شرذمة فإن الله ينصرنا عليكم
‘তুই তা কখনো মনে করিস না। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমরা তোদের সাথে যুদ্ধ করা ও তোদেরকে হত্যা করে জাহান্নামে পাঠিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উদ্দেশ্যে বের হইনি। তুই যদি বলিস- আমরা ক্ষুদ্র দল, তাহলে জেনে রাখ- মহান আল্লাহ পাক তিনিই আমাদেরকে তোদের বিরুদ্ধে সাহায্য করবেন। ” সুবহানাল্লাহ! (পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকুন)
-মুহাদ্দিস মুহম্মদ ইবনে ছিদ্দীক্ব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত জিহাদের ময়দানে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বীরত্ব মুবারক (২)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৬৩)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত জিহাদ মুসলমানদের একটি বিশেষ ফরয ইবাদত
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৬২)
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত জিহাদ উনার ময়দানে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুমগণ একজন অপরজনকে প্রাধান্য দেয়ার বেমেছাল দৃষ্টান্ত মুবারক
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৯)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৭)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৮)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৬)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৭)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৫)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)