৫০ টির অধিক দেশে বাংলাদেশের মাছ রপ্তানি হচ্ছে।
মাছ উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয় বাংলাদেশ। সঠিক ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা এবং সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণে খুব সহজেই বাংলাদেশ হতে পারে পৃথিবীর প্রথম মৎস্য উৎপাদনকারী এবং রপ্তানীকারী দেশ।
, ২০ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১১ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১০ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ২৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মন্তব্য কলাম
উল্লেখ্য, এদেশে যে পরিমাণ নদী-নালা, হাওড়, বাওড় ও পানিভূমি রয়েছে, তাতে এক্ষেত্রে উদ্যোগ নিলে খুব সহজেই বিশ্বে প্রথম হতে পারে। দেশের মানুষের পুষ্টির অভাব মাছ উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে ‘দূর’ করা যেতে পারে।
বাংলাদেশে বছরে মাছের চাহিদা রয়েছে ৪০ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন। ২০১৪-২০১৫ বছরে মাছের উৎপাদন বেড়ে ৩৬ লাখ ৮৪ হাজার মেট্রিক টনে পৌঁছেছে। এ বছর ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার টনে পৌঁছবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, দেশের ১ কোটি ৮২ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা মৎস্য সম্পদের সঙ্গে সম্পর্কিত। কৃষিজ আয়ের প্রায় ২৪ ভাগ আসে এ খাত থেকে। জিডিপিতে মৎস্যসম্পদের অবদান প্রায় ৪ শতাংশ। প্রাণিজ আমিষের ৬০ ভাগ যোগান দেয় মৎস্য খাত।
বাঙালির পরিচয় ‘মাছে ভাতে বাঙালি’। মাছের প্রতি বাঙালির টান সেই প্রাচীন যুগেও আলোচ্য বিষয় বলে বিবেচিত হতো। নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুরসহ নীরাশয়ের সংখ্যা হ্রাস পেলেও আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষের জন্য উৎপাদন বিস্ময়করভাবে বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। তবে মাছ চাষিদের সুযোগ-সুবিধা আরো দেয়া হলে এই উৎপাদন অন্তত দ্বিগুণ করা সম্ভব। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে মাছের ক্রমবর্ধমান হিস্যা আরও সন্তোষজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ারও সুযোগ রয়েছে। উল্লেখ্য, কর্মসংস্থান এবং আমিষ চাহিদা পূরণে মাছ উৎপাদনে আরও গুরুত্ব দেয়া উচিত। দেশে পর্যাপ্ত হিমাগার নির্মাণের পাশাপাশি মাছ চাষিদের সহজ শর্তে ঋণদানসহ সব কিছুর সুলভ সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য মতে, একজন মানুষের বছরে মাছের প্রয়োজন ১৮ কেজি। কিন্তু প্রয়োজনের বিপরীতে মাছ গ্রহণ করছে ১৫ দশমিক ৪ কেজি। একজন মানুষের দৈনিক ২ দশমিক ৬ কেজি হিসাবে বাংলাদেশে ২০ কোটি মানুষের জন্য বছরে মাছের ঘাটতি ৫ লাখ ২০ হাজার টন। তাই চাষকৃত মাছের উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমেই এ চাহিদা পূরণ করতে হবে।
দেশে সমন্বিত মাছ চাষ করা গেলে অবস্থার আরো উন্নতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। দেশের নিচু সব আবাদি জমিতে রফতানিমুখী মাছ হিসেবে বাগদা চিংড়ি ছাড়াও দেশী জাতের মাছ চাষ করা সম্ভব। জমিতে বোরো ধান কাটার পরও তিন মাস পর্যন্ত পানি থাকে। তাই এসব জমিকে মাছ চাষের আওতায় আনা গেলে উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।
এক্ষেত্রে রেণু ও পোনা উৎপাদনকারীদের সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণ করতে হবে। খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় পোনা উৎপাদন খরচ বাড়ছে। পাশাপাশি পরিবহন ও সংরক্ষণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় উদ্যোক্তাদের অর্থসঙ্কটে পড়তে হয়। তাই হ্যাচারি ও নার্সারির উৎপাদনকারীরা আর্থিক সুবিধা পেলে তারা জোরালো ভূমিকা রাখতে পারবে।
পাশাপাশি শিক্ষিত ও বেকার যুব সমাজ শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে প্রশিক্ষণ ও সরকারের দেয়া সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা নিয়ে মাছ চাষে এগিয়ে আসতে পারে। এতে করে পরিবারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অর্থ উপার্জন ও জাতীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণে অবদান রাখার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি নীরাসয়কে মৎস্য চাষের আওতায় আনার জন্যও কাজ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, জিডিপিতে মৎস্য এবং প্রাণী ও পোলট্রি খাতের অবদান ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও কৃষিঋণ বিতরণে মৎস্য খাত উপেক্ষিতই রয়েছে। গত অর্থবছরে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা কৃষিঋণের মধ্যে মৎস্য খাতে বিতরণ হয়েছে এর মাত্র ১০ শতাংশ।
পাশাপাশি দৈনিক আল ইহসান শরীফ উনার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মাছ ও পশু খাতে গবেষণার অভাব, মৎস্য ও পশু সম্পদ অধিদফতরের অব্যবস্থাপনা, দুর্বল বাজার অবকাঠামো, ট্যারিফ আরোপের ক্ষেত্রে সরকারের ভ্রান্ত ধারণা, পর্যাপ্ত ভ্যাকসিনের অভাব, গুণগত মানের পশুখাদ্যের অভাব, শ্রমিকের সঙ্কট, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিঘাত, ঋণ ও বীমা সুবিধা না থাকা, গুদাম ও সংরক্ষণ ব্যবস্থা অপ্রতুল, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও রাস্তাঘাট অনুন্নয়ন ও মধ্যস্বত্ব ভোগীদের দৌরাত্ম্য চলছে। ফলে অনেক দূর পিছিয়ে আছে অর্থনীতির দুই পা পশু সম্পদ ও মৎস্য খাত।
সঙ্গতকারণেই আমরা মনে করি, মৎস্য ও পশু মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকে ঢেলে সাজাতে হবে। প্রয়োজনীয় সংস্কার করে গতিশীল করতে হবে। বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে। উৎপাদনকারী যেন ন্যায্যমূল্য পায় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া উৎপাদনকারীরা যাতে সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা পায় সে বিষয়টি সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।
বলার অপেক্ষা রাখেনা- মৎস্যখাতে বিনা সুদে ও সহজ শর্তে ঋণ দিলে এবং সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা ও সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বাংলাদেশই হবে ইনশাআল্লাহ পৃথিবীর প্রধান মৎস্য উৎপাদনকারী এবং রপ্তানীকারী দেশ।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে গুপ্তহত্যার মাধ্যমে শহীদ করা জায়নবাদী তথা বর্বর ইহুদীরা কাপুরুষতার প্রমাণ দিয়ে অতীত ইতিহাস থেকে একের পর এক গুপ্তহত্যা করে আসছে ইহুদীদের গুপ্তহত্যার অনেক নিন্দা, ধিক্কার এবং প্রচারণা ও প্রতিহতের প্রচেষ্টা দরকার (পর্ব-১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে গেছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্রে পড়েই দুনিয়াদার মালানারা বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফ বাদ দিয়েছে। পর্নোগ্রাফি, মাদক থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে চাইলে বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফও বেশি বেশি করতে হবে।
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ডানে সেলফি বামে সেলফি, সেলফি সেলফি সেলফি উম্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দিন দিন বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা, খুন আর আত্মহত্যা মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ সরকারের উচিত জাতীয়ভাবে দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও শিক্ষা প্রচার ও প্রসার করে এই সামাজিক সমস্যাটি দূরিকরণ করা।
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যথাযথ পদক্ষেপ নিলে ইনশাআল্লাহ আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের প্রথম ধনী দেশ। এক উত্তারাঞ্চলের খনিজ উত্তোলন করলেই গোটা দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। সরকারের নিষ্ক্রিয়তা বরদাশতযোগ্য নয়।
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবহেলায় কৃষিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক; বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। বিলুপ্তির পথে ১৯২ জাতের উপকারী পোকা। সরকারের উচিত অবিলম্বে কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও কৃষিকে বিষমুক্ত করা।
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করা কী অপরাধ? সংবিধান কী পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের সুযোগ দেয়নি? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে কী বেপর্দা ও ছবির বিরুদ্ধে বলা হয়নি?
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রতি বছর ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক “অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নতুন আশঙ্কা এবং বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমেছে”- এ তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নচেৎ সাধারণ অসুখেই প্রাণনাশ হতে পারে
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘ইসলামভীতি মোকাবেলায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস’ হলেও কার্যকরী কিছুই হচ্ছে না ইসরাইলকে সহযোগিতা করতে আমেরিকায় ইসলামোফোবিয়ার বিস্তার আরো বাড়ানো হচ্ছে
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)