১২টি চন্দ্রমাসের নাম এবং নামকরণের সার্থকতা (১)
, ২৫ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১২ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ১১ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ২৬ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِنْدَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ وَقَاتِلُوا الْمُشْرِكِينَ كَافَّةً كَمَا يُقَاتِلُونَكُمْ كَافَّةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ
অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট উনার নিয়মানুযায়ী আসমানসমূহ ও যমীনসমূহ সৃষ্টির দিন হতেই গণনা হিসেবে মাসের সংখ্যা ১২টি। তন্মধ্যে ৪টি হারাম (যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ) মাস। এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত নিয়ম। সুতরাং এ মাসগুলোর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করো না। তোমরা মুশরিকদের সাথে সর্বাত্মকভাবে জিহাদ করবে, যেমন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ করে থাকে। আর জেনে রাখুন! মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি মুত্তাক্বীনগণের সঙ্গে আছেন। (পবিত্র সূরাতুত তাওবা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-৩৬)
উক্ত আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় তাফসীরের কিতাবে ১২টি মাসের নাম, তারতীব, নামকরণের সার্থকতা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ রয়েছে। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো-
ذكر الشيخ علم الدين السخاوى رحمة الله عليه فى جزء جمعه سماه (الـمشهور فى اسماء الايام والشهور) ان الـمحرم سمى بذلك تاكيدا لتحريـمه لان العرب كانت تتقلب به فتحله عاما وتحرمه عاما قال ويجمع على محرمات ومحارم ومحاريم، وصفر سمى بذلك لخلو بيوتهم منهم حين يخرجون للقتال والاسفار يقال صفر الـمكان اذا خلا ويجمع على اصفار كجمل واجمال، وشهر ربيع الاول سمى بذلك لارتباعهم فيه والارتباع الاقامة فى عمارة الربع ويجمع على اربعاء كنصيب وانصباء، وعلى اربعة كرغيف وارغفة، وربيع الاخرى كالاول. جمادى سمى بذلك لجمود الـماء فيه، قال وكانت الشهور فى حسابهم لا تدور، وفى هذا نظر اذ كانت شهورهم منوطة بالاهلة فلا بد من دورانها فلعلهم سموه بذلك اول ما سمى عند جمود الـماء فى البرد، كما قال الشاعر: وليلة من جمادى ذات اندية+لايبصر العبد فى ظلمائها الطنبا
لاينبح الكلب فيها غير واحده + حتى يلف على خرطومه الذنبا.
ويجمع على جماديات كحبارى وحباريات وقد يذكر ويؤنث فيقال جمادى الاولى والاول وجمادى الاخر والاخرة. رجب من الترجيب وهو التعظيم ويجمع على ارجاب ورجاب ورجبات. شعبان من تشعب القبائل وتفرقها للغارة ويجمع على شعابين وشعبانات. ورمضان من شدة الرمضاء وهو الخر يقال رمضت الفصال اذا عطشت ويجمع على رمضانات ورماضين وارمضة قال وقول من قال انه اسم من اسماء الله خطأ لا يعرج عليه ولا يلتفت اليه، قلت قد ورد فيه حديث ولكنه ضعيف وبينته فى اول كتاب الصيام. شوال قال ويجمع على شواول وشواويل وشوالات. القعدة بفتح القاف، قلت وكسرها، لقعودهم فيه عن القتال والترحال ويجمع على ذوات القعدة. الحجة بكسر الحاء قلت وفتحها سمى بذلك لاقامتهم الحج فيه ويجمع على ذوات الحجة. (تفسير ابن كثير فى تفسير سورة التوبة ۳۶ اية الجلد ۲ الصفحة ۵۵۳ دار الفكر بيروت لبنان)
অর্থ: হযরত আল্লামা শায়েখ ইলমুদ্দীন সাখাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি الـمشهور فى اسماء الايام والشهور ‘আল মাশহুর ফী আসমায়িল আইয়ামি ওয়াশ শুহূর’ নামে একখানা কিতাব রচনা করেছেন। তিনি তাতে লিখেন- আস সানাতুল ক্বমারিয়্যাহ বা চন্দ্রবছর (হিজরী সন বা আরবী সন) উনার ১২টি মাস। উনাদের
১ম মাস হচ্ছে محرم ‘মুর্হরম’: অর্থাৎ যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ মাস এবং সম্মানিত মাস। উক্ত মাস যেহেতু নিষিদ্ধ ও সম্মানিত, এজন্য এ মাস উনার নামকরণ করা হয়েছে محرم ‘মুর্হরম’ হিসেবে।
আমি (গ্রন্থকার হযরত ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি) বলি: আরবরা উক্ত মাসের মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করতো। তারা সুবিধামতো এ মাসকে কখনো হারাম মাস এবং কখনো হালাল মাস বানাতো। তাদের এমন সুবিধাবাদী আচরণের প্রতিবাদে এ মাসকে محرم মুর্হরম নামে অবিহিত করা হয়েছে।
তিনি (হযরত শয়েখ ইলমুদ্দীন সাখাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, محرم শব্দের বহুবচন হচ্ছেمحاريم- محارم -محرمات মুর্হারমাত, মাহারিম, মাহারীম।
২য় মাস হচ্ছে صفر ‘ছফর’: অর্থাৎ শূন্য, খালী মাস। যেহেতু এ মাসে আরবগণ যুদ্ধ ও ছফরের উদ্দেশ্যে গৃহ ত্যাগ করতো এবং এ কারণে তাদের ঘর-বাড়ীগুলো খালী থাকতো, এজন্য এ মাসকে صفر ‘ছফর’ নামে অভিহিত করা হয়। যেমন: কোন ঘর খালী হলে বলা হয়- صفر الـمكان অর্থাৎ স্থানটি খালী হয়েছে। صفر শব্দের বহুবচন اصفار যেমন: جمل শব্দের বহুবচন اجمال।
৩য় মাস হচ্ছে ربيع الاول ‘রবীউল আউওয়াল শরীফ’: অর্থাৎ বসন্ত ঋতুর প্রথম মাস।
৪র্থ মাস হচ্ছে ربيع الثانى ‘রবীউছ ছানী বা ربيع الاخر ‘রবীউল আখির’: অর্থাৎ বসন্ত ঋতুর দ্বিতীয় মাস। এ মাস দুটিতে যেহেতু আরবে বসন্ত কাল ছিল, তাই এ মাস দুটির নামকরণ ربيع الاول ‘রবীউল আউওয়াল’ ربيع الثانى ‘রবীউছ ছানী’ হিসেবে করা হয়। الربيع শব্দের অর্থ ঋতুরাজ বসন্তকাল। والارتباع الاقامة فى عمارة الربيع অর্থাৎ তিনি বসন্তকালীন ভবনে অবস্থান করছেন। ربيع শব্দের বহুবচন হচ্ছে اربعاء ও اربعة। যেমন: نصيب শব্দের বহুবচন انصباء এবং رغيف শব্দের বহুবচন ارغفة। (চলবে)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)