হাক্বীক্বী মুহব্বত-মা’রিফত ও নিসবত-কুরবত মুবারক ব্যতিত কখনোই পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের হাক্বীক্বী অর্থ ও ব্যাখ্যা করা সম্ভব না (৩)
, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
.jpg)
পবিত্র সূরা নিসা শরীফ উনার ৬৯ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
অর্থ: “তোমরা যদি (কোন বিষয়ে) না জানো, তাহলে আহলে যিকির বা আল্লাহওয়ালা উনাদেরকে জিজ্ঞাসা করে জেনে নাও।” (পবিত্র সূরা নহল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৩)
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা প্রতীয়মান হলো যে, যিনি বা যারা সত্যিকার আল্লাহওয়ালা উনাদেরকে অনুসরণ করতে হবে। কেননা, উনাদেরকে অনুসরণ করা ব্যতীত কারো পক্ষে আল্লাহওয়ালা ও আল্লাহওয়ালী হওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রত্যেক বান্দা-বান্দীদেরকে আল্লাহওয়ালা ও আল্লাহওয়ালী হওয়ার জন্য আদেশ মুবারক করেছেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
كُونُوا رَبَّانِيِّينَ
অর্থ: “তোমরা সকলেই আল্লাহওয়ালা-আল্লাহওয়ালী হয়ে যাও।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৭৯)
উল্লেখ্য, যাদের আক্বীদা-আমল সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত ও পবিত্র সুন্নাহ বিরোধী তারা কখনোই হক্কানী-রব্বানী আলিম বা আল্লাহওয়ালা নয়। ফলে তাদের লেখা তরজমা বা তাফসীরগ্রন্থ হোক কিংবা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অনুবাদ বা ব্যাখ্যাগ্রন্থ হোক অথবা অন্য কিতাবাদী হোক তার মধ্যে ভুল থাকাটাই স্বাভাবিক। কেননা আরবীতে প্রবাদ রয়েছে-
كُلُّ اِنَاءٍ يَتَرَشَّحُ بِمَا فِيْهِ
অর্থ: “পাত্রে আছে যাহা, ঢালিলে পড়িবে তাহা।” কাজেই যার আক্বীদা-আমল যেমন, তার বক্তব্য ও লিখনীও তদ্রƒপই হবে।
অতএব, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার প্রকৃত অর্থ ও ব্যাখ্যা করতে হলে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার যিনি রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে গভীর মুহব্বত, তায়াল্লুক, নিছবত থাকতে হবে। ইলহাম-ইলকা, ইলমে লাদুন্নী উনার অধিকারী হতে হবে। অন্যথায় তার পক্ষে পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের হাক্বীক্বী অর্থ ও ব্যাখ্যা করা কস্মিনকালেও সম্ভব হবে না।
আরো উল্লেখ্য, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও ব্যাখ্যা করার জন্য প্রতিটি পবিত্র আয়াত শরীফ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকতে হবে। কারণ পবিত্র কুরআন শরীফ উনার এক আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যা হচ্ছে আরেক আয়াত শরীফ। অনুরূপ পবিত্র হাদীছ শরীফ সম্পর্কে সার্বিক জ্ঞান থাকতে হবে। কারণ পবিত্র হাদীছ শরীফ সম্পর্কে ইলিম না থাকলে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ব্যাখ্যা করা কখনোই সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য যে, ওহী মুবারক নাযিলের দরজা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে নতুন কোন পবিত্র আয়াত শরীফ কিংবা কোন পবিত্র হাদীছ শরীফ নাযিল হবে না। তবে পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের অর্থ ও ব্যাখ্যা করার কাজটি অব্যাহত রয়েছে এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
এখানে জানা আবশ্যক যে, মুহাক্কিক মুদাক্কিকগণ বলেছেন, যদিও কিতাবুল্লাহ উনার সহজ সরল ভাষা ও বর্ণনার জন্য সহজেই বোধগম্য এবং বাস্তবায়নযোগ্য তথাপি যমীনে সর্বদাই এমন সকল ব্যক্তির প্রয়োজন থাকবে যারা উনার রহস্যসমূহ উদঘাটন করতে পারেন এবং ইলমি ও আমলি ব্যাখ্যা দিতে পারেন; নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরে এমন ব্যক্তিদেরকে হযরত আহলু বাইত শরীফ বা আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে তালাশ করা উচিত। এ প্রসঙ্গে আওলাদে রসূল হযরত শায়েখ সাইয়্যিদ মুহিউদ্দীন আব্দুল ক্বাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি ৬ষ্ঠ হিজরী শতাব্দীর সম্মানিত মুজাদ্দিদ উনার একটা বিষয় উল্লেখ করা যেতে পারে। এক ব্যক্তি কসম করেছে, সে একটা নির্দিষ্ট সময়ে একটা নেক কাজ একাই করবে উক্ত সময়ে আর কেউই যেনো সে কাজটি করতে না পারে। এটা যদি সে করতে না পারে তাহলে তার আহলিয়া (স্ত্রী) তালাক হয়ে যাবে।
এ মাসয়ালাটি নিয়ে সমসাময়িক অনেক আলিম-উলামা, ফক্বীহ উনাদের নিকট যাওয়া হলো কিন্তু কেউই ফায়সালা দিতে সক্ষম হলেন না। শেষ পর্যন্ত হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট মাসয়ালাটি পেশ করা হলে তিনি সাথে সাথে বললেন, এটা তো একটা সহজ মাসয়ালা, সুুওয়ালকারীকে মক্কা শরীফ যেতে বলো এবং সকলের তাওয়াফ বন্ধ করে দিয়ে সে যেনো একাই তাওয়াফ করে। তার পক্ষে এককভাবে আমল করা সম্ভব হবে। ফলে তার আহলিয়া তালাক হবে না। সুবহানাল্লাহ! এখন মাসয়ালাটি জানার পর সহজ বলেই মনে হচ্ছে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মাসয়ালাটি অত্যন্ত কঠিনই ছিল। (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল কায়িনাত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা ও তা’যীমার্থে ক্বিয়াম শরীফ করা সুন্নত হওয়ার অকাট্য প্রমাণ
১৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়তে রজম বা ছঙ্গেছারের বিধান (৩)
১৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মর্যাদা-মর্তবা ও ফযীলত মুবারক প্রসঙ্গে (৩৭)
১৩ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৩ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৩ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কর্তব্য কাজে দৃঢ়তা এনে দেয় সন্তুষ্টি ও নিয়ামত
১৩ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
উলামায়ে সূ’ ধর্ম ব্যবসায়ীদের পরিচিতি ও হাক্বীক্বত (৪)
১২ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
১২ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১২ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)