হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (২৯)
, ১৪ ই জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২০ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ১৭ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ০২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফযীলত ও মর্যাদা:
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা এতই বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত ও মর্যাদা-মর্তবার অধিকারী যে, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদেরকে জিহাদের ময়দানে সার্বিকভাবে সাহায্য করেছেন এবং কাফিরদের সর্বাঙ্গে প্রচ-ভাবে আঘাত করার নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমার সম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন যে (হে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম!) আপনারা স্মরণ করুন, যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার পক্ষ থেকে আপনাদের স্বস্তি ও শান্তির জন্য আপনাদেরকে তন্দ্রাছন্ন করেন এবং আকাশ হতে আপনাদের জন্য বৃষ্টি বর্ষণ করেন। আর উক্ত বৃষ্টির পানি দ্বারা আপনাদেরকে পবিত্র করার জন্য এবং আপনাদেরকে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে হিফাযতের জন্য আপনাদের অন্তরকে সুদৃঢ় করার জন্য এবং আপনাদের পা স্থির রাখার জন্য। আর স্মরণ করুন, যখন আপনাদের রব তায়ালা হযরত ফেরেশতাদের প্রতি প্রত্যাদেশ করেন, আমি আপনাদের সাথে আছি। সুতরাং আপনারা (অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ) অবিচল থাকুন। অতিসত্ত্বর কাফিরদের অন্তরে আমি ভীতি সঞ্চার করবো। আপনারা তাদের (অর্থাৎ কাফিরদের) গর্দানে ও সর্বাঙ্গে প্রতি জোড়ায় জোড়ায় আঘাত করুন। ” (সূরা আনফাল শরীফ-১১-১২)
উক্ত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় “তাফসীরে মাযহারীতে” উল্লেখ আছে, “জিহাদের ময়দানে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে যে তন্দ্রাচ্ছন্নতা নেমে এসেছিল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি, ক্লান্ত-শ্রান্ত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের উপর সে তন্দ্রা দিয়ে, মহান আল্লাহ পাক তিনি কুদরতীভাবে জিহাদের ময়দানে উপস্থিত সকল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
দ্বিতীয়তঃ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, যে নিয়ামতটি প্রাপ্ত হয়েছিলেন তা ছিল বৃষ্টি। মহান আল্লাহ পাক তিনি দয়া করে, রহমত করে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমকে তৃপ্ত ও পবিত্র করার জন্য তথা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মর্যাদা প্রকাশ করার জন্য, আকাশ থেকে নাযিল করেছিলেন রহমতের বৃষ্টি আর এই নিয়ামতপূর্ণ বৃষ্টি বর্ষণের ফলে জিহাদের ময়দানের পুরো চেহারাই পাল্টে যায়। কাফির সৈন্যরা যে জায়গাটি দখল করেছিল তাতে বৃষ্টি হয় খুবই তীব্র এবং সারা মাঠ জুড়ে কাদা হয়ে গিয়ে চলাচলই দুস্কর হয়ে পড়ে।
পক্ষান্তরে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যেখানে অবস্থান করেছিলেন, সেখানে বালুর কারণে চলাচলে অসুবিধা হয়েছিল। মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরতে এখানে বৃষ্টি অল্প হয়। যাতে সমস্ত বালুকে বসিয়ে দিয়ে মাঠকে অতি সমতল ও চলাচলের জন্য আরামদায়ক করে দেয়া হয়। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখিত আয়াত শরীফে এ দু’টি বিশেষ নিয়ামতের কথাই বলা হয়েছে। (১) তন্দ্রা ও (২) বৃষ্টি। যাতে বদলে যায় জিহাদের ময়দানের রূপ আর সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “আমার সম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন যে (হে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম!) আপনারা স্মরণ করুন, যখন মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আপনাদের স্বস্তি ও শান্তির জন্য আপনাদেরকে তন্দ্রাছন্ন করেন এবং আকাশ হতে আপনাদের জন্য বৃষ্টি বর্ষণ করেন। আর উক্ত বৃষ্টির পানি দ্বারা আপনাদেরকে পবিত্র করার জন্য এবং আপনাদেরকে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে হিফাযতের জন্য আপনাদের অন্তরকে সুদৃঢ় করার জন্য এবং আপনাদের পা স্থির রাখার জন্য। ”
অতএব, উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটাই প্রমাণিত হলো যে, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে জিহাদের ময়দানে সার্বিকভাবে সাহায্য করেছেন, দয়া করেছেন, রহমত করেছেন। সুতরাং যদি তাই হয়, তাহলে এত বেমেছাল সাহায্যপ্রাপ্ত, দয়া প্রাপ্ত, রহমত প্রাপ্ত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমালোচনা করা কি করে জায়িয হতে পারে? মূলত: তা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। (চলবে)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (১০)
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
গ্রীনিচকে ০ (শূন্য) ডিগ্রি দ্রাঘিমায় ধরে মূল মধ্যরেখা স্থির করার কোন ঐতিহাসিক গুরুত্ব নেই: পবিত্র কা’বা শরীফ উনার অবস্থান ০ (শূন্য) ডিগ্রি ০ (শূন্য) মিনিট ০ (শূন্য) সেকেন্ড ডিগ্রি দ্রাঘিমা ধরে ১৫ ডিগ্রি অন্তর অন্তর সময় অঞ্চলে ভাগ করাই সর্বোত্তম (৩)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
গ্রীনিচকে ০ (শূন্য) ডিগ্রি দ্রাঘিমায় ধরে মূল মধ্যরেখা স্থির করার কোন ঐতিহাসিক গুরুত্ব নেই: পবিত্র কা’বা শরীফ উনার অবস্থান ০ (শূন্য) ডিগ্রি ০ (শূন্য) মিনিট ০ (শূন্য) সেকেন্ড ডিগ্রি দ্রাঘিমা ধরে ১৫ ডিগ্রি অন্তর অন্তর সময় অঞ্চলে ভাগ করাই সর্বোত্তম (২)
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)