হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বদ মাযহাব, বদ আক্বীদা ও বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (৯)
, ২১ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফযীলত ও মর্যাদা:
পবিত্র হাদীছ শরীফে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান, মর্যাদা-মর্তবা সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে, “হযরত আবূ বুরদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে, তিনি উনার পিতা হযরত আবূ মূসা আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আকাশের দিকে নূরুল হুদা মুবারক (মাথা মুবারক) উঠালেন। আর অনেক ক্ষেত্রেই মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আকাশের দিকে নূরুল হুদা মুবারক (মাথা মুবারক) উঠাতেন। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, তারকাগুলো আকাশের জন্য নিরাপত্তা স্বরূপ। যে দিন এ তারকাগুলো অস্ত যাবে সেদিন আকাশে তাই সংঘটিত হবে, যার ওয়াদা পূর্বেই দেয়া হয়েছে। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আমি হলাম আমার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের জন্য নিরাপত্তা স্বরূপ। সুতরাং যখন আমার বিছাল মুবারক হবে তখন আমার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে তাই সংঘটিত হবে, যার ওয়াদা পূর্বেই দেয়া হয়েছে। অতঃপর আমার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা হলেন আমার উম্মতের জন্য নিরাপত্তা স্বরূপ। যখন আমার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা চলে যাবেন তখন আমার উম্মতের উপর তাই নেমে আসবে যার ওয়াদা পূর্বেই দেয়া হয়েছে। (অর্থাৎ বিদয়াত, বেশরা’ ইত্যাদি কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাবে)।
উপরোক্ত হাদীছ শরীফ দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা হলেন উম্মতের আমানত স্বরূপ। সুতরাং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যেখানে উম্মতের জন্য আমানত স্বরূপ সেক্ষেত্রে উম্মতের জন্য কি করে সম্ভব, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমালোচনা করা, দোষারোপ করা? আফসুস তাদের জন্য! যারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমালোচনা করে, দোষারোপ করে। অথচ উম্মতদেরকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের জন্য দুয়া করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাই উম্মতদের উচিত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের জন্য বেশি বেশি করে দুয়া করা। যেমন, “ছহীফায়ে কামিলা” কিতাবে উল্লেখ আছে, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা ইমামুর রাবি’ হযরত ইমাম যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট এভাবে দুয়া করতেন। “আয় মহান আল্লাহ পাক! আপনি খাছ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সকল ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের উপর রহমত নাযিল করুন। যারা ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অতি উত্তম ছাহাবী। এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক করার ব্যাপারে যারা ছিলেন অতি উত্তমরূপে পরীক্ষিত। যারা খুলূছিয়াতের সাথে একনিষ্টভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে নিয়োজিত ছিলেন। আর যারা ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট খবর পৌঁছানোর ব্যাপারে এবং ইসলামের প্রচারের ব্যাপারে অগ্রগামী কাফিলা মুবারক। মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সামনে রিসালাত মুবারকের প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন, তখনই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা আনুগত্যের সাথে কবুল করেছেন। তাওহীদ এবং রিসালাত মুবারককে বুলন্দ করার জন্য হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অনেক ত্যাগ শিকার করেছেন, উনাদের মাল-সম্পদ, পরিবার-পরিজন এবং সবশেষে কুরবান করেছেন নিজের জীবনকেও। শুধু তাই নয়, যারা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতে নিজের পিতা, সন্তান এবং ভাইয়ের বিরুদ্ধেও জিহাদ করেছেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উছীলায় উনারা লাভ করেছেন বিজয়, সাফল্য। (তাফসীরে মাযহারী)
অতএব, উম্মতে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের জন্য উচিত সদাসর্বদা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি হুসনে যন বা সুধারণা রাখা এবং দুয়া করা। এমনকি উম্মতে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন অবস্থাতেই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমালোচনা করবে না, দোষারোপ করবে না এবং উনাদের প্রতি বিরূপ ধারণা বা বিদ্বেষ পোষণ করবে না। শুধু তাই নয় বরং কস্মিনকালেও যেন অন্তরের মধ্যেও বিরূপ ধারণা ও বিদ্বেষভাব পয়দা না হয় সেজন্য সদাসর্বদা অর্থাৎ দায়িমীভাবে দুয়া চাইবে মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে। কারণ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের যে মর্যাদা ও মর্তবা রয়েছে তা পরবর্তী উম্মত কল্পনাও করতে পারবে না।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য যা আবশ্যিকভাবে করণীয়
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)