হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সকল সচ্ছলতার মালিক- একটি আকলী দলিল
, ০৯ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৬ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৯ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
একদিন হযরত রাবেয়া বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহা উনার কাছে দু’জন দরবেশ এলেন। মেহমানদারী করারও প্রয়োজন কিন্তু ঘরে ছিল মাত্র ২টা রুটি। তিনি দু’জন দরবেশকে তা পরিবেশনও করলেন। উনারা যখন খাদ্য গ্রহণ করতে যাবেন, তখন একজন সুওয়ালকারী বা ভিক্ষুক এলো। তিনি দরবেশ উনাদের পাত থেকে রুটি দুটো তুলে নিয়ে দিয়ে দিলেন সেই সুওয়ালকারীকে। দরবেশ দু’জন একটু অবাক হলেন বটে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর একজন মহিলা খাঞ্চা ভর্তি খাবার নিয়ে এলেন রুটিসহ। হযরত রাবেয়া বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহা তিনি গুনে দেখলেন ১৮টি রুটি। তিনি বললেন এই খাবার আমার নয়। আপনি হয়তো ভুলে অন্য কারো খাবার নিয়ে এসেছেন। আসলে সে মহিলাই দুটো রুটি লুকিয়ে ফেলেছিলো। পরে সেই মহিলা পুনরায় ২০টি রুটি নিয়ে এলো।
তিনি বললেন যে- আমি জানি, মহান আল্লাহ পাক তিনি একে দশ দান করেন- যেহেতু আমি দুটো রুটি দিয়েছি তাহলে ২০টি আসার কথা। আর দরবেশ দু’জনের জন্য মাত্র ২টি রুটি তিনি যথার্থ মনে করছিলেন না। তাই তিনি দান করে দিয়েছিলেন। এখন এখান থেকে যে বিষয়টি ফিকিরের তা হচ্ছে-
তিনি পরিপূর্ণভাবে বিশ্বাস রাখতেন যে- মহান আল্লাহ পাক উনার ওয়াদা কখনো ব্যতিক্রম হবে না। আর তাই তিনি সেই পদ্ধতি ব্যবহার করে খাবারের ব্যবস্থা করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
আমরা জানি, এই ইয়াক্বীন আসে অন্তরের ইছলাহর সঙ্গে। যিনি যত ইছলাহ প্রাপ্ত উনার ইয়াক্বীন তত গভীর হবে এবং এটাই স্বাভাবিক।
আমরা জানি, পৃথিবীর সকল মানুষ দুই শ্রেণীভুক্ত। (ক). হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা পবিত্র হয়েই সৃষ্টি হয়েছেন। (খ). দ্বিতীয় শ্রেণী যাদের ইছলাহর প্রয়োজন রয়েছে।
আবার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক ওজুদ পাক উনার সঙ্গে সম্পর্কিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে নাযিলকৃত সকল পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের জন্যও প্রযোজ্য। সুবহানাল্লাহ!
অর্থাৎ উনারাই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ধারক-বাহক এবং সম্মানিত শরীয়ত উনার প্রণেতা। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উল্লেখ্য, একে যে কমপক্ষে দশ আসে তা তো উনারাও জানতেন।
আবার বলা হয়, দানের ক্ষেত্রে ১-এ ৭০০ এবং অন্তরের বিশুদ্ধতা অনুযায়ী ৭ হাজার, ৭ লক্ষ, ৭ কোটি এভাবে বাড়তে থাকে। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে যাঁরা পবিত্র হয়েই সৃষ্টি হয়েছেন উনাদের কোনো আমলের প্রতিদান হিসেবে কতগুণ দেয়া হবে এটা কি মানুষ ভাবতে পারে? কখনোই পারে না।
তাহলে উনারা সবসময় বাতাসের গতির চেয়েও দ্রুত বেগে মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করে দিতেন। ফলে উনাদের সেই দানের বিনিময়ে কেমন প্রতিদান আসতো, তা মানুষ উপলব্ধিই করতে পারবে না, তাহলে উনারা আবার গরিব থাকেন কি করে। নাউযুবিল্লাহ! বরং এত পরিমাণ আসতো যে তা বোঝানোর জন্য ইরশাদ মুবারক করা হয়েছিলো- “যদি আপনি চান তাহলে ওহুদ পাহাড় পরিমাণ সোনা আপনার ক্বদম মুবারক উনার পিছনে পিছনে চলবে। ” সুবহানাল্লাহ!
অর্থাৎ উনাদের দানের প্রতিদান ছিলো অপরিসীম। কিন্তু সেই প্রতিদানকে উনারা গ্রহণ করতেন ভিন্নভাবে।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- ফক্বর আমার ফখর অর্থাৎ এই সব ধন সম্পদ দানের বিনিময়ে আরো অঢেল যা কিছু প্রতিদান হিসেবে আসুক, এমনকি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণও যদি হয়, তা কিন্তু আমার কাম্য নয়; বরং মহান আল্লাহ পাক উনার মোহতাজই আমাদের ফখর।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা মালিক শ্রেণীর। উনারা প্রতিদান নেন না, বরং দেন। উনাদের দানের কারণে, ইহসানের কারণেই হযরত রাবেয়া বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহা তিনি দানের গুণ পেয়েছিলেন।
-আল হিলাল।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)