মন্তব্য কলাম
স্বাধীনতা উত্তর এ পর্যন্ত কখনও জাতীয় চৈত্র সংক্রান্তি দিবস ঘোষণা করা হয়নি। এমনকি অন্তবর্তী সরকারের ২০২৫ সালের জাতীয় দিবস ঘোষণার পরিপত্রেও তা ছিলো না। হঠাৎ করে ৯ই এপ্রিল জাতীয় চৈত্র সংক্রান্তি দিবস ঘোষণা হলো কিভাবে? মাদরাসায় চৈত্র সংক্রান্তি পালনের নির্দেশের অর্থ হলো মুসলমানদের ইসলাম ত্যাগ করার নির্দেশ। মুসলমানদের হিন্দু ও উপজাতি হওয়ার নির্দেশ। মুসলমানদের হরেক রকমের পূজা করার নির্দেশ।
চৈত্র সংক্রান্তির ইতিহাস ও বিশ্বাস না জেনে সরকার এ রকম কুফরী নির্দেশ মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দেয় কি করে? যে কোন নববর্ষ পালনই হারাম- এ হারাম কাজে মাদরাসাকে বাধ্য করে কিভাবে? আর তথাকথিত ইসলামী মহল নিঃশ্চুপ থাকে কি করে? (২য় পর্ব)
, ১৬ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৬ হাদি আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ১৫ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রি:, ২ বৈশাখ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মন্তব্য কলাম

বাংলাদেশে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপন /পালনের পরিপত্র ২০২৫- ঘোষণা অনুযায়ী এপ্রিল মাসের জাতীয় দিবসের তালিকায় ১৩ই এপ্রিল বা জাতীয় চৈত্র সংক্রান্তি বিষয়ক কোনো তারিখের উল্লেখ নাই।
স্বাধীনতা উত্তর এ পর্যন্ত কখনও জাতীয় চৈত্র সংক্রান্তি দিবস ঘোষণা করা হয়নি। এমনকি অন্তবর্তী সরকারের ২০২৫ সালের জাতীয় দিবস ঘোষণার পরিপত্রেও তা ছিলো না। হঠাৎ করে ৯ই এপ্রিল জাতীয় চৈত্র সংক্রান্তি দিবস ঘোষণা হলো কিভাবে?
আইন প্রণয়ন, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা রাষ্ট্রের মৌলিক কাজ। দেশের প্রধান বিচারকের নেতৃত্বে জুডিশিয়াল কাউন্সিল, সুপ্রীম কোর্ট, হাইকোর্ট, জজ কোর্ট প্রভৃতি বিচারালয়ের মাধ্যমে দেশের সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা গড়ে তোলা রাষ্ট্রের আবশ্যিক কাজের মধ্যে পড়ে।
কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ, তাদের কর্ম বণ্টন ও নির্দেশ, কাজ তদারক এবং পরিচালনা রাষ্ট্রের বাধ্যতামূলক দায়িত্ব। অর্থ ও সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, রাষ্ট্র পরিচালনায় অর্থ সংগ্রহ ও বণ্টন ব্যবস্থা গড়ে তোলা রাষ্ট্রের একটি মুখ্য কাজ। কিন্তু একটা তথাকথিত সংস্কৃতি রাষ্ট্রীয়ভাবে জনগনের উপর চাপিয়ে দেয়া রাষ্ট্রযন্ত্র বা সরকারের কাজ নয়।
অথচ সরকারের পক্ষ থেকে এমন সব বক্তব্য বিবৃতি দেয়া হয়েছে যাতে প্রতিভাত হয়েছে- জোর করে খাছ হিন্দু ধর্ম বিশ্বাস ও পূজা পালনের চৈত্র সংক্রান্তি এবং পহেলা বৈশাখের সংস্কৃতি মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। (ছবি সংযুক্ত)
লক্ষ্যণীয় এখানে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা গারো ও অন্যান্য উপজাতির নববর্ষ উদযাপনকে মুসলমানদের দ্বীন ইসলাম শিক্ষার প্রতিষ্ঠান মাদরাসা এবং ছাত্র-শিক্ষকদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।
অথচ পবিত্র হাদীছ শরীফ মোতাবেক কোন মুসলমান কোনো অমুসলিমের আক্বীদা বিশ্বাস আচার-আচরণ অনুষ্ঠান ইত্যাদি করতে পারে না এবং করলে মুসলমান থাকতে পারে না।
প্রসঙ্গত বলতে হয়, বর্তমানে রাষ্ট্রযন্ত্রে যারা ক্ষমতাসীন রয়েছে তারা সবাই স্বীকার করবে যে, সমাজের ব্যাপকতা ও শক্তিমত্তা; রাষ্ট্রের চেয়ে বেশি। পাশাপাশি তাদের এ ধ্রুবসত্যও গ্রহণ করতে হবে, মানতে হবে, স্বীকার করতে হবে যে ধর্ম বা দ্বীন ইসলামের ক্ষমতা রাষ্ট্রতো বটেই বরং সমাজের চেয়েও অনেক অনেক বেশি। রাষ্ট্র ব্যর্থ হতে পারে, সমাজ বিপর্যস্থ হতে পারে, সামাজিক রীতিনীতিও পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু দ্বীন ইসলামের কোনো পরিবর্তন হতে পারেনা। আর রাষ্ট্রের সংবিধান শুধু বার পরিবর্তনই হয়না বরং নতুন করে প্রণয়নও হয় কিন্তু দ্বীন ইসলামের কোনো পরিবর্তন নেই। কারণ দ্বীন ইসলাম হলো সব সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে উনার হাবীব আখেরি রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ওহীর মাধ্যমে নাযিলকৃত দ্বীন। আর সম্মানিত ওহীর কোনো পরিবর্তন নেই। সুবহানাল্লাহ! যারা সম্মানিত ওহীর পরিবর্তন করতে চায় এবং করে তারা কাদিয়ানী। নাউযুবিল্লাহ!
সঙ্গতকারণেই এখন বলতে হয় যারা মুসলমান দাবী করেন বা যারা নিজেদের মুসলমান মনে করেন সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ভিত্তিতে হিন্দুদের পূজা-পার্বন চৈত্র সংক্রান্তি তো নয়ই এমনকি তারা পহেলা বৈশাখ পালন করতে পারেনা। কারণ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম তা বহুবিধ কারণে সমর্থন করেনা। বরং ইসলামী শরীয়ত পহেলা বৈশাখ উদযাপনকে কাট্টা হারাম হিসেবে অভিহিত করে।
প্রসঙ্গত, নতুন বছরের প্রথম দিন বা নওরোজ পালন করা সম্মানিত দ্বীন ইসলামে সম্পূর্ণ হারাম। দ্বীন ইসলাম পূর্বযুগে পবিত্র মদীনা শরীফেও নওরোজ অনুষ্ঠানের প্রচলন ছিল। আখেরী রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা বাতিল বা হারাম ঘোষণা দিয়েই ঈদুল ফিতর এর প্রবর্তন করেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
দ্বিতীয়ত; উল্লেখ্য পহেলা বৈশাখ হাজার বছরের বাঙালী সংস্কৃতি নয়। এ কথা সত্য, সম্রাট আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদযাপন শুরু হয়। সুতরাং তা হাজার বছরের ইতিহাস নয় বরং মাত্র ৪৬৫ বছর আগের। ঐতিহাসিক তথ্যমতে, হিন্দুদের মনোরঞ্জনার্থে হিজরী সনকে বাদ দিয়ে এই ফসলী সনের সূচনা হয়।
আরো উল্লেখ্য, কথিত গণতন্ত্রে কোনো দেশেই লোকজ সংস্কৃতি সার্বজনীন হয়না। কারণ সংস্কৃতির মূল উপাদান ধর্ম। কাজেই ভিন্ন ধর্মের আঙ্গিকে সংস্কৃতিও ভিন্ন। আজকে যখন সার্বজনীন সংস্কৃতি বলা হয় তখন মূলত মিথ্যাচার করা হয়। যেমন করা হচ্ছে পহেলা বৈশাখে। কোনো ধর্মপ্রাণ মুসলমানই পহেলা বৈশাখ পালন করেনা। যেটা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ওলামা লীগও উচ্চারণ করেছে ‘ইসলামে পহেলা বৈশাখ জায়েজ নেই’। তারপরেও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মতামতকে না যাচাই করেই প্রচার করা হচ্ছে এটা সার্বজনীন উৎসব। সেদিন দুরে নয় যেদিন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিবে। মূলত যারা এসব কথা বলে তাদের দুনিয়াবী জ্ঞানও নেই। কারণ বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ আমেরিকার ক্ষেত্রে প্রচার করা হয় বহুভাষী, বহুধর্মী, বহুসংস্কৃতির দেশ। সেখানে বাংলাদেশ সরকার ও মিডিয়া পহেলা বৈশাখকে সার্বজনীন বলে উপজাতিদেরও বাংলাদেশীদের সাথে এক করে এবং হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের মিলিয়ে গর্ববোধ করে কীভাবে?
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান আরিফ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
এদেশবাসী- পাকিস্তানী রাজাকারদের কথা শুনেছে। কিন্তু উপজাতি সন্ত্রাসীরা বৃটিশ আমল, পাকিস্তানী আমল এবং বর্তমান স্বাধীন বাংলাদেশেও রাজাকারগিরি করছে। গত ২১শে এপ্রিল সন্তু লারমার নাতি জাতিসংঘ অধিবেশনে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে চরম ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য দিয়েছে
২৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সংবিধান, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিরোধী আপত্তিকর শব্দ প্রকাশের বিপরীতে মহান আল্লাহ পাক উনার ‘কুদরত’ ও ‘রহমত’ এ ছিফত মুবারক দ্বয়ের ব্যাপক প্রচলন ঘটাতে হবে
২৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম অন্যান্য ধর্মের সাথে সমমর্যাদার ভিত্তিতে সহাবস্থানে থাকতে পারে না। পবিত্র দ্বীন ইসলাম কখনোই কথিত ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’র অধীন হতে পারে না।
২৫ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছাত্র জনতার সরকার দাবী করে- আপনাদের বহুল উচ্চারিত সংস্কারের জন্য আপনারা গুটি কতক রাজনৈতিক দলগুলোর উপরই আবদ্ধ আছেন কেন? সংস্কারের জন্য জনতার এবং জনমতের প্রতি আপনাদের দৃষ্টি নেই কেনো?
২৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার আলোকে- সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বেমেছাল ফযীলত মুবারক বর্ণনা
২৩ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছাত্ররা চেয়েছিলো ‘কোটা’ আর জনতা চেয়েছিলো ‘তাগুত হাসিনা’র পতন। এই চেতনায়ই হয়েছিলো জুলাই গণঅভ্যূথান। ৫ই আগষ্টের আগে ছাত্র-জনতার দাবীতে কোন সংস্কারের কথা ছিল না। সংস্কারের কোনো প্রচারণা বা ঘোষণা ছিল না। অন্তর্বর্তী সরকার গণমানুষের গণসমর্থন ছাড়াই সংস্কারের নামে মরীয়া। কিন্তু কেনো?
২২ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
গাজায় যেখানে শিশুদেরও একবেলা খাবারেরও নিশ্চয়তা নাই প্রতি মুহুর্তেই মুহুর্মুহু বোমায় ঝলসে যাচ্ছে গাজাবাসী যেখানে সৌদি আরবে হচ্ছে ডিজে পার্টি আর কাতারে হচ্ছে আতশ বাজি প্রদর্শনী
২১ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
“ইসলামী বিশেষজ্ঞ মহল এবং ইসলামী মিডিয়ার মতে- বর্তমান বহুত্ববাদী সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের ইসলাম ও মুসলমান বিরোধী মনোভাবই পালন এবং ধারন বাস্তবায়ন করে চলছে
২০ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাগরের বুকে তৈরি হচ্ছে নতুন বাংলাদেশ অনেক বেড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের আয়তন খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র পরিক্রমায় চললে বাংলাদেশ এত বড় হতে পারে যে বর্তমান ৪০ থেকে ৫০ কোটি জনসংখ্যার পরও বাংলাদেশেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কাজের জন্য লোক আসবে ইনশাআল্লাহ!
১৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পৃষ্ঠপোষকতার অভাব ও অবমূল্যায়নের কারণে দেশ ছাড়ছে মেধাবী বিজ্ঞানীরা। অথচ তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে মূল্যায়নে বাংলাদেশ হতে পারে তথ্য-প্রযুক্তিসহ সকল খাতে এশিয়ার সুপার পাওয়ার। দেশের গবেষক-বিজ্ঞানীদের মূল্যায়ন না করলে দেশ কোনোসময়ই উন্নত হবেনা, আর উন্নয়নের দাবীও করা যাবেনা।
১৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পৃষ্ঠপোষকতার অভাব ও অবমূল্যায়নের কারণে দেশ ছাড়ছে মেধাবী বিজ্ঞানীরা। অথচ তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে মূল্যায়নে বাংলাদেশ হতে পারে তথ্য-প্রযুক্তিসহ সকল খাতে এশিয়ার সুপার পাওয়ার। দেশের গবেষক-বিজ্ঞানীদের মূল্যায়ন না করলে দেশ কোনোসময়ই উন্নত হবেনা, আর উন্নয়নের দাবীও করা যাবেনা।
১৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
১৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)