স্তম্ভবিহীন নান্দনিক মসজিদ
, ১৮ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৯ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ০৮ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ২৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) স্থাপত্য নিদর্শন
স্বাধীনতার আগে প্রতিষ্ঠিত মসজিদটি দেশের সবচেয়ে বড় স্তম্ভবিহীন মসজিদ হিসেবে খ্যাত। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা শ্রমিক ও কর্মচারীদের সুবিধার্থে কেপিএম এলাকায় ১৯৬৭ খৃ: এটি নির্মাণ করা হয়। পরিচালনা কমিটির তথ্যমতে, ১৩ হাজার বর্গফুটের এই মসজিদে একসঙ্গে চার হাজার মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
১৯৫৯ খৃ: পাকিস্তানের দাউদ গ্রুপ কর্ণফুলী পেপার মিলের (কেপিএম) দায়িত্ব নেওয়ার পর মসজিদটি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১৯৬৭ খৃ:র ৮ ডিসেম্বর কেপিএমের আবাসিক এলাকায় মসজিদটির ভিত্তি স্থাপন করেন দাউদ গ্রুব অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান আহমেদ দাউদ এইচ কে।
মসজিদটির নির্মালশৈলীতে মুসলিম ঐহিত্যের বিভিন্ন নিদর্শন রয়েছে। তবে যে কারণে এটি সবার কাছে বেশি আকর্ষণীয় তা হচ্ছে মসজিদের চার দেয়াল ছাড়া মাঝে আর কোনও স্তম্ভ নেই। মসজিদের তিন পাশে রয়েছে ২৩টি জানালা, ৯টি দরজা। এ ছাড়াও মসজিদের উত্তর—দক্ষিণ ও পূর্ব দিক দিয়ে প্রবেশপথ রয়েছে।
সচরাচর দালান নির্মাণে সমান ছাদ ব্যবহার করা হলেও এটি নির্মাণে বিম থেকে আড়াআড়িভাবে ঢেউটিন আকৃতিতে ছাদ তৈরি করা হয়েছে। ধারণা করা হয় এই কারণে ছাদের চাপ কমে যাওয়ায় স্তম্ভের প্রয়োজন পড়েনি।
অনেক বড় বড় মসজিদে স্তম্ভের কারণে ইমামকে সরাসরি দেখা যায় না। তবে এই মসজিদে মুসুল্লিরা যেখানেই দাঁড়ান না কেন প্রত্যেকেই খতিব কিংবা ইমামকে দেখতে পান। এতে প্রাকৃতিক বাতাস প্রবেশের পথও আছে। তাই ভেতরটা বেশ শীতল থাকে।
মসজিদের ভেতর কাঠের ফ্রেমের ওপর হার্ডবোর্ড দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সিলিং। রয়েছে বারান্দাসহ ১৭টি কাতার। প্রতিটি কাতারে অনায়াসে দাঁড়াতে পারেন দুই শতাধিক মুসুল্লি। বিশাল এই মসজিদে দৃষ্টিনন্দন ঝাড়বাতি রয়েছে ৩৮টি।
মসজিদটি যুগযুগ ধরে অনেক ঐতিহ্য, ইতিহাসের সাক্ষী বহন করছে বলে জানান স্থানীয়রা। মসজিদ নির্মাণের একজন প্রতক্ষদর্শী জানান, মসজিদ নির্মাণে নির্মাণসমাগ্রী আনা হয়েছিল করাচি থেকে। পুরো এক বছর লেগেছে নির্মাণ শেষ করতে। এটি নির্মাণে কাজ করেছেন ভারতের প্রকৌশলীরা।
আরেক মুসুল্লি বলেন, আমি পবিত্র জুমায়ার নামাজ আদায়ের জন্য প্রতি শুক্রবার এখানে আসি। এ মসজিদের যে কোনও প্রান্তে বসে আপনি ইমামের কথা শুনতে ও তাকে দেখতে পাবেন।
স্বাধীনতার পর মসজিদটির পরিচালনার দায়িত্ব পায় কেপিএম কর্তৃপক্ষ। কালের বির্বতনে মসজিদটি হারিয়েছে জৌলুস। এখন ঋণের ভারে জর্জরিত কেপিএম। যার প্রভাব পড়েছে মসজিদেও। মিল কর্তৃপক্ষ মসজিদের জন্য সরাসরি কোনও সহযোগিতা করতে না পারলেও একটি পরিচালনা কমিটি করে দিয়েছে। আপাতত স্থানীয়দের দানেই চলছে ঐতিহ্যবাহী মসজিদটির কার্যক্রম।
ইতোমধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে মসজিদের দেয়ালে। বৃষ্টির পানির ঢোকে। কোথাও ঝরে পড়েছে সিলিং। মসজিদটির দ্রুত সংস্কারের দাবি জানালেন এর মুয়াজ্জিন ও পেশ ইমাম।
মসজিদটির মৌলিকতা ধরে রেখে সংস্কার ও মসজিদটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে মসজিদ কমিটি।
কেপিএম জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এটি পিলার বিহীন ঐহিত্যবাহী একটি মসজিদ। মসজিদটির সংস্কারে উদ্যোগ নিলেও স্থানীয় প্রকৌশলীদের দিয়ে তা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সরকারে দৃষ্টি আকর্ষণ করবো যেন এটিকেও ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
যার এক মাথা বাংলাদেশে অপর মাথা ত্রিপুরার আগরতলায়!
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
গৌরবের স্মারক: হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক মসজিদ
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৯)
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৭)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হাজীগঞ্জ দুর্গ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৬)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সুনামগঞ্জে কালের সাক্ষী শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী পাগলা বড় মসজিদ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
৫০০ বছরের ঐতিহাসিক নিদর্শন বাঘা শাহী মসজিদ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৫)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৩)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)