সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (১৩)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ০৭ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৮ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ০৪ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার খিদমত মুবারকের আঞ্জাম:
মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মা’রিফাত-মুহব্বত, সন্তুষ্টি, রেযামন্দি, তায়াল্লুক-নিছবত হাছিলের জন্য শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার খাছ ফায়িয-তাওয়াজ্জুহ দরকার। উনার অন্তর নিংড়ানো দোয়া আবশ্যক। যেদিন সেই অন্তর নিংড়ানো খাছ দোয়া পাবে, ফায়িয-তাওয়াজ্জুহ লাভ হবে সেদিনই মা’রিফাত, মুহব্বত, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি, তায়াল্লুক নিছবতের দ্বার খুলে যাবে।
আর সেই খাছ-ফায়িয-তাওয়াজ্জুহ ও আন্তরিক দোয়া শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার খিদমত মুবারকে আঞ্জাম দানের মাধ্যমে লাভ হয়। পূর্ববর্তী হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের জীবনী মুবারকে সেটাই দেখা যায়। ইতিহাস যার উজ্জল স্বাক্ষর ধারণ করে আজ দাঁড়িয়ে আছে। জান, মাল, সময়, শ্রম সবকিছু দিয়েই অতীব গুরুত্ব ও মুহব্বতের সাথে নিরলসভাবে শায়েখ উনার খিদমত মুবারকে আঞ্জাম দিতে হবে। কোন দিক থেকে কোন রকম ত্রুটি করা যাবে না। এটাই মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের শিক্ষা। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَتُجَاهِدُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ.
অর্থ: “তোমরা তোমাদের মাল-সম্পদ ও জান দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় (উনাকে পাওয়ার জন্য) মুজাহাদা বা কোশেশ করো। এটা তোমাদের জন্য অতি উত্তম ব্যবস্থা, যদি তোমরা তা বুঝতে পারো। (পবিত্র সূরা ছফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সুদীর্ঘ প্রায় সাড়ে ২০ বছর অতীব গুরুত্ব ও মুহব্বতের সাথে উনার শায়েখ শায়খুল উলামা ওয়াল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খিদমত মুবারকে আঞ্জাম দিয়েছেন। কখনো কোন প্রকার গাফলতি বা ত্রুটি করেননি।
তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আনিসুল আরওয়াহতে উল্লেখ করেন, স্বীয় শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার ছোহবত এবং খিদমত মুবারক অতি উঁচু স্তরের ইবাদত-বন্দেগীর মধ্যে গণ্য। আমি “মা’রিফাতুল মুরীদীন” কিতাবে দেখেছি এবং আমার সম্মানিত শায়েখ-মুর্শিদ শায়খুল উলামা ওয়াল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার যবান মুবারকে শুনেছি। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি নিজের শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার খিদমত করে মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত জান্নাত উনার মধ্যে তাকে এক হাজার বালাখানা দান করবেন। প্রত্যেক বালাখানায় একজন করে হুর থাকবে। ক্বিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তি বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং এক হাজার বছরের ইবাদত তার আমলনামায় লিখা হবে। সুবহানাল্লাহ!
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, কুতুবুল বাররি ওয়াল বার্হ, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন, “মুরীদের উচিত স্বীয় শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার প্রত্যেক কথা ও কর্মের উপর খেয়াল রাখা। তিনি যা কিছু আদেশ মুবারক করেন তা অত্যন্ত পবিত্র অন্তকরণে পালন করা। শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার খিদমত মুবারকে যথাসম্ভব আঞ্জাম দেয়া। অতঃপর তিনি বললেন, অতীতে একজন জাহিদ ছিলেন। তিনি একাধারে এক হাজার বছর ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-ফিকির করেছেন। এক মুহূর্তের জন্য যিকির-ফিকির থেকে গাফিল থাকেননি। যে ব্যক্তি উনার যিয়ারতের জন্য যেতেন তিনি সেই ব্যক্তিকে নছীহত মুবারক করতেন যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ.
অর্থ: “আমি জ্বিন ও ইনসানকে একমাত্র আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি।” (পবিত্র সূরা যারিয়াত শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)
অতএব হে প্রিয় ভাইগণ! আমাদের উচিত দিন-রাত মহান আল্লাহ পাক উনার মা’রিফাত-মুহব্বত হাছিলের জন্য নিজেকে সর্বদা মশগুল রাখা। উনার যিকির-ফিকিরে সবসময় মশগুল থাকা। অনেকদিন অতিবাহিত হয়েছে। সেই জাহিদ ব্যক্তি বিছাল শরীফ গ্রহণ করেছেন। লোকজন উনাকে স্বপ্নে, মোরাকাবায় দেখে জিজ্ঞাসা করলো, মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছেন?
তিনি জাওয়াব দিলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
পূনরায় জিজ্ঞাসা করা হলো। আপনার কোন আমল মহান আল্লাহ পাক তিনি কবুল করেছেন? তিনি বললেন, আমার কোন আমলই কাজে আসেনি। শুধু আমার নছীহত যা আমি মানুষদেরকে দান করতাম, সেটাই আমাকে ক্ষমা করিয়েছে। আর সবচেয়ে বড় ইনাম (পুরস্কার) পেয়েছি আমার শায়েখ ও মুর্শিদ ক্বিবলা উনার মুবারক খিদমত করার জন্য। আমাকে বলা হলো- আপনি আপনার শায়েখ উনার খিদমতে কার্পণ্য করেননি। যার জন্য আপনাকে ক্ষমা করে কবুল করে হলো। (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)