সিসি ক্যামেরা স্থাপিত মসজিদগুলো মসজিদে দ্বিরারের অন্তর্ভুক্ত
, ১৮ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৭ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ০৬ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ২২ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সিসি টিভি ক্যামেরা এর পূর্ণরূপ হচ্ছে- ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। এটি মূলতঃ সচল অবস্থায় সবসময় ভিডিও ধারণ করতে থাকে। এতে মেমোরি থাকার কারণে ভিডিও ধারণ করার সাথে সাথে তা সংরক্ষণও করে রাখতে পারে।
সি সি ক্যামেরার মুলই হচ্ছে ছবি। আর যেখানে ছবি থাকে সেখানে রহমতের ফেরেস্তা প্রবেশ করেননা। সে স্থানটি হয় রহমত শুন্য, বরকতহীন। পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
لاتدخل الملائكة بيتا فيه كلب ولا صورة ـ
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ঘরে কুকুর ও প্রাণীর ছবি থাকে সে ঘরে ফেরেস্তা আলাইহিমুস সালাম প্রবেশ করেননা। অর্থাৎ সে স্থানটি রহমত শুন্য, বরকতহীন।
আর যে স্থানে প্রাণীর ছবি থাকে সে স্থানে নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী। আর নামাযে মাকরূহ তাহরীমী হলে নামায দোহরানো বা পুনরায় আদায় করা ওয়াজিব।
তাছাড়া যেস্থানে গেলে কবীরা গুনাহ হয় সেস্থানে যাওয়া যায়েজ নেই। কারণ, কবীরা গুনাহ্ থেকে বেঁচে থাকা ফরয। পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
كل مصور فى النارـ
অর্থ: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যারা প্রাণীর ছবি তোলে বা তোলায়, আঁকে বা আঁকায় তারা প্রত্যেকেই জাহান্নামী। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
ان اشد الناس عذابا عند الله يوم القيامة المصورون ـ
অর্থ: যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা তোলায়, আঁকে বা আঁকায় কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে কঠিন শাস্তি দিবেন। (বুখারী শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن أبي سعيد الخدري رضي الله عنه قال : سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول من رأى منكم منكرا فليغيره بيده ، فإن لم يستطع فبلسانه ، فإن لم يستطع فبقلبه ، وذلك أضعف الإيمان) رواه مسلم.)
অর্থ: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা কোথাও কোন গুনাহের কাজ সংগঠিত হতে দেখলে হাত দিয়ে বাধা দিও। যদি তাতে অক্ষম হও তাহলে মুখ দিয়ে বাধা দিও। যদি তাতেও অক্ষম হও তাহলে অন্তর দিয়ে ঘৃণা করে সেখান থেকে সরে যেও। আর এটা হচ্ছে সম্মানিত ঈমানের সবচেয়ে নিম্নতর স্তর। (মুসলিম শরীফ)
কাজেই, পবিত্র মসজিদে সিসি ক্যামেরা রাখা কিংবা ছবি তোলার ব্যবস্থা রাখার প্রশ্ন উঠতে পারেনা। কারণ, পবিত্র মসজিদ হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার ঘর। মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের নিমিত্তে এ পবিত্র ঘর নির্মিত। এখানে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক তায়াল্লুক নিসবত মুবারক লাভের লক্ষ্যে নামায-কালাম, ইবাদত- বন্দেগী, যিকির- ফিকির, তা’লীম তরবিয়ত ইত্যাদি করার জন্য মানুষ এসে থাকে।
আর সঙ্গতকারণে পবিত্র এ ঘরকে সবসময় পবিত্র রাখা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণের ঈমানী দায়িত্ব ও প্রধান কর্তব্য বটে। কারণ যারা এ পবিত্র ঘরে আসেন তারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত মেহমান। সেই মেহমানকে সম্মান করা বা সহযোগিতা করা আবশ্যক।
দুনিয়াতে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রেযামন্দি সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের জন্য এ পবিত্র ঘর-মসজিদ নির্মাণ করলে সম্মানিত জান্নাতে একটি বালাখানা নির্মিত হয়ে যায়। যিনি যত বেশী পবিত্র মসজিদ নির্মাণ করবেন তাদের ততবেশী বালাখানা নির্মিত হবে। আর যারা বেশী বেশী এ পবিত্র ঘরে যাতায়াত করবে তারা পবিত্র আরশে আযিমের নীচে ছায়া পাবেন।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বপ্রথম পবিত্র মসজিদ নির্মাণের সূচনা করেন। পবিত্র মদীনা শরীফে পবিত্র কুবা নগরে এ পবিত্র মসজিদ নির্মাণ করেন। যা মসজিদে কুবা নামে মাশহুর। এ পবিত্র মসজিদকে মসজিদে ক্বিবলাতাইন বলা হয়। কিবলাতাইন অর্থঃ দুই কিবলা। মুসলমানগনের প্রথম কিবলা ছিল, বাইতুল মুকাদ্দাস। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১৬/১৭ মাস বাইতুল মুকাদ্দাস উনার দিকে মুখ করে নামায আদায় করেন। এ পবিত্র মসজিদে যুহর নামায আদায় কালে বাইতুল্লাহ শরীফ অর্থাৎ পবিত্র কা’বা শরীফ উনার দিকে মুখ করে নামায পড়ার নির্দেশ মুবারক আসে। তিনি সাথে সাথে পবিত্র কা’বা শরীফ উনার দিকে ফিরে যান। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সবাই উনাকে অনুসরণ করেন।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরনে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা পবিত্র ঘর-মসজিদ নির্মাণ করেন। উত্তরকালে মু’মিন, মুসলমান, মুত্তাকীগণ সারা দুনিয়ায় এই পবিত্র মসজিদ নির্মাণের ধারা অব্যাহত রেখেছেন।
-আল্লামা সাইয়্যিদ মুফতী মুহম্মদ আব্দুল হালীম
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (৩০)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)