সিলেটে শেখ বুরহানউদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ
, ০৩ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৪ ছানী ‘আশার, ১৩৯০ শামসী সন , ২৪ মে, ২০২৩ খ্রি:, ১১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) স্থাপত্য নিদর্শন
শেখ বুরহানউদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি মাজার শরীফ সিলেট শহরের আট কিলোমিটার পূর্ব ও পূর্ব দক্ষিণে সুরমা নদীর উত্তর পারে একটি নির্জন স্থানে অবস্থিত। যে গ্রামে মাজার শরীফটি অবস্থিত সেই গ্রামের নাম কুলীঘাট (টুলটিকর)।
উত্তর দক্ষিণে বিলম্বিত প্রায় ৭ মিটার দ্ধ ৫ মিটার আয়তনের একটি প্রাচীর ঘেরা আয়তাকৃতির উন্মুক্ত স্থানের প্রায় কেন্দ্রস্থলে শেখ বুরহান উদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি মাজার শরীফ পরিলক্ষিত হয়। পাকা মাজার শরীফটি গিলাফ দ্বারা আবৃত এবং উপরে রয়েছে চাঁদোয়া। বেষ্টনী প্রাচীর দেখে সেখানে প্রাচীন ইমারত ছিল বলে ধারনা করা যায়। স্থানীয় জন সাধারণ মনে করেন উনার মাজার শরীফটি সিলেটের প্রাচীনতম মাজার শরীফ। সাইয়্যিদ শেখ বুরহান উদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন সিলেটের প্রথম মুসলিম যিনি স্বীয় আওলাদের আকিকার জন্য গরু জবেহ করেছিলেন।
সে সময় বর্তমান সিলেট তৎকালীন শ্রীহট্টের জালিম শাসক ছিলো গৌড় গোবিন্দ। সে জালিমের শাসনামলে সে রাজ্যে গরু জবাই এবং কুরবানী নিষিদ্ধ হওয়ায় সাইয়্যিদ শেখ বুরহান উদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কিছু গোশত গ্রহনের পর পুরোটাই মাটির নিচে চাপা দিয়ে দেন।
উল্লেখ্য, অত্যাচারী শাসকের জন্য তিনি অন্য কাউকে গরুর গোশত দেননি কারন সে অত্যাচারী গবিন্দ যদি টের পেয়ে যায় তাহলে যাকে গোশত দেওয়া হবে তার উপরও নির্মম অত্যাচার চালাবে। আর এ কারনেই তিনি বাকি গোশত মাটির নিচে চাপা দিয়ে দেন। যাতে করে গোবিন্দ টের না পায়।
কিন্তু একটা কাক গর্ত থেকে একটা হাড্ডি বের করে গোবিন্দের যাত্রাপথে ফেলে দিলো। মনে করা হয় এটাই ছিল বাংলায় মুসলমানদের আনুষ্ঠানিকভাবে আবির্ভাবের পটভূমি। সে অত্যাচারী গোবিন্দ বিধর্মী শাসক ক্ষিপ্ত হয়ে শেখ বুরহান উদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পরিবারকে ডেকে পাঠালেন। মা ও বাবার সামনে শেখ বোরাহান উদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার একমাত্র সন্তানকে জবাই করে অত্যাচারী শাসক গোবিন্দ। এবং সেই সাথে অত্যাচারী চরম জালিম গোবিন্দ শেখ বুরহান উদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাত কেটে দেয়। (নাউজুবিল্লাহ!)
হযরত শেখ বুরহান উদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে এক পর্যায়ে হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি এর সাথে দেখা হলে শেখ বুরহান উদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিস্তারিত ঘটনা এবং গোবিন্দও পবিত্র দ্বীন ইসলাম বিদ্ধেষী কর্মকান্ডের কথা শুনে তিনি বললেন তবেতো সিলেটেই প্রথম দ্বীন প্রচার করা দরকার। শেখ বুরহান উদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আমন্ত্রনেই হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রচারের জন্য ৩৬০ আউলিয়ায়ে ক্বিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের নিয়ে রওনা হন।
সূত্র:
যাকারিয়া, বাংলাদেশের প্রত্ন সম্পদ, ঢাকা, দিব্যপ্রকাশ, ২০০৭, পৃ. ৬০৩-৬০৪শেখ বুরহানউদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৭)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হাজীগঞ্জ দুর্গ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৬)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সুনামগঞ্জে কালের সাক্ষী শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী পাগলা বড় মসজিদ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
৫০০ বছরের ঐতিহাসিক নিদর্শন বাঘা শাহী মসজিদ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৫)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৩)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০২)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০১)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৪০০ বছরের আলোচিত প্রাচীন স্থাপত্য তেবাড়িয়া জামে মসজিদ
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)