সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬২)
, ০৮ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৪ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ১১ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৬ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
“কম দূরত্বের কারণে সময়ের পার্থক্য যেহেতু মান্য করা ফরয, সেহেতু বেশি দূরত্বের কারণে দিনের পার্থক্য মেনে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পবিত্র ঈদ পালন করা ও পবিত্র রোযা শুরু করা ফরযে আইন”
সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরা দাজ্জাল ও কায্যাব, তাদের থেকে দূরে থাকা ফরয-ওয়াজিব:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاللهُ يَشْهَدُ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَكَاذِبُونَ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। (পবিত্র সূরা মুনাফিকূন শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১)
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ يَأْتُونَكُمْ مِنَ الْأَحَادِيثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوْا أَنْتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ لاَ يُضِلُّونَكُمْ وَلاَ يَفْتِنُونَكُمْ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা উপস্থাপন করবে, যা তোমরা কখনো শুননি এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তোমাদেরকে তাদের থেকে দূরে রাখবে। তবে তারা তোমাদেরকে গোমরাহ করতে পারবে না এবং ফেৎনায় ফেলতে পারবে না। ” (মুসলিম শরীফ, শরহুন নববী, ফতহুল মুলহিম)
দাজ্জালে কাযযাবের অর্থ-
خَلَّاطُوْنَ بَيْنَ الْحَقِّ وَالْبَاطِلِ مُمَوِّهُوْنَ.
অর্থ: যারা সত্যের সাথে সাথে মিথ্যাকে মিশ্রিত করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে ও ধোঁকা দেয়।
আর পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জালে কাযযাবের প্রকৃত অর্থ হলো- যারা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিভ্রান্তিকর অর্থ ও অপব্যাখ্যা করে সর্বদা মুসলমানদের মাঝে ফেৎনা করে ও বিভ্রান্তি ছড়ায় তাদেরকে বলা হয় দাজ্জালে কাযযাব। মূলতঃ তারা মুনাফিক। তাই সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরাও পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জাল ও কাযযাবের অন্তর্ভুক্ত।
ধারাবাহিক আলোচনা.........
নিম্নের ৬৪ পৃষ্ঠা ও ৬৫ পৃষ্ঠায় প্রায়ই একই কথা, তাই একটি উত্তরই শেষে দেয়া হলো; মাহবুব উক্ত বইয়ের ৬৪ পৃষ্ঠায় লিখেছে- বিশ্বের যে কোন স্থানে সর্বপ্রথম নতুন চাঁদ দেখাকে চন্দ্রমাসের ১ম তারিখ গণ্য করে সে অনুযায়ী বাংলাদেশে রোযা, ঈদ, কুরবানীসহ চাঁদের তারিখ নির্ভর সকল ইবাদত পালন করাই হলো কুরআন সুন্নাহ্র আলোকে হানাফী, মালেকী, শাফেয়ী ও হাম্বলী মাযহাবের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত। বর্তমানে সকল মাযহাবের অনুসারী এবং যারা মাযহাবের অনুসারী নন এমন সকলের ঐক্যমত।
মাহবুব উক্ত বইয়ের ৬৪ পৃষ্ঠায় আরো লিখেছে- বাংলাদেশের ভৌগলিক সীমানা হতে চাঁদ দেখার পরেই বাংলাদেশে মাস শুরু হওয়ার রেওয়াজ পবিত্র কুরআন সুন্নাহ এবং হানাফী মাযহাবের সিদ্ধান্ত পরিপন্থী।
সে তার বইয়ের ৬৫ পৃষ্ঠায় লিখেছে- পৃথিবীর যে কোন স্থানে নতুন চাঁদ দেখার দ্বারা সমগ্র পৃথিবীবাসীর উপর একই চন্দ্র তারিখে একই দিনে রোযা, ঈদ, কুরবানী ফরয-ওয়াজিব হওয়ার অত্র ফতওয়াটি নতুন কোন ফতওয়া নয়। বরং এটা ইসলামের প্রায় দেড় হাজার বছরের পুরাতন ফতওয়া।
জাওয়াব: তার উপরোল্লেখিত কথাগুলি স্বভাবগত মুনাফিকীমূলক মিথ্যা কথা। তা অনেক পূর্বেই আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি। যা তাদের মুরতাদ ও মুনাফিক হওয়ার অকাট্য প্রমাণ। অনেক পূর্বেই আমরা তা প্রমাণ করে দিয়েছি।
সে ৬৫ পৃষ্ঠায় আরো লিখেছে- ১৪৩৫ হিজরী মোতাবেক ২০১৪ সনের পবিত্র ঈদুল ফিতর ২রা জুলাই রোজ সোমবার পৃথিবীর ১৮২টি দেশে একই দিনে, একই চন্দ্র তারিখে পালিত হওয়া। অন্য তিনটি দেশ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের বিশাল জনগোষ্ঠীর ঐ একই দিনে হাজার হাজার ঈদের জামাত করা।
জাওয়াব: সে উক্ত বইয়ের ১১ পৃষ্ঠায় পূর্বেই একথা বলেছিলো সেখানে তার জাওয়াব দেয়া আছে।
সে বইয়ের ৬৮ পৃষ্ঠায় লিখেছে- চাঁদের তারিখ সংশ্লিষ্ট আমলগুলো সমগ্র পৃথিবীতে একই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে না বরং একই দিনে (অর্থাৎ জুমুয়া, শনি, রবি....বৃহস্পতিবারে) এবং একই তারিখে পালিত হবে।
জাওয়াব: সময়ের ভিন্নতার মূল কারণ হলো দূরত্ব, দূরত্ব না হলে সময়েরও পার্থক্য হয় না। তদ্রুপ দূরত্বের কারণেই দিনের পার্থক্য হয় অর্থাৎ কম দূরবর্তীস্থানে সময়ের পার্থক্য হয় আর বেশি দূরবর্তী স্থানে দিনের পার্থক্য হয়। বলাবাহুল্য যে, মাহবুব উরফে মাকযূব এবং তার সমগোত্রীয়রা সময়ের ভিন্নতাকে মেনে নেয়ার পরেও দিন, তারিখ ও বারের ভিন্নতাকে না মানার অর্থই হলো তারা সারাবিশ্বের সকল মুসলমান উনাদের পবিত্র ঈদ, পবিত্র রোযাসহ অন্যান্য ইবাদত বন্দেগী নষ্ট করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
সে ৬৮ ও ৬৯ পৃষ্ঠায় লিখেছে- চাঁদের তারিখ নির্ভর সকল ইবাদত পালনের ক্ষেত্রে পৃথিবীর যে কোন দেশের সময়ের হিসাব মধ্যপ্রাচ্যের স্থানীয় সময়ের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। বাংলাদেশ বা অন্য কোন দেশের সাথে নয়।
জাওয়াব: মধ্যপ্রাচ্যের স্থানীয় সময়ের অনুসরণে একই দিনে পবিত্র রোযা রাখলে বা পবিত্র ঈদ করলে কোন অঞ্চলে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার দিনে পবিত্র ঈদ করতে হয়, আবার কোন অঞ্চলে পবিত্র ঈদ উনার দিনে পবিত্র রোযা রাখতে বাধ্য হয়। যা হারাম ও কুফরী। চলবে....
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩)
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
গ্রীনিচকে ০ (শূন্য) ডিগ্রি দ্রাঘিমায় ধরে মূল মধ্যরেখা স্থির করার কোন ঐতিহাসিক গুরুত্ব নেই: পবিত্র কা’বা শরীফ উনার অবস্থান ০ (শূন্য) ডিগ্রি ০ (শূন্য) মিনিট ০ (শূন্য) সেকেন্ড ডিগ্রি দ্রাঘিমা ধরে ১৫ ডিগ্রি অন্তর অন্তর সময় অঞ্চলে ভাগ করাই সর্বোত্তম (১)
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৯)
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (৩)
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)