সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৫৪)
, ২১ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৮ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১০ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
“কম দূরত্বের কারণে সময়ের পার্থক্য যেহেতু মান্য করা ফরয, সেহেতু বেশি দূরত্বের কারণে দিনের পার্থক্য মেনে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পবিত্র ঈদ পালন করা ও পবিত্র রোযা শুরু করা ফরযে আইন”
সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরা দাজ্জাল ও কায্যাব, তাদের থেকে দূরে থাকা ফরয-ওয়াজিব:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاللهُ يَشْهَدُ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَكَاذِبُونَ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। (পবিত্র সূরা মুনাফিকূন শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১)
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ يَأْتُونَكُمْ مِنَ الْأَحَادِيثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوْا أَنْتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ لاَ يُضِلُّونَكُمْ وَلاَ يَفْتِنُونَكُمْ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা উপস্থাপন করবে, যা তোমরা কখনো শুননি এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তোমাদেরকে তাদের থেকে দূরে রাখবে। তবে তারা তোমাদেরকে গোমরাহ করতে পারবে না এবং ফেৎনায় ফেলতে পারবে না। ” (মুসলিম শরীফ, শরহুন নববী, ফতহুল মুলহিম)
দাজ্জালে কাযযাবের অর্থ-
خَلَّاطُوْنَ بَيْنَ الْحَقِّ وَالْبَاطِلِ مُمَوِّهُوْنَ.
অর্থ: যারা সত্যের সাথে সাথে মিথ্যাকে মিশ্রিত করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে ও ধোঁকা দেয়।
আর পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জালে কাযযাবের প্রকৃত অর্থ হলো- যারা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিভ্রান্তিকর অর্থ ও অপব্যাখ্যা করে সর্বদা মুসলমানদের মাঝে ফেৎনা করে ও বিভ্রান্তি ছড়ায় তাদেরকে বলা হয় দাজ্জালে কাযযাব। মূলতঃ তারা মুনাফিক। তাই সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরাও পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জাল ও কাযযাবের অন্তর্ভুক্ত।
ধারাবাহিক আলোচনা.........
৫। সে তার বইয়ের ৫৩ পৃষ্ঠায় আরো লিখেছে, ছহীহ মুসলিমের বর্ণনায় কুরাইব রহমতুল্লাহি আলাইহির চাঁদ দেখার স্বীকৃতিমূলক শব্দ نَعَمْ رَأَيْتُهُ “হাঁ আমি চাঁদ দেখেছি” কথাটির উল্লেখ থাকলেও তিরমিযীসহ অন্যান্য বর্ণনায় কুরাইব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজে চাঁদ দেখেছেন এরূপ শব্দের উল্লেখ নাই। বরং লোকেরা দেখেছে উল্লেখ রয়েছে। ফলে অত্র হাদীছখানা مُضْطَرَب বা মূল ভাষা বিভিন্ন রকম হওয়ায় স্পষ্ট মারফু হাদীছের বিপরীতে কখনই দলীল হতে পারে না। নাঊযুবিল্লাহ!
জাওয়াব: প্রথমত: প্রত্যেক হাদীছ শরীফ উনার মধ্যেই হযরত কুরাইব রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, فَرَاَيْت الْهِلَالَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ অর্থাৎ আমি চাঁদ দেখেছি জুমুয়াবার রাত্রে। এ কথা উল্লেখ থাকার পরেও মাহবুব বলেছে যে-
“ছহীহ মুসলিমের বর্ণনায় কুরাইব রহমতুল্লাহি আলাইহির চাঁদ দেখার স্বীকৃতিমূলক শব্দ نَعَمْ رَأَيْتُهُ “হাঁ আমি চাঁদ দেখেছি” কথাটির উল্লেখ থাকলেও তিরমিযীসহ অন্যান্য বর্ণনায় কুরাইব রহমতুল্লাহি আলাইহি নিজে চাঁদ দেখেছেন এরূপ শব্দের উল্লেখ নাই। বরং লোকেরা দেখেছে উল্লেখ রয়েছে” মূলত: মাহবুবের উক্ত কথা, এটা জঘন্যতম মিথ্যাচার, আর এ ধরনের মিথ্যাচারিতা মুনাফিক ছাড়া কোন মুসলমান করতে পারে না। এই বিষয়ে মাহবুবের সমগোত্রীয় শাহ আলম নামের আরেক কাযযাবের তদ্রুপ মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিপূর্বে আমরা তার সুস্পষ্টভাবে বিস্তারিত জাওয়াব দিয়েছি।
দ্বিতীয়ত: হযরত কুরাইব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা মারফূ, বিশুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার ব্যাপারে কারো কোন ইখতিলাফ বা বিপরীত মন্তব্য নাই। তার আলোচনা ও প্রমাণ নিম্নরূপ:
হযরত মুহম্মদ ইবনে আলী ইবনে মুহম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ আশ-শাওকানী আল ইয়ামানী আল-হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ: ১২৫০ হিজরী শরীফ) তিনি বলেন-
وَاعْلَمْ أَنَّ الْحُجَّةَ إنَّمَا هِيَ فِي الْمَرْفُوعِ مِنْ رِوَايَةِ ابْنِ عَبَّاسٍ لَا فِي اجْتِهَادِهِ الَّذِي فَهِمَ عَنْهُ النَّاسُ وَالْمُشَارُ إلَيْهِ بِقَوْلِهِ:
অর্থ: জেনে রাখো, নিশ্চয়ই হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত হাদীছ শরীফটি হাদীছে মারফূ এবং গ্রহণযোগ্য দলীল। এটা উনার কোন ইজতিহাদী দলীল নয়, যা কিছু লোক মনে করেছে এবং উনার বর্ণনাকে ঐ দিকে ইঙ্গিত করতে চায়। (নাইলুল আওতার ৪/২৩০)
হযরত ইবনে আবদুল বার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি দ্বিতীয় মাযহাব বর্ণনার পর স্পষ্ট ভাষায় লিখেন-
إلى القول الأول أذهب لأن فيه أثرا مرفوعا وهو حديث حسن تلزم به الحجة
অর্থ: আমি প্রথম মতই গ্রহণ করি। কারণ এর সমর্থনে একটি পবিত্র মারফূ হাদীছ শরীফ আছে, যা সনদের বিচারে দলীলযোগ্য। আর তা এক বড় ছাহাবী উনার মাযহাব। ছাহাবীদের মধ্যে কেউ এ বিষয়ে উনার বিরোধিতা করেননি। পাশাপাশি এটি ফক্বীহ-তাবেয়ীগণের একটি জামাতেরও সিদ্ধান্ত। (আত তামহীদ ১৪/ ৩৫৬-৩৫৮) চলবে....
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)