সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৫০)
, ১৯ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৭ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ২৫ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ১০ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
“কম দূরত্বের কারণে সময়ের পার্থক্য যেহেতু মান্য করা ফরয, সেহেতু বেশি দূরত্বের কারণে দিনের পার্থক্য মেনে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পবিত্র ঈদ পালন করা ও পবিত্র রোযা শুরু করা ফরযে আইন”
সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরা দাজ্জাল ও কায্যাব, তাদের থেকে দূরে থাকা ফরয-ওয়াজিব:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاللهُ يَشْهَدُ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَكَاذِبُونَ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। (পবিত্র সূরা মুনাফিকূন শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১)
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ يَأْتُونَكُمْ مِنَ الْأَحَادِيثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوْا أَنْتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ لاَ يُضِلُّونَكُمْ وَلاَ يَفْتِنُونَكُمْ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা উপস্থাপন করবে, যা তোমরা কখনো শুননি এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তোমাদেরকে তাদের থেকে দূরে রাখবে। তবে তারা তোমাদেরকে গোমরাহ করতে পারবে না এবং ফেৎনায় ফেলতে পারবে না। ” (মুসলিম শরীফ, শরহুন নববী, ফতহুল মুলহিম)
দাজ্জালে কাযযাবের অর্থ-
خَلَّاطُوْنَ بَيْنَ الْحَقِّ وَالْبَاطِلِ مُمَوِّهُوْنَ.
অর্থ: যারা সত্যের সাথে সাথে মিথ্যাকে মিশ্রিত করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে ও ধোঁকা দেয়।
আর পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জালে কাযযাবের প্রকৃত অর্থ হলো- যারা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিভ্রান্তিকর অর্থ ও অপব্যাখ্যা করে সর্বদা মুসলমানদের মাঝে ফেৎনা করে ও বিভ্রান্তি ছড়ায় তাদেরকে বলা হয় দাজ্জালে কাযযাব। মূলতঃ তারা মুনাফিক। তাই সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরাও পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জাল ও কাযযাবের অন্তর্ভুক্ত।
ধারাবাহিক আলোচনা.........
এ কে এম মাহবুব সে উক্ত বইয়ের ৫৬ পৃষ্ঠায় লিখেছে-
বাংলাদেশের স্থানীয় তারিখের অনুসরণের কারণে পাঁচ-দশ ওয়াক্ত নামাযের ওয়াজিব তাকবীর (তাকবীরে তাশরীক) ছুটে যাচ্ছে, আবার শেষ দিক দিয়ে এমন এক দুই দিন তাকবীর বলছি যখন আমলটির ওয়াজিব আর বাকী থাকে না। ... দুই দিনের কুরবানী বিফলে যাচ্ছে। ইত্যাদি।
জাওয়াব: উদয়স্থলের ভিন্নতা অনুসারে আমল করায় কারোই তাকবীর (তাকবীরে তাশরীক) ছুটে যাচ্ছে না এবং দুই দিনের কুরবানী বিফলে যাচ্ছে না বরং এটাই সঠিক আমল। কেননা, প্রত্যেক নিকটবর্তী অঞ্চলে একই দিনে এবং প্রত্যেক দূরবর্তী অঞ্চলে ভিন্ন দিনে পবিত্র ঈদ পালন ও পবিত্র রোযা শুরু করাসহ সকল ইবাদত-বন্দেগী করাই মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সম্মানিত নির্দেশ মুবারক। যা মান্য করা ও তদানুযায়ী আমল করা ফরয। তদ্রুপ পবিত্র কুরবানী ও তাকবীরে তাশরীকের বিষয়টিও একই হুকুম এবং এর বিপরীতে সারাবিশ্বে একই দিনে দাবি ও পালন করাটাই হারাম ও কুফরী তা ইতিপূর্বে আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি।
সুতরাং “উদয়স্থলের ভিন্নতা অনুসারে বাংলাদেশের স্থানীয় সময়ের অনুসরণের কারণে পাঁচ-দশ ওয়াক্ত নামাযের ওয়াজিব তাকবীর (তাকবীরে তাশরীক) ছুটে যাচ্ছে আবার শেষ দিক দিয়ে এমন এক দুই দিন তাকবীর বলছি যখন আমলটির ওয়াজিব আর বাকী থাকে না। ... মাহবুবের উল্লেখিত দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কুফরী কাজ।
তারপর মাহবুব লিখেছে যে, ফেরেশতা ও রূহ ভিন্ন একদিনে বাংলাদেশে অবতরণ করবেন তাদের এ ধারণা যে অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য এ কথা অপরিহার্য।
জাওয়াব: পৃথিবীর ভৌগলিক দূরত্বের কারণে কোথাও পবিত্র ফজর উনার ছলাত আদায় করে আবার একই সময় কারো আছরের ওয়াক্ত, কারো এশার ওয়াক্ত, কারো ঘুমানোর সময়, কারো তাহাজ্জুদের সময় হয়। এই ধরণের আমলগুলির জন্য যেমন সময় ও দিনের ভিন্নতার কারণে ভিন্ন সময়ে ও ভিন্ন দিনে ফেরেশতা নাযিল হন। তদ্রুপ পবিত্র শবে ক্বদর, পবিত্র শবে বরাত, পবিত্র শবে মি’রাজ শরীফ উনাদের ক্ষেত্রেও দিনের ভিন্নতায় হযরত ফেরেশতা ও রূহ আলাইহিমুস সালাম উনারা ভিন্ন দিনে বাংলাদেশে অবতরণ করবেন এটাই সঠিক এবং এটাই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরতময় ফায়সালা মুবারক। যার মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে তিনি সর্বদা সর্বত্র উনার রহমত বরকত ও ইবাদত বন্দেগী দুনিয়াতে জারী রাখেন। পক্ষান্তরে মাহবুবের ধারণাটিই হলো অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য এ কথা অপরিহার্য। চলবে....
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (২৭)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আউলিয়ায়ে কিরাম উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে হবে
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তাওয়াক্কুল তথা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ভরসা করার ফযীলত
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
“সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সুদের ভয়াবহতা
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)