সাইয়্যিদুল আনাম, রউফুর রহীম, সরওয়ারে দোআলম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চিকিৎসা পদ্ধতি
, ১২ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৭ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১১ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
يَاأَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُمْ مَّوْعِظَةٌ مِّنْ رَبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِّمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَّرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ. قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِمَّا يَجْمَعُونَ
অর্থ: “হে মানুষেরা! তোমাদের রব তাআলা উনার তরফ থেকে তোমাদের নিকট এসেছেন মহান নছীহতকারী, অন্তরের মহান আরোগ্য দানকারী, মহান হিদায়েত দানকারী এবং মু’মিনদের জন্য মহান রহমত দানকারী। (অতএব আমার সম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি (উম্মতদেরকে) বলে দিন, মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ফদ্বল ও সম্মানিত রহমতস্বরূপ আপনাকে যে তারা পেয়েছে, সেজন্য তাদের প্রতি কর্তব্য বা ফরয হচ্ছে খুশি মুবারক প্রকাশ করা। এই খুশি মুবারক প্রকাশের ইবাদত তাদের সমস্ত ইবাদত বা আমল অপেক্ষা উত্তম বা শ্রেষ্ঠ।” (পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭, ৫৮)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিশ্ব মানবতার উৎকর্ষ সাধনের সমস্ত পন্থা বাতলিয়ে দিয়েছেন। তারই ফলশ্রুতিতে ব্যাধিগ্রস্থ অন্তরের চিকিৎসার পাশাপাশি দৈহিক চিকিৎসার সমস্ত নিয়মাবলীও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন।
শাফিউল মুযনিবীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিভিন্ন ঔষধ সেবন ও ব্যবহারের মাধ্যমে চিকিৎসা করেছেন। পাশাপাশি পবিত্র কুরআন শরীফের আয়াত শরীফ, দোআ মুবারক, দুরূদ শরীফ, ঝাড়-ফুঁক এবং তাবিজের দ্বারাও চিকিৎসা করেছেন। আর সে কারণে উভয় পন্থাই সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে গণ্য হয়েছে।
(১) মুসতাদ্রাকে হাকিম কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, হযরত সামুরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, তোমাদের চিকিৎসা সমূহের মধ্যে সর্বোত্তম চিকিৎসা হলো শিংগা লাগানো।
(২) মিশকাত ও ইবনে মাজাহ শরীফে রয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিমাসে তিনদিন সকাল বেলায় মধু চেটে সেবন করবে তার কোন কঠিন রোগ-ব্যাধি হবে না।
(৩) বুখারী শরীফে রয়েছে, হাবীবে আ’যম নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, কালোজিরায় একমাত্র মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের চিকিৎসা নিহিত।
(৪) বুখারী শরীফে আরো রয়েছে, হযরত সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, ছহিবে রফা’না লাকা যিক্রাক নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে, সেদিন বিষ ও যাদু তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
দোআ মুবারক, দুরূদ শরীফ, ঝাড়- ফুঁক এবং তাবিজের দ্বারা চিকিৎসা:
(১) পবিত্র হাদীছ শরীফে রয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ প্রত্যেক রোগের জন্য শিফা।
(২) খলীফাতুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, একবার আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট মাথা ব্যাথার কথা জানাই। তখন তিনি আমাকে বললেন, শরীরের যে স্থানে ব্যাথা হচ্ছে সেখানে হাত রেখে ৩ বার বিসমিল্লাহ শরীফ পড়–ন এবং ৭ বার-
اَعُوْذُ بِاللهِ وَقُدْرَتِهِ مِنْ شَرِّ مَا اَجِدُ وَأُحَاذِرُ
দোয়াটি পাঠ করুন।
(৩) ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চিন্তিত শান মুবারক দেখা দিলে তিনি এই দোআ মুবারক পড়তেন-
يَا حَىُّ يَا قَيُّوْمُ بِرَحْمَتِكَ اَسْتَغِيْثُ
অর্থ: “হে চিরজীবি, হে চিরন্তন! আপনার অসীম রহমত মুবারকের উছীলায় প্রার্থনা করছি।” (হাকিম, তিরমিযী শরীফ)
(৪) ইবনে মাজাহ শরীফে বর্ণিত রয়েছে, ছহিবে জামিয়িল কালিম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
اِنَّ فِى الصَّلَوةِ شِفَاءٌ
অর্থ: “নিশ্চয়ই নামাযের মধ্যে শিফা বা আরোগ্য রয়েছে।”
গভীরভাবে ফিকির করলে অনুধাবন করা যায় যে, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নত মুবারকই জিসমানী ও রূহানী তথা সর্বপ্রকার রোগ ব্যাধির আরোগ্য লাভের কারণ।
সুতরাং, যিকরুল্লাহ, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নত মুবারকসমূহের উপর আমলই পার্থিব সুস্থতা, সুখ-শান্তি ও পরকালীন সাফল্যের সর্বোত্তম মাধ্যম।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে হাক্বীক্বীভাবে সুন্নত মুবারকসমূহের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
-আল্লামা মুফতী কাওছার আহমদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করার কারণে উনার দাসীকে ক্বতল বা মৃত্যুদ-
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তা’লীম গ্রহণ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৭)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সত্যের মাপকাঠি
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৯)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে কোনো স্থানেই সরাসরি বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক দ্বারা সম্বোধন মুবারক করেননি। যা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বুলন্দী শান মুবারক উনারই বহিঃপ্রকাশ মুবারক (৪)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বাইতুল্লাহ বা পবিত্র মসজিদ ও বাইতুর রসূল বা পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলিম (১)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)