সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পবিত্রতম বিছালী শান মুবারক প্রকাশ উনার ওয়াক্বিয়া মুবারক
, ০২ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২২ ছানী, ১৩৯১ শামসী সন , ২১ জুলাই, ২০২৩ খ্রি:, ০৬ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
رجحه الامام الواقدى و قال و كان حضرة عبد الله عليه السلام قد رجع ضعيفا مع قريش لـما رجعوا من تـجارتـهم و مروا بالـمدينة فتخلف عند اخواله بنى عدى بن النجار فاقام عندهم مريضا شهرا فلما قدم اصحابه مكة سألـهم حضرة عبد الـمطلب عليه السلام عنه فقالوا خلفناه مريضا فبعث اليه اخاه الـحارث فوجده قد توفى و دفن فى دار التابعة و قيل دفن بالابواء
অর্থ: হযরত ইমাম ওয়াক্বিদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তারজীহ বা প্রাধান্যপ্রাপ্ত বর্ণনা সূত্রে বর্ণনা করে বলেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মারিদ্বী শান মুবারক উনাকে গ্রহণ করায় কুরাইশদের সাথে ব্যবসা থেকে প্রত্যাবর্তন করার ইচ্ছা মুবারক পোষণ করেন। যখন ব্যবসা থেকে ফিরে আসার ইচ্ছা মুবারক পোষণ করলেন এবং সকলেই পবিত্র মদীনা শরীফ উনার পার্শ্ব দিয়ে অতিক্রম করতে লাগলেন।
তখন মারিদ্বী শান মুবারক গ্রহণ করার কারণে যবীহুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে স্বীয় ‘মাতুল’ বংশীয় ‘বনু নাজ্জার’ গোত্রের ‘আদী’ বংশীয় মামাগণের নিকট রেখে কুরাইশগণ পবিত্র মক্কা শরীফ-এ প্রত্যাবর্তণ করেন। অতঃপর হযরত খাজা যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার সম্মানিত মামাগণ উনার নিকট এক মাস মারিদ্বী শান মুবারক গ্রহণ করা অবস্থায় অবস্থান করেন।
এমতাবস্থায় যখন সাইয়্যিদুনা হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথীগণ পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে পৌঁছে গেলেন, তখন হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদেরকে সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলেন, অতঃপর উনারা সকলেই জবাবে বললেন, সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে আমরা মারিদ্বী শান মুবারক গ্রহণ করার কারণে (পবিত্র মদীনা শরীফ-এ) রেখে এসেছি। এ জবাব শুনার পর পরই সাইয়্যিদুনা খাজা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বীয় প্রাণপ্রতীম আওলাদ- সাইয়্যিদুনা খাজা হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার অবস্থা জানার জন্য সাইয়্যিদুনা খাজা হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনারই আপন ভাই হারিছ উনাকে পবিত্র মদীনা শরীফ-এ প্রেরণ করেন।
অতঃপর তিনি সেখানে গিয়ে দেখতে পেলেন যে, সাইয়্যিদুনা খাজা হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্রতম বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। ‘সম্মানিত দারে তাবিয়ায়’ উনার পবিত্র রওযা শরীফ স্থাপন করা হয়েছে।
কেউ কেউ বলেন, ‘আবওয়া নামক স্থানে উনার পবিত্র রওযা শরীফ স্থাপন করা হয়েছে অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা খাজা হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র রওজা শরীফ ‘আবওয়া’ নামক স্থান মুবারক-এ অবস্থিত। (শারুহুয যারকানী ১ম খ- ২০৬ পৃষ্ঠা, ইবনুল আছীর, ফীয যাহরিল বা’সিম, খাছায়িছুল কুবরা)
এ প্রসঙ্গে আরো বর্ণিত আছে-
و يذكر عن ابن حضرة عباس رضى الله تعالى عنه انه لـما توفى سيدنا حضرة عبد الله عليه السلام قالت الـملائكة يا الـهنا و يا سيدنا بقى نبيك يتيما وفى رواية صار نبيك فبقى من غير حافظ و مرب فقال الله! انا له حافظ و نصير و فى رواية انا وليه و حافظه و حاميه و ربه و عونه و رازقه و كافيه فصلوا عليه وتبركوا باسـمه
অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যখন সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা যবীবুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা (কেঁদে কেঁদে) বলছিলেন- ইয়া বারে ইলাহী, খালিক, মালিক, রব মহান রব্বুল আলামীন! আপনার প্রিয়তম হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো এখন ইয়াতীম হয়ে গেলেন!
অপর বর্ণনায় রয়েছে- হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা বললেন, ইয়া বারে ইলাহী! আপনার প্রিয়তম হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তিনি এখন এমন ইয়াতীম হয়ে গেলেন! উনার তো আর কোনো রক্ষনাবেক্ষণকারী এবং দেখা-শুনা তথা লালন-পালনকারী আর কেউ বাকী থাকলেন না! এ জবাবে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম আপনারা সাক্ষী থাকুন- আমিই উনার পরম অভিভাবক, আমিই উনার পবিত্রতম হিফাযতকারী, আমি উনার হাযত মুবারক পুরণকারী তথা আমিই উনার পবিত্রতম রক্ষনাবেক্ষকারী, আমিই উনার পবিত্রতম রব তায়ালা তথা লালন-পালনকারী, আমিই উনার পবিত্রতম সাহায্যকারী, আমিই উনার পবিত্রতম রিযিকদাতা এবং সার্বিক বিষয়ে আমিই উনার জন্য যথেষ্ট। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই হে ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম! আপনারা সকলেই আমার প্রিয়তম হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম শান মুবারক-এ পবিত্রতম ছলাত মুবারক তথা দরূদ শরীফ পাঠ করুন এবং উনার পবিত্র নাম মুবারক উনার যিকির করে সীমাহীন বরকত মুবারক হাছিল করুন। সুবহানাল্লাহ! (শারহুয যারকানী ১ম খ- ২০৭ পৃষ্ঠা)
-আল্লামা আবু মুহম্মদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (৩০)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)