সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৩)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ০৭ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১২ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ১১ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ২৫ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে খিলাফত মুবারক লাভ:
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একদিন ফজরের নামাযান্তে ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-ফিকিরে মশগুল ছিলেন। এমন সময় সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জনৈক খাদিম উনার প্রতি নির্দেশ মুবারক করলেন, “মুঈনুদ্দীন উনাকে ডাকুন। ” খাদিম মুঈনুদ্দীন নাম মুবারক ধরে আহ্বান করলেন, ওই নামের অনেকেই ডাকে সাড়া দিলেন। তখন খাদিম তিনি আরযু পেশ করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কোন মুঈনুদ্দীনকে ডাকবো? তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র রওজা শরীফ থেকে আদেশ মুবারক করলেন, মুঈনুদ্দীন চীশতী উনাকে ডাকুন। তখন খাদিম মুঈনুদ্দীন চীশতী নাম মুবারক ধরে ডাক দিলেন। সুলত্বানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ মুবারক শুনে অজ্ঞাত এক অভূতপূর্ব ইশকের হাল ও জজবা পয়দা হলো। মা’শুক স্বীয় আশিক উনাকে দীদার মুবারক প্রদানের জন্য আহ্বান করলে আশিকের প্রাণের অবস্থা কেমন হয় তা ভাষা ও কল্পনাতীত। আশিক ও মা’শুকের নিগূঢ়তম রহস্য দুই কাঁধের ফেরেশতা হযরত কিরামান-কাতিবীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের অজ্ঞাত থাকে।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لِىْ مَعَ اللهِ وَقْتٌ لَا يَسْعنِى فِيْهِ مَلَكٌ مُقَرَّبٌ وَلَا نَبِى مُّرْسَلٌ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে আমার এমন গভীর নৈকট্য মুবারক রয়েছে যা নৈকট্যশীল হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনারাও অবহিত নন। ” সুবহানাল্লাহ!
তিনি অত্যন্ত আদব, ইহতিরাম ও বিনয়ের সাথে পবিত্র রওজা শরীফে হাজির হয়ে সালাম মুবারক পেশ করলেন। সাথে সাথে রওজা শরীফ থেকে আওয়াজ আসলো-
وَعَلَيْكُمُ السَّلَامُ يَا قُطُبَ الْـمَشَائِخِ
অর্থ: হে মাশায়িখগণের কুতুব! আপনার উপরও শান্তি বর্ষিত হোক। পবিত্র রওযা শরীফ উনার পবিত্র দরজা মুবারক খুলে গেল। সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ভিতরে প্রবেশ করলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রহমত মুবারক উনার দ্বার মুবারক গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জন্য খুলে গেল। তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিয়ারত মুবারক লাভে ধন্য হয়ে দোজাহানের ভাগ্যবানগণের বাদশাহী লাভ করলেন। যেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র না’লাইন শরীফ উনার ধূলা মুবারক লাভ করে ধন্য হওয়ার জন্য সম্মানিত আরশ আযীম আকাঙ্খিত ছিল, সেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র থেকে পবিত্রতম নূর মুবারক স্পর্শ করে সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের শীর্ষস্থানীয় মাক্বামে উপনীত হলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মাঝে কোনরূপ পর্দা ছিল না। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে লক্ষ্য করে বললেন, আমি আপনাকে ভারতবর্ষের সালতানাত তথা বাদশাহী হাদিয়া মুবারক করলাম। আপনি ভারতবর্ষে গিয়ে হিন্দুদের প্রধান শক্তি কেন্দ্র আজমীর শরীফকে আপনার হিদায়েতের কেন্দ্রস্থল হিসেবে তথায় অবস্থান মুবারক করুন। তিনি হিন্দুস্থান ও আজমীর শরীফে অবস্থান সম্পর্কে জানার আরজী পেশ করলেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে একটি জান্নাতী আনার উনার হাত মুবারকে দিলেন। সাথে সাথে হিন্দুস্থান, আজমীর শরীফের সমস্ত ম্যাপ দেখিয়ে দিলেন। এমনকি আজমীর শরীফ উনার পাহাড়গুলিও উনার দৃষ্টির অগোচরে রইলো না। সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিলাফত ও অফুরন্ত নিয়ামত লাভে ধন্য হয়ে আধ্যাত্মিক রাজ্যের সুলত্বান পদে অধিষ্ঠিত হয়ে উনার মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে ভারতবর্ষে আগমন করেন। এজন্য উনাকে আতায়ে রসূল, সুলত্বানুল হিন্দ বা হিন্দুস্থানের সুলত্বান এবং নায়েবে নবী ফিল হিন্দ বলে অভিহিত করা হয়। (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)