সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (১৬)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ২৮ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৯ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ০৮, মে, ২০২৪ খ্রি:, ২৯ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
রিয়াদ্বাত-মাশাক্কাত:
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অস্বাভাবিক রিয়াদ্বাত-মাশাক্কাত করেছেন।
উনার শায়েখ শায়খুল মাশায়িখ, সুলত্বানুল আরিফীন, সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আদেশ-নিষেধগুলো পরিপূর্ণভাবে পালন করতেন। সবসময় উনার খিদমত মুবারকে আঞ্জাম দিয়েছেন। এতো অক্লান্ত পরিশ্রম করা সত্ত্বেও কোনদিন ওযীফা আদায় করা থেকে বিরত থাকেননি।
একাধারে ৭০ বছর পর্যন্ত তিনি কোনো রাতে ঘুমাননি। তিনি উনার শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা সুলত্বানুল আউলিয়া, শায়খুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খিদমত মুবারকের আঞ্জাম দিয়েছেন সাড়ে ২০ বছর। এই সময়ে তিনি ১২ বার উনার শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে বিভিন্ন দেশ সফর করেন। তখন পাঁয়ে হেঁটে চলা ব্যতীত অন্য কোন সফর উপযোগী বাহন ছিল না। যার ফলে সব সফরই উনাদেরকে পায়ে হেঁটে করতে হয়েছে। প্রত্যেক সফরের সময়ই মহান মুর্শিদ ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খিদমত মুবারকে আঞ্জাম দেয়ার যাবতীয় মাল-পত্র স্বীয় মাথা মুবারকে বহন করে নিয়ে যেতেন। উনার প্রত্যেক খিদমত মুবারকই শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি খুশি হতেন এবং উনার জন্য দোয়া করতেন।
আর উনার শায়েখ সুলত্বানুল আউলিয়া, শায়খুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ফখর (গর্ব) করে বলতেন, ক্বিয়ামতের দিন যদি মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন যে, আপনি আমার জন্য কি হাদিয়া নিয়ে এসেছেন? আমি বলবো, হে বারে ইলাহী! আমি আপনার জন্য হাদিয়া স্বরূপ খাজায়ে খাজেগাঁ হযরত মুঈনুদ্দীন চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে নিয়ে এসেছি। ”
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার রিয়াদ্বাত-মাশাক্কাতের ধারা ছিল পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম, পুঙ্খানুপুঙ্খ ইত্তিবা বা অনুসরণ-অনুকরণ। তিনি প্রতিটি ক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিপূর্ণ ইত্তিবা করতেন। তিনি পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার খিলাফ বা বিপরীত কোন আমল বা কাজ কখনো করতেন না। সুবহানাল্লাহ!
একদিন স্বপ্নে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিয়ারত মুবারক নছীব হলো। তিনি উনাকে লক্ষ্য করে বললেন, আপনি তো আমার প্রায় সমস্ত সুন্নত মুবারকই পালন করলেন। তবে এখনো একটি সুন্নত মুবারক অনাদায়ী রয়ে গেল। মুবারক স্বপ্ন দেখার পর তিনি চিন্তা-ফিকির করতে লাগলেন, কোন সুন্নত মুবারক বাকী রয়েছে। পরে ফিকিরে আসলো- নব্বই বছর বয়স মুবারক হয়েছে তবুও নিকাহ বা শাদী মুবারক করা হয়নি। তাই তিনি পরবর্তীতে পর পর দুটি নিকাহ মুবারক করলেন। সুবহানাল্লাহ!
একদিনের ঘটনা। তিনি জানতে পারলেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চামড়ার দস্তরখানে খাবার রেখে খেয়েছেন। সেদিনই তিনি বাজার থেকে চামড়ার দস্তরখানা কিনে আনলেন। পরক্ষণে এই চিন্তা-ফিকির করতে লাগলেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সেই দস্তরখানা মুবারকের রং কেমন ছিল?
তাহক্বীক্ব বা যাচাই বাছাই করে জানতে পারলেন যে, সেই দস্তরখানা মুবারক ছিল খয়েরী রংয়ের। তখন তিনি উনার দস্তরখানার রং খয়েরী করে নিলেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত মুবারকের প্রতি গভীর মুহব্বত ও পরিপূর্ণ ইত্তিবা অনুসরণ-অনুকরণের কারণে হাবীবুল্লাহ তথা মহান আল্লাহ পাক উনার সর্বাধিক প্রিয় ব্যক্তিত্ব লক্বব মুবারকে মাশহূর হয়েছেন। তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার সাথে সাথে উনার পবিত্র কপাল মুবারকে কুদরতীভাবে স্বর্ণাক্ষরে লিখা উঠেছে-
هٰذَا حَبِيْبُ اللهِ مَاتَ فِىْ حُبِّ الله.
অর্থ: “উনি মহান আল্লাহ পাক উনার সর্বাধিক প্রিয় বন্ধু। তিনি উনার মুহব্বত মুবারকে বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (তাযকিরাতুল আউলিয়া) (চলবে)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য যা আবশ্যিকভাবে করণীয়
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)