সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (১৪)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ১৪ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৫ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ১১ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার খিদমত মুবারকের আঞ্জাম:
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অশ্রুসিক্ত নয়নে বললেন, ক্বিয়ামতের দিন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে এবং হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের সবাইকে স্ব স্ব রওজা শরীফ থেকে উঠানো হবে। উনাদের কাঁধ মুবারকের উপর কম্বল থাকবে। প্রত্যেক কম্বলে কম বেশি এক লক্ষ সুতা লাগানো থাকবে। প্রত্যেক সুতায় কমবেশি এক লক্ষ গীট থকবে। উনাদের মুরীদান, স্ত্রী, পুত্র-কন্যাসহ সকল আহাল-ইয়াল এবং বংশধরগণ সেই সুতা ধরে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত, যতক্ষণ পর্যন্ত না হাশরের কঠিন হাঙ্গামা থেকে মুক্তি না পাবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে পুলসিরাতে পৌঁছাবেন এবং স্বীয় শায়েখ ও মুর্শিদ ক্বিবলা উনার সাথে এই ত্রিশ হাজার বছরের পথ (পুলসিরাত) ঐ কম্বল ধরে থাকার বরকতে চোখের পলকে পার হয়ে যাবে। আর সম্মানিত জান্নাতের দরজায় পৌঁছে বিনা দ্বিধায় তথায় প্রবেশ করবে। কোথাও কোন বাঁধার সম্মুখীন হবে না। সুবহানাল্লাহ! (দলীলুল আরিফীন-৮৪)
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, কুতুবুল বাররি ওয়াল বাহার, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন, “যে ব্যক্তি মুহব্বত ও সম্মানের সাথে কোন হক্কানী-রব্বানী আলিম কিংবা ওলীআল্লাহ উনার চেহারা মুবারকের দিকে দৃষ্টি করে মহান আল্লাহ পাক তিনি তার জন্য একজন ফেরেশতা পয়দা করে দেন, যিনি ক্বিয়ামত পর্যন্ত তার জন্য দোয়া-প্রার্থনা করতে থাকবেন। ”
তিনি ইহাও বলেছেন- যে ব্যক্তি কোন হক্কানী-রব্বানী আলিম কিংবা ওলীআল্লাহ উনাকে মনে-প্রাণে মুহব্বত করবে তার আমল নামায় হাজার বছরের ইবাদত-বন্দেগীর ছওয়াব লিখিত হয়। আর সেই অবস্থায় তার ইন্তিকাল হলে হক্কানী-রব্বানী আলিম ও ওলীআল্লাহগণ উনাদের সাথে তার হাশর নশর হবে। ” সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ফকীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, “একদিন এক ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে হাজির হলেন। বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ! ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
كيف تقول فى رجل احب قوما ولـم يلحق بهم قال الـمرء مع من احب
অর্থ: “সেই ব্যক্তির ফায়সালা কি, যে কাউকে মুহব্বত করে কিন্তু উনার মত আমল করতে পারে না। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি যাকে মুহব্বত করবে তার সাথে তার হাশর-নশর হবে। ” (বুখারী শরীফ)
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন, “এক ব্যক্তি হক্কানী-রব্বানী আলিম এবং পীর-মাশায়িখগণকে খারাপ জানত। উনাদের কোন খিদমত মুবারক করতো না। উনাদের সাথে সবসময় শত্রুতা পোষণ করতো। উনাদেরকে দেখলে বিদ্বেষের কারণে মুখ ফিরিয়ে নিতো। সে ব্যক্তি একদিন মারা গেল। তার চেহারা বাম দিকে বাঁকা হলো। তাকে কবরে রাখার পর তার মুখ ক্বিবলার দিকে করানোর চেষ্টা করা হলো। কিন্তু কোনক্রমেই মুখ ক্বিবলার দিকে ফিরানো গেলো না। এভাবে অনেক কোশেশ করা হলো কিন্তু কোন ফল হলো না।
এক সময় গায়েবী আওয়াজ আসলো, কেন তাকে কষ্ট দিচ্ছ? দুনিয়াতে সে হক্কানী-রব্বানী আলিম ও পীর-মাশায়িখগণ উনাদেরকে খারাপ জানতো। উনাদের কোন কথা-বার্তা গ্রাহ্যই করতো না। উনাদেরকে দেখলে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিত। আর সেই কারণে সে লা’নতগ্রস্থ হয়েছে।
আজ আমি আমার রহমত থেকে তাকে বঞ্চিত করেছি। তার চেহারাকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিয়েছি। তাকে কবর হতে ভাল্লুকের চেহারা বিশিষ্ট করে হাশরের ময়দানে হাজির করাবো। নাউযুবিল্লাহ! (তাযকিরাতুল আউলিয়া-৪/২৩৪)
রিয়াদ্বাত-মাশাক্কাত:
মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মা’রিফাত, মুহব্বত, তায়াল্লুক, নিছবত মুবারক হাছিলের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মাঝে কিছু মৌলিক গুণাবলী থাকা আবশ্যক। তার মধ্যে বিশেষ একটি গুণ হচ্ছে কষ্ট সহিষ্ণু ও কর্তব্যপরায়ন হওয়া। আরামপ্রিয়, কর্তব্য কাজে গাফিল ব্যক্তি কখনো জীবনের অভিষ্ট লক্ষে পৌঁছতে পারে না। এরূপ ব্যক্তি রিয়াদ্বত-মাশাক্কাত করতে পারে না। রিয়াদ্বত-মাশাক্কাত শুরু করলেও তাতে ইস্তিক্বামত (অবিচল) থাকতে পারে না।
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “এ পথে রিয়াদ্বত-মাশাক্কাত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রিয়াদ্বত-মাশাক্কাত ব্যতীত কোন কিছুই হাছিল হয় না। পরিপূর্ণ কামিয়াবী হাছিল করতে হলে অবশ্যই রিয়াদ্বত-মাশাক্কাত করতে হবে। ” (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সকল কাফিররাই মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৫)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৪)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১৩)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৭)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)