জীবনী মুবারক
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা শুনে বিস্মিত হতেন সমসাময়িক ইমাম-মুজতাহিদগণ
, ০৭ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২২ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ২০ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ০৫ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সর্বজনমান্য, স্বীকৃত, গ্রহণযোগ্য ও বিখ্যাত ইমাম, মুজতাহিদ এবং আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা উনাদের স্ব স্ব কিতাবে তা উল্লেখ করেছেন।
উল্লেখ্য যে, চার মাযহাবের ইমামগণের মধ্যে তিনিই শুধু তাবিয়ী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। বাকী তিনজন ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা কেউই তাবিয়ী ছিলেন না। আর উছূলে হাদীছ শরীফের কিতাবগুলোতে উল্লেখ আছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ক্বওল শরীফ, পবিত্র ফে’ল শরীফ এবং তাকরীর শরীফ বা সম্মতি মুবারককে যেমন হাদীছ শরীফ বলা হয় তেমনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এবং তাবিয়ীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের কথা মুবারক, কাজ মুবারক এবং সম্মতি মুবারককেও হাদীছ শরীফ বলা হয়। (মুকাদ্দিমাতুল মিশকাত শরীফ- শায়েখ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী, নুখবাতুল ফিকির)
ইমামুল মুহাদ্দিছীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার জগতে কত যে বিস্ময়কর অবস্থানে ছিলেন তা আলোচ্য ঘটনা থেকে সহজেই অনুধাবন করা যায়। সর্বজনমান্য এবং বিশ্বখ্যাত মুহাদ্দিছ হযরত মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত এবং বিশ্বসমাদৃত কিতাব “মানাকিবুল ইমামিল আ’যম” উনার মধ্যে উল্লেখ করেছেন যে, একদিন ইমামুল মুহাদ্দিছীন, ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত ইমাম আ’মাশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উভয়ে একটি মজলিসে উপস্থিত ছিলেন। জনৈক ব্যক্তি একটি মাসয়ালা জিজ্ঞাসা করলেন। ইমামুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তার জাওয়াব দিলেন। জাওয়াব শুনে হযরত ইমাম আ’মাশ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, আপনি এই মাসয়ালা কোথায় পেয়েছেন?
ইমামুল মুহাদ্দিছীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তৎক্ষণাত বললেন-
انت حدثتنا عن حضرت ابى صالح عن حضرت ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم کذا. وانت حدثتنا عن حضرت ابى اياس عن حضرت ابن مسعود الانصارى رضى الله تعالى عنه، وانت حدثتنا عن حضرت ابى وائل عن حضرت عبد الله رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم کذا. وانت حدثتنا عن مجلز عن حذيفة بن اليمان رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم كذا وانت حدثتنا عن ابى الزبير عن حضرت جابر رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلی الله عليه وسلم کذا
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা শুনে বিস্মিত হয়ে হযরত ইমাম আ’মাশ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন-
حسبك ما حدثتك به فى مائة يوم حدثتنى به فى ساعة واحدة.
অর্থাৎ যথেষ্ট হয়েছে। আমি আপনাকে একশত দিনে যা বর্ণনা করেছি, আপনি আমাকে তা এক মুহূর্তে শুনিয়ে দিলেন। অতঃপর বললেন-
يا معشر الفقهاء انتم الاطباء ونحن الصيادلة وانت ايها الرجل اخذت بكلا الطرفين
অর্থাৎ- “হে ফুক্বাহায়ে কিরামের দল! আপনারা হলেন চিকিৎসক। আমরা হলাম ঔষধ বিক্রেতা দোকানদার। আর আপনি (ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি) উভয় দিকেরই ইলিম আহরণ করেছেন।
তিনি ইমামুল মুহাদ্দিছীন তথা মুহাদ্দিছগণ উনাদের ইমাম:
ইমামুল মুহাদ্দিছীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হচ্ছেন ইমামুল মুহাদ্দিছীন। তদানীন্তন সময়ে সকল মুহাদ্দিছীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের সকলেরই পরম সম্মানিত ইমাম ছিলেন তিনি। দৈনিক আল ইহসানে বিগত পর্বগুলোতে আলোচিত উনার সম্মানিত উস্তাদ উনার বর্ণনা দ্বারা সকলের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।
উনার বিশিষ্ট ছাত্র সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বর্ণনা দ্বারা আরো স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, ইমামুল মুহাদ্দিছীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যখন কোনো মাসয়ালা বলতেন, তখন আমি কুফায় পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার শায়েখগণের কাছে যেতাম।
আর ইমামুল মুহাদ্দিছীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সিদ্ধান্তের সমর্থক হাদীছ শরীফগুলো সংগ্রহ করতাম।
তারপর পবিত্র হাদীছ শরীফগুলো উনাকে এই উদ্দেশ্যে শুনাতাম যে, তিনি অত্যন্ত খুশি হবেন। কিন্তু যখন হাদীছ শরীফগুলো শুনানো শেষ হতো, তখন তিনি বলতেন, অমুক হাদীছ শরীফ বর্ণনাকারীর মধ্যে ত্রুটি আছে। অমুক হাদীছ শরীফ বর্ণনাকারী রাবী দ্বঈফ। অমুক হাদীছ শরীফ সম্পর্কে কথা আছে। তাই কোনোটিই দলীলযোগ্য নয়। সাথে সাথে তিনি ইহাও বলতেন যে-
انا عالـم بعلم اهل الكوفة
অর্থাৎ কুফার অধিবাসীগণের ইলিম সম্পর্কে আমি সম্যক অবহিত। (স্মারক গ্রন্থ-১১৩)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (৩০)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)