সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ
, ২৬ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৭ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ০৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ২৪ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
আত্মীয়দের মধ্যে হযরত উছমান ইবনে মাজউন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আহলিয়া হযরত খাওলা বিনতে হাকীম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে নিবেদন করেন যে, তিনি হযরত বিনতু যাম‘য়া আলাইহাস সালাম উনাকে নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ করবেন কিনা। নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই প্রস্তাবে সম্মতি মুবারক দেন।
হযরত খাওলা বিনতে হাকীম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, অতঃপর আমি সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার নিকট গিয়ে বললাম- যদি মহান আল্লাহ পাক আপনাদের উপর খায়র ও বরকত বর্ষণ করেন, তাহলে কেমন হবে? তিনি উত্তর দিলেন- তা কি? আমি বললাম নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে আপনার নিকট পাঠিয়েছেন, আপনার সাথে পবিত্র নিসবাতুল আযীম শরীফ উনার প্রস্তাব নিয়ে। তিনি উত্তর দিলেন- আমি ইহা অত্যধিক পছন্দ করি, কিন্তু আপনি আমার পিতার নিকট গিয়ে বিষয়টি উল্লেখ করুন। আমি উনার পিতার নিকট গিয়ে দেখতে পেলাম, তিনি একজন অতি বৃদ্ধ লোক, লোহার আসনের উপর বসে আছেন। আমি জাহেলী যুগের নিয়মে উনাকে সম্ভাষণ করলাম- انعم صباحا (সুপ্রভাত)। তিনি বললেন- আপনি কে? আমি বললাম- খাওলা। তিনি আমাকে অভিনন্দন জানিয়ে যা ইচ্ছা করলেন বললেন। আমি বললাম- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আপনার মেয়ের সাথে পবিত্র নিসবাতুল আযীম শরীফ উনার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বললেন- হ্যাঁ, তিনি তো সম্মানিত কুফূ (অর্থাৎ সর্বাধিক উপযুক্ত সমকক্ষ), তবে আপনার সাথী (অর্থাৎ সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম) তিনি কি বলেন, তা উনাকে জিজ্ঞেস করুন? আমি বললাম- আমি উনাকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনি ইহা পছন্দ করেছেন। অতঃপর তিনি বললেন- তাহলে উনাকে আপনি গিয়ে বলুন, তিনি যেন আমার বাড়ীতে মুবারক তাশরীফ আনেন।
অতঃপর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার পিতা হযরত যাময়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বাড়ীতে তাশরীফ মুবারক আনেন। হযরত যাময়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নিজেই এই নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ পড়িয়ে দেন। হিজরতের ৩ বছর পূর্বে পবিত্র ২৬ মাহে রমাদ্বান শরীফ ইছনাইনিল আযীম শরীফ এই পবিত্র নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ অনুষ্ঠিত হয়।
পবিত্র নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার ভাই হযরত আবদুল্লাহ বিন যাময়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি যখন বাড়ী এসে দেখেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উনার বোনের নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ অনুষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে, তিনি আফসুস করে উনার নিজ মাথায় ধূলা নিক্ষেপ করেন (কারণ এ সময় পর্যন্ত তিনি ইসলাম গ্রহণ করেননি)। পরে যখন তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন, তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমি তখন এতই নির্বোধ ছিলাম যে, আমি আমার মাথায় এ জন্য ধুলা নিক্ষেপ করেছিলাম যে, আমার বোনের নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে হয়েছে। এই বর্ণনা থেকে বুঝা যায় সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার পিতা হযরত যাময়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-ই উনার নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উনার ব্যবস্থা করেছেন। (শরহে যুরক্বানী আলাল মাওয়াহিব)
অতঃপর হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের খিদমত মুবারক, হুজরা শরীফ উনার তত্ত্বাবধান এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রশান্তির জন্য তাৎক্ষণিকভাবে উনাকে পবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মাঝে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি এককভাবে উম্মুল মু’মিনীন হিসাবে হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। অবশ্য হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আম্মাজান হযরত ফাতিমা বিনতু আসাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি ও সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ উনাদের দেখা শোনা করতেন।
-সাঈদ আহমদ গজনভী
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য যা আবশ্যিকভাবে করণীয়
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (২৭)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আউলিয়ায়ে কিরাম উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে হবে
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তাওয়াক্কুল তথা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ভরসা করার ফযীলত
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)