সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আহলু বাইতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল কারামত মুবারক
, ০৭ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৪ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৭ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আখাছছুল খাছ দয়া, দান-ইহসান মুবারকে উম্মাহর জন্য খাছ করে মহিলাদের জন্য বেমেছাল রহমত-বরকত মুবারক নিয়ে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি পবিত্র ৭ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফে দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ!
যিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নন। এছাড়া সমস্ত মর্যাদা-মর্তবা মুবারক, ফযীলত মুবারক উনাদের মহাসম্মানিতা মালিকা আলাইহাস সালাম।
উনার পবিত্র ছোহবত মুবারকে যারাই আসেন এবং উনাকে মুহব্বত করেন, উনারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে বেমেছাল নিয়ামত, রহমত, বরকত মুবারক লাভ করে থাকেন এবং অসংখ্য মহাসম্মানিত কারামত মুবারক অবলোকন করে থাকেন। যা সাধারণ মানুষের চিন্তা-ফিকিরেরও উর্ধ্বে। তিনি যে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কত বড় মনোনীত মাহবূবা তা উনার মহাসম্মানিত কারামত মুবারক উনাদের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠে। উনার অসংখ্য-অগণিত কারামত মুবারকসমূহের মধ্যে কয়েকটি মহাসম্মানিত কারামত মুবারক উল্লেখ করা হলো-
কারামত মুবারক (১)
একজন পীরবোনের অনেক ইচ্ছা তিনি উনার মেয়েকে পবিত্র রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার বালিকা মাদ্রাসায় (ভর্তি করাবেন) পড়াবেন। কিন্তু উনার আহাল কিছুতেই সম্মতি দিচ্ছিল না। প্রায় ৪ বছর সেই পীরবোন তিনি উনার আহালকে বুঝিয়েছেন। তবুও উনার আহাল রাজি হচ্ছিল না। হঠাৎ একরাতে পীরবোন স্বপ্নে দেখেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি সেই পীরবোনের ঘরে মহাসম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন। তখনও সেই পীরবোন তিনি খুব চিন্তিত ছিলেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি সেই পীরবোনকে চিন্তিত দেখে উনার মহাসম্মানিত কোল মুবারকে নিয়ে ইরশাদ মুবারক করলেন, এতো চিন্তা করো না। ইনশাআল্লাহ! এই বছরেই তোমার মেয়ে (পবিত্র দরবার শরীফ উনার বালিকা মাদ্রাসায়) ভর্তি হবে। এই স্বপ্ন দেখার ঠিক এক সপ্তাহ পর সেই পীরবোনের আহাল তিনি নিজ ইচ্ছায় উনার মেয়েকে পবিত্র রাজারবাগ শরীফ উনার বালিকা মাদ্রাসায় ভর্তি করান। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য, সেই পীরবোন কিন্তু সরাসরি কিংবা স্বপ্নে উনার এই বিষয়টি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নিকট প্রকাশ করেননি।
কিন্তু সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি অত্যন্ত দয়া-দান ইহসান মুবারক করে উনার মহাসম্মানিত কারামত মুবারক উনার মাধ্যমে তা পূরণ করে দিয়ে সেই পীরবোনকে চিন্তা মুক্ত করে; বেমেছাল ইতমিনান মুবারক দান করেন। এভাবেই তিনি সকল সালিক-সালিকাদের আরজী পূরণ করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
কারামত মুবারক (২)
২০০৮ সালে শান্তিবাগের এক পীরবোনের মৃত সন্তান হয়। উক্ত পীরবোনের বড় বোন সেই মৃত সন্তানকে তোয়ালের মধ্যে করে কোলে নিয়ে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারকে নিয়ে আসেন দেখানোর জন্য। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি সেই মৃত সন্তানের সমস্ত শরীর হাত-পা সহ ভালোভাবে দেখলেন কিন্ত তার ঠোঁটদুটো শক্তভাবে মিলিত থাকার কারণে মুখের ভিতরটা দেখা যাচ্ছিল না। তখন তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, সবই তো দেখা হল কিন্তু মুখের ভিতরটা দেখা গেল না। সাথে সাথে সেই মৃত শিশুর মুখ হা হয়ে যায় এবং মুখের ভিতরটা স্পষ্ট দেখা যায়। সুবহানাল্লাহ!
এই অবস্থা প্রত্যক্ষ করে সেই মৃত সন্তানকে কোলে নিয়ে থাকা পীরবোন তিনি কাঁপতে শুরু করেন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি মুচকি হাসি মুবারক দিয়ে বলেন, দাঁড়াও; অপেক্ষা করো! সাইয়্যিদাতুনা হযরত শাহযাদীদ্বয় আলাইহিমাস সালাম উনাদেরকে ডেকে নিয়ে আসি। এ কথা মুবারক বলে তিনি চলে যান। তিনি যাওয়ার পর সাথে সাথেই আবার সেই সন্তানের মুখ পূর্বের মত মিলিত হয়ে যায়। পুনরায় যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত শাহযাদীদ্বয় আলাইহিমাস সালাম উনাদেরকে নিয়ে তাশরীফ মুবারক আনেন, তখন আবার উক্ত মৃত সন্তান তার মুখ হা করে। সুবহানাল্লাহ! এই আশ্চর্যজনক মহাসম্মানিত কারামত মুবারক দেখে উপস্থিত সকলেই হতবাক/বাকরূদ্ধ হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত জবান মুবারক উনার কথা মুবারক শুনে মৃত সন্তানও প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। কাজেই সকলের জন্য আবশ্যক হলো, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সমস্ত মহাসম্মানিত আদেশ-নিষেধ মুবারক যথাযথভাবে পালন করা।
কারামত মুবারক (৩)
আমাদের একজন পীরবোন তিনি খুব অসুস্থ ছিলেন। কয়েকজন বিশেষজ্ঞ মহিলা ডাক্তারকে দেখালে তারা অনেক ঔষধ খেতে বলেন। ঔষধ খেয়ে উনার পেট ব্যাথা দূর হয়নি। প্রচন্ড ব্যাথায় তিনি কাতর হয়ে মনে মনে সাইয়্যিদাতুন নিসায়িল আলামীন, উম্মুল খ¦ইর, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে স্বরণ করছিলেন। এ অবস্থায় তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। তিনি একটি মুবারক স্বপ্ন দেখেন। তিনি দেখেন, সেই পীরবোনকে বলা হচ্ছে, আপনি রহমত মুবারক উনার নিকট যান। তিনি রহমত মুবারক উনার নিকট গেলেন। তিনি দেখলেন রহমত মুবারক তো স্বয়ং সাইয়্যিদাতুন নিসায়িল আলামীন, উম্মুল খ¦ইর, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি কুল-উম্মাহর জন্য এক মহান রহমত মুবারক। যার কারণে উনার অসংখ্য লক্বব মুবারক উনার মধ্যে অন্যতম একখানা লক্বব মুবারক হচ্ছেন, রহমাতুল্লিল আলামীন অর্থাৎ সমস্ত আলমের রহমত মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
কারামত মুবারক (৪)
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার একজন পীরবোন তিনি একবার ঢাকা আসেন। ঢাকাতে এসে পীরবোনের হাতের একটি স্বর্নের চুড়ি হারিয়ে যায়। ব্যথিত হৃদয়ে পীরবোন তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারকে বিষয়টি পেশ করেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি দয়া-ইহসান মুবারক করে সেই পীরবোনকে বলেন, ইনশাল্লাহ্ চুড়ি পেয়ে যাবে। পীরবোন তা’লীম-তালক্বীন নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিজ বাড়ীতে চলে যান। তিনি উনার ঘরে প্রবেশ করে তিনি অত্যন্ত আশ্চর্য হয়ে দেখতে পেলেন যে উনার বিছানায় বালিশের উপর উনার সেই হারানো স্বর্ণের চুড়িটি দেখা যাচ্ছে। সুবহানাল্লাহ!
কারামত মুবারক (৫)
নরসিংদীর একজন পীরবোনের টনসিল হয়েছিল। তিনি খুব কষ্ট অনুভব করছিলেন। স্বপ্নে তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে দেখেন। পীরবোন তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারকে টনসিলের বিষয়টি জানালে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি সেই পীরবোনকে মুখ হা করতে বলেন। মুখ হা করলে তিনি মহাসম্মানিত ফু মুবারক দেন। ঘুম থেকে উঠে সেই পীরবোন তিনি পূর্ণ সুস্থতা লাভ করেন। সুবহানাল্লাহ!
-আহমদ হুসাইন
মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)