সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিছালী মুবারক প্রকাশ দিবস ও প্রাসঙ্গিক কথা
, ১৭ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৯ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ২৮ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
নূরে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল উলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনিও এই উপত্যকায় ছিলেন। দীর্ঘ তিন বছর পর্যন্ত উনারা এই উপত্যকায় অবস্থান মুবারক করেন। প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে অতি সন্তর্পনে সেখানে খাদ্য পৌঁছান হতো। কতিপয় হƒদয়বান ব্যক্তি কোন কোন সময় উটে করে খাদ্য সরবরাহ করে যেতেন। তবে প্রয়োজনের তুলনায় সে খাদ্য খুবই সামান্য ছিল। অনেক সময় খাদ্য না পৌঁছার কারণে উনাদেরকে না খেয়ে থাকতে হতো। খাদ্য পৌঁছতে না দেয়ার কারণে কোন কোন সময় উনাদেরকে গাছের পাতাও খেতে হয়েছিল। পবিত্র নবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১০ম বছরে উনারা শিবে আবী তালেব থেকে বের হয়ে আসেন। সুবহানাল্লাহ!
শিবে আবু তালিব থেকে বের হওয়ার পরপরই সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল উলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মারিদ্বী শান মুবারক জাহির হন। অবশেষে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল উলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি পবিত্র ১৭ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুস সাবত শরীফ পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তখন উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক হয়েছিলেন ৬৪ বছর ৬ মাস ৩ দিন।
হযরত উম্মে আইমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা ও হযরত উম্মুল ফদ্বল রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে গোসল মুবারক প্রদান করেন। পবিত্র মক্কা শরীফ উনার হাজুন নামক স্থানে যেখানে জাদ্দু রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রওযা শরীফ উনার সামান্য দূরে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার রওযা শরীফ স্থাপন করা হয়। এই রওযা শরীফ উনার দূরত্ব বায়তুল্লাহ শরীফ থেকে ১ মাইল উত্তর দিকে অবস্থিত। বর্তমানে ইহাকে জান্নাতুল মু‘য়াল্লা বলা হয়।
সার্বিকভাবে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী সম্মান তো রয়েছেই, উপরস্তু সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল উলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার এককভাবে উনার অনেক অনন্য-সাধারণ বৈশিষ্ট-গুণাবলী ও ফাযায়েল-ফযিলত মুবারক ছিলেন। তিনি ছিলেন প্রথম ঈমান আনয়নকারী। সেই হিসাবে হাদীছ শরীফ অনুযায়ী-
فَلَهَا أَجْرُهَا وَ أجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا إلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ
অর্থাৎ উনার নেক আমলের ছওয়াব তো উনি পাবেনই, উপরন্তু ক্বিয়ামত পর্যন্ত যত লোক ইসলাম উনার উপর থেকে নেক আমল করবেন সকলের অনুরূপ নেক আমলের ছওয়াবও তিনি পাবেন (শরহে আল্লামা যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব)।
ইসলাম গ্রহণের পর সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল উলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সমুদয় ধন-সম্পদ মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রচার ও প্রসারের জন্য ওয়াক্ফ করে দেন। উনার বিশাল ধন সম্পদ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মক্কা শরীফে অবস্থানকালীন সময়ে দীন ইসলাম উনার বিরাট খিদমতে কাজে লাগে।
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল উলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি পঁচিশ বছর পর্যন্ত নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুয়ূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ছোহবত মুবারকে কাটান এবং একমাত্র হযরত আন নুরুর রাবী (হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম) আলাইহিস সালাম ব্যতীত নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত সকল আওলাদই উনার পবিত্র হুজরা শরীফে বিলাদতি শান মুবারক প্রকাশ করেন।
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল উলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেছেন,
وَ اللهِ مَا أبدلنى اللهُ خَيْرًا مِنْهَا: آمَنَتْ بِىْ حِيْنَ كَفَرَ النَّاسُ، وَ صَدَقَتْنِىْ إذْ كَذَّبَنِىَ النَّاسُ، وَاسَطْنِىْ بِمَالِهَا إذْ حَرَّمَنِىَ النَّاسُ، وَ رَزَقَنِىَ اللهُ مِنْهَا الْوَلَدُ دُوْنَ غَيْرِهَا مِنَ النِّسَاءِ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! মহান আল্লাহ পাক আমাকে যেসব নিয়ামত দান করেছেন, তম্মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বোত্তম। মানুষ যখন কুফরী করেছে, তখন তিনি আমার উপর ঈমান এনেছেন, মানুষ যখন আমার উপর মিথ্যারোপ করেছে, তিনি তখন আমাকে সত্য বলে সাক্ষ্য দান করেছেন, মানুষ যখন আমাকে মাহরুম করতে চেয়েছে, তিনি আমাকে উনার ধন সম্পদ দিয়ে খিদমত করেছেন। আর উনার মাধ্যমেই মহান আল্লাহ পাক আমাকে আওলাদ হাদিয়া মুবারক করেছেন, যা তিনি আমাকে অন্য কারো মাধ্যমে দেননি। (মুসনদে ইমাম আহমদ রহমতুল্লাহি আলাইহি)।
মুসলিম শরীফের একটি হাদীছ শরীফে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন,
إنى قد رُزقتُ حبها
অর্থাৎ খালিক, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার অন্তরে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল উলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার জন্য মহব্বত মুবারক সৃষ্টি করে দিয়েছেন (মুসলিম শরীফ)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সকল কাফিররাই মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৫)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৪)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১৩)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৭)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)