সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, বাহরুল উলূম, নূরে মদীনা, আফদ্বালুন নিসা, ফক্বীহাতুন নিসা, রাহনুমায়ে দ্বীন, আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম, মাশুকায়ে ইলাহী, হাদীয়ে যামান, ছহিবাতু ইলমে গইব, ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুন নিসা, মুত্বহ্হারাহ্, মুত্বহ্হিরাহ্,
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহামূল্যবান নছীহত মুবারক থেকে সংগৃহীত (৫৩)
মহিমান্বিত দশ দিন ও দশ রাত্রি (পর্ব-১২)
, ০৭ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৭ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ২৬ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ১২ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
عَنْ حَضْرَتْ عَبَّاسِ بْنِ مِرْدَاسٍ رَضِىَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ اَنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَعَا لِاُمَّتِه عَشِيَّةَ عَرَفَةَ بِالْمَغْفِرَةِ فَاُجِيْبَ عَنِّىْ قَدْ غَفَرْتُ لَـهُمْ مَا خَلَا الْمَظَالِمَ فَإِنِّي اٰخِذٌ لِلْمَظْـلُـوْمِ مِنْهُ. قَالَ أَيْ رَبِّ إنْ شِئْتَ أَعْطَيْتَ الْمَظْلُوْمَ مِنَ الْجَنَّةِ وَغَفَرْتَ لِلظَّالِمِ فَلَمْ يُجَبْ عَشِيَّتَه فَلَمَّا أَصْبَحَ بِالْمُزْدَلِفَةِ أَعَادَ الدُّعَاءَ فَأُجِيْبَ إِلٰى مَا سَأَلَ. قَالَ فَضَحِكَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْ قَالَ تَبَسَّمَ فَقَالَ لَه أَبُوْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَعُمَرُ ابْنُ الْخَطَّابِ عَلَيْهِ السَّلَامُ بِأَبِىْ أَنْتَ وَأُمِّىْ إنَّ هٰذِه لَسَاعَةٌ مَا كُنْتَ تَضْحَكُ فِيْهَا فَمَا الَّذِىْ أَضْحَكَكَ أَضْحَكَ اللّٰهُ سِنَّكَ. قَالَ إنَّ عَدُوَّ اللّٰهِ إبْلِيْسَ لَمَّا عَلِمَ أَنَّ اللّٰهَ عَزَّ وَ جَلَّ قَدِ اسْتَجَابَ دُعَائِىْ وَغَفَرَ لِاُمَّتِىْ أَخَذَ التُّـرَابَ فَجَعَلَ يَحْثُوْهُ عَلٰى رَأْسِه وَيَدْعُوْ بِالْوَيْلِ وَالثُّبُوْرِ فَأَضْحَكَنِىْ مَا رَأَيْتُ مِنْ جَزْعِه. (ابن ماجة)
অর্থ: হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরাফার দিন বিকালে উম্মতের মাগফিরাতের জন্য দোয়া মুবারক করলেন। সেই দোয়া মুবারক কবুল করা হলো। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আমি জালেম ব্যতীত তাদের সকলকেই ক্ষমা করে দিয়েছি। নিশ্চয়ই আমি মজলুমের পক্ষ থেকে জালেমকে পাকড়াও করব। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, হে বারে ইলাহী! যদি আপনি চান বা ইচ্ছা করেন তাহলে মজলুমকে জান্নাত দান করতে পারেন এবং জালেমকেও ক্ষমা করতে পারেন। সেদিন বিকালে এর উত্তর দেওয়া হয়নি। (পরের দিন) যখন মুজদালিফায় সকাল অতিবাহিত করলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পুনরায় সেই দোয়া মুবারক করলেন। তিনি যা প্রার্থনা করলেন, তা কবুল করা হলো অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি এই দোয়া মুবারক কবুল করলেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূরুশ শাহাদাত মুবারক তথা হাসি মুবারক দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, অথবা তিনি নূরুত তাক্বরীর তথা মুচকি হাসি মুবারক দিলেন। তখন আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনারা উভয়ে বললেন, আমাদের পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক। এটা এমন সময়, যে সময়ে আপনার হাসি মুবারক দেওয়ার কথা নয়। মহান আল্লাহ পাক আপনাকে সর্বদাই খুশি রাখুন অর্থাৎ আপনি সর্বদাই খুশি থাকুন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার শত্রু ইবলিস শয়তান যখন জানতে পারল যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার দোয়া মুবারক কবুল করেছেন এবং আমার উম্মতকে ক্ষমা করেছেন, তখন সে (ইবলিস) মাটি নিল এবং তা তার মাথায় মাখতে থাকল অর্থাৎ মাটি তার মাথার উপর নিক্ষেপ করল। সে চিৎকার করে ডাকতে থাকল, ধ্বংস! ধ্বংস!! তার এরূপ অস্থিরতা দেখেই আমার এই নূরুত তাক্বরীর মুবারক বা হাসি মুবারক”। সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ শরীফ)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরাফার দিন উনার বান্দাদেরকে ক্ষমা করে দিলে তো শয়তান আর তাদেরকে জাহান্নামে নিতে পারবেনা- এটাই শয়তানের অস্থিরতার কারণ।
অন্য মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে-
عَنْ حَضْرَتْ طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ بْن ِكَرِيْزٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا رُئِيَ الشَّيْطَانُ يَوْمًا هُوَ فِيْهِ أَصْغَرُ وَلَا أَدْحَرُ وَلَا أَحْقَرُ وَلَا أَغْيَظُ مِنْهُ فِيْ يَوْمِ عَرَفَةَ وَمَا ذَاكَ إِلَّا لِمَا يُرٰي مِنْ تَنَزُّلِ الرَّحْمَةِ وَتَجَاوُزِ اللهِ عَنِ الذُّنُوْبِ الْعِظَامِ إِلَّا مَا رُئِىَ يَوْمَ بَدْرٍ. فَقِيْلَ وَمَا رُئِىَ يَوْمُ بَدْرٍ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ فَاِنَّه قَدْ رَأٰى جِبْرَئِيْلَ عَلَيْهِ السَّلَامْ يَزَعُ الْمَلَائِكَةَ.(مالك ابن مؤطأ)
অর্থ: হযরত ত্বলহা ইবনে উবায়দুল্লাহ ইবনে কারিয রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “শয়তান বদরের দিন ছাড়াও মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত নাযিল হতে এবং মহান আল্লাহ পাক উনাকে বড় বড় গুনাহখতা গুলো ক্ষমা করতে দেখার কারণে আরাফার দিন শয়তানকে অপমানিত, ধিকৃত, হীন এবং রাগান্বিত হতে দেখা গিয়েছে। বলা হলো, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বদরের দিন কী দেখা গিয়েছে? তিনি বললেন, সে (শয়তান) দেখেছে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে একত্রিত করেছেন”।
অর্থাৎ বদরের দিন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে বদর প্রান্তে জিহাদ করার জন্য সারিবদ্ধ করতে দেখে শয়তান যেরূপ লাঞ্ছিত-অপমানিত হয়েছে, তদ্রুপ আরাফার দিনেও সে মহান আল্লাহ পাক উনাকে রহমত নাযিল করতে এবং বান্দার গুনাহখতাগুলো ক্ষমা করতে দেখে লাঞ্ছিত, অপমানিত হয়।
এজন্য মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ رَحْمَةُ اللّٰه عَلَيْهِ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ جَدِّه أَنَّ النَّبِي صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ خَيْرُ الدُّعَاءِ دُعَاءُ يَوْمِ عَرَفَةَ. (روى الترمذي)
অর্থ: হযরত আমর বিন শুয়াইব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার পিতা থেকে, তিনি উনার দাদা থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “শ্রেষ্ঠ দোয়া হচ্ছে আরাফার দিনের দোয়া”।
কাজেই, আরাফার দিন মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে নিজের কামিয়াবীর জন্য, সর্বত্র পবিত্র দ্বীন-ইসলাম উনার বিধি-বিধান, হুকুম-আহকাম জারী হওয়ার জন্য এবং বাতিল ফিরকা, কাফির-মুশরিকদের ধ্বংসের জন্য দোয়া করতে হবে। আর যে ব্যক্তি আরাফার দিন দোয়া-ইস্তেগফার করবে সে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট ক্ষমা এবং সন্তুষ্টি মুবারক প্রাপ্ত হবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন বিভিন্ন প্রকারের সুন্নতী খাবার ‘খেজুর’
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মধু
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মাঠা (লাবান)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঠান্ডা ও মিঠা পানি পান করা মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার যব ও যবের রুটি
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)