সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, বাহরুল উলূম, নূরে মদীনা, আফদ্বালুন নিসা, ফক্বীহাতুন নিসা, রাহনুমায়ে দ্বীন, আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম, মাশুকায়ে ইলাহী, হাদীয়ে যামান, ছহিবাতু ইলমে গইব, ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুন নিসা, মুত্বহ্হারাহ্, মুত্বহ্হিরাহ্,
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহামূল্যবান নছীহত মুবারক থেকে সংগৃহীত (৫৩)
মহিমান্বিত দশ দিন ও দশ রাত্রি (পর্ব-১১)
, ০৬ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৬ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ২৫ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ১১ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
কুরবানীর গোশত বণ্টনের নিয়ম:
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
يَسْتَحِبُّ التَّصَرُّفُ ثُلُثٌ لِنَفْسِه ثُلُثٌ هَدْيَةٌ ثُلُثٌ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِيْنَ اِنْ كَانَتْ تَطَوُّعًا فَاِنْ كَانَتْ وَصِيَّةً يَتَصَدَّقُ بِجَمِيْعِهَا
অর্থ: কুরবানীকৃত পশুর গোশতের তিন ভাগের এক ভাগ নিজের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনের জন্য আর আরেক ভাগ গরিব-মিসকীনদের জন্য বণ্টন করা মুস্তাহাব সুন্নত; যদি কুরবানী নফল বা ওয়াজিব হয়। আর যদি কুরবানী মানতের হয় তাহলে পুরোটাই গরিব-মিসকীনদেরকে দান করে দিবে”।
উল্লেখ্য, কুরবানীদাতার সামর্থ্য থাকলে এভাবে গোশত বণ্টন করবে। অন্যথায় ঈদের দিনসহ পরবর্তী তিন দিন অর্থাৎ পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ উনার ১০, ১১, ১২ ও ১৩ তারিখে পরিবার-পরিজন বা অধিনস্থদেরকে তৃপ্তি সহকারে কুরবানীর গোশত খাওয়াবে।
আরাফার দিনের খুছূছিয়ত মুবারক:
পবিত্র সূরা ফজর শরীফ উনার ৩নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার শেষাংশে বলা হয়েছে-
وَالْوَتْرِ ﴿٣﴾
অর্থ: “কসম বিজোড়ের”।
এখানে, বিজোড় দ্বারা আরাফার দিন উদ্দেশ্য। আরাফার দিন সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ أَنَّه قَرَأَ اَلْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَ اَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِيْ وَرَضِيْتُ لَكُمُ الْاِسْلَامَ دِيْنًا وَعِنْدَه يَهُوْدِيٌّ فَقَالَ لَوْ نَزَلَتْ هٰذِهِ الْاٰيَةُ عَلَيْنَا لَاتَّخَذْنَاهَا عِيْدًا قَالَ اِبْنُ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَإِنَّـهَا نَزَلَتْ فِيْ يَوْمِ عِيْدَيْنِ فِيْ يَوْمِ جُـمُعَةٍ وَيَوْمِ عَرَفَةَ.
অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই তিনি পাঠ করছিলেন এই পবিত্র আয়াত শরীফ- “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের সম্মানিত দ্বীন উনাকে পরিপূর্ণ করলাম, তোমাদের উপর আমার নিয়ামত মুবারক পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য ইসলাম উনাকে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করে সন্তুষ্ট হলাম”। তখন উনার কাছে একজন ইহুদী বসা ছিল। সেই ইহুদী ব্যক্তি বলল, যদি এই আয়াত শরীফ আমাদের ধর্মে নাযিল হত, তাহলে আমরা নাযিলের দিনটিকে ঈদ হিসেবে ঘোষণা করতাম। হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, অবশ্যই এই পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হয়েছে ‘জুমুয়া এবং আরাফা’ দুই ঈদের দিনে”। (তিরমিযী শরীফ)
অতএব বুঝা যায়, আরাফার দিনও মুসলমান উনাদের ঈদ সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি ঈদ।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ سَيِّدَتنَا حَضْرَتْ اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ اِنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا مِنْ يَوْمٍ أَكْثَرَ مِنْ أَنْ يُعْتِقَ اللّٰهُ فِيْهِ عَبْدًا مِنَ النَّارِ مِنْ يَوْمِ عَرَفَةَ وَإِنَّه لَيَدْنُوْ ثُمَّ يُبَاهِيْ بِهِمُ الْمَلَائِكَةَ فَيَقُوْلُ مَا أَرَادَ هٰؤُلَاءِ.
অর্থ: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আরাফার দিনের চেয়ে এমন কোনো দিন নেই, যেদিন মহান আল্লাহ পাক তিনি জাহান্নাম থেকে বিপুল সংখ্যক বান্দাকে মুক্তি দান করেন এবং নিশ্চয়ই তিনি (সেদিন বান্দাদের) অধিক নিকটবর্তী হন অর্থাৎ রহমত মুবারক বর্ষণ করেন। অতঃপর তিনি বান্দাদের নিয়ে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের কাছে ফখর করে বলেন, আমার এই বান্দারা কি চায়?” (মুসলিম শরীফ)
মূলত: মহান আল্লাহ পাক তিনি এই দিন যারা স্বীয় রব মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত-বন্দেগীতে মশগুল থাকে তাদের অতি নিকটবর্তী হন, তাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন এমনকি তাদের প্রতি সন্তুষ্ট মুবারকও হন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য যা আবশ্যিকভাবে করণীয়
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (২৭)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আউলিয়ায়ে কিরাম উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে হবে
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তাওয়াক্কুল তথা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ভরসা করার ফযীলত
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)