সম্মানিত হিজরী তৃতীয় সনে রাজী’র জিহাদ ও মর্মান্তিক ঘটনা (১০)
, ০৩ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২০ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ১৮ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০২ অগ্রহায়ণ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) আইন ও জিহাদ
يَا عَيْنُ جُودِي بِدُفَعِ مِنْك مُنْسَكِبِ ... وَأَبْكِي حَضْرَتْ خُبَيْبًا رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ مَعَ الْفَتَيَانِ لَمْ يَؤُبْ صَقْرًا تَوَسّطَ فِي الْأَنْصَارِ مَنْصِبَهُ ... سَمْحَ السّجِيّةِ مَحْضًا غَيْرَ مُؤْتَشِبِ
হে চোখ! অশ্রু বহাও অবিশ্রান্ত ধারায়। হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জন্য কাঁদো, মর্যাদায় তিনি ছিলেন হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মধ্যমণি। আর অত্যন্ত উদার চরিত্রের এবং নির্ভেজাল কুলীন। সুবহানাল্লাহ!
قَدْ هَاجَ عَيْنِي عَلَى عِلّاتِ عَبْرَتُهَا ... إذْ قِيلَ نُصّ إلَى جِذْعٍ مِنْ الْخَشَبِ
কেঁদে কেঁদে তো আমার চোখ শুকিয়ে গেছে, কিন্তু যখন বলা হলো, হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে শূলে চড়ানো হয়েছে, তখন আবার সে শুকনো চোখে অশ্রুর জোয়ার এলো।
يَا أَيّهَا الرّاكِبُ الْغَادِي لِطِيّتِهِ ... أَبْلِغْ لَدَيْك وَعِيدًا لَيْسَ بِالْكَذِبِ
হে ভোরের যাত্রী! তুমি সে ইতরাতের নিকট আমার এ বার্তা পৌঁছে দাও, যা মিথ্যা নয়।
بَنِي كُهَيْبَةَ أَنّ الْحَرْبَ قَدْ لَقِحَتْ ... مَحْلُوبَهَا الصّابُ إذْ تُمْرَى لِمُحْتَلِبِ
হে বানী কুহাইবাহ! নিশ্চয়ই জিহাদের আগুন জ্বলবেই এবং দুধ হবে হানজাল (ফল) অপেক্ষাও তিতা, যখন দোহনকারী তা দোহাবে।
فِيهَا أُسُودُ بَنِي النَّجّارِ تَقْدُمُهُمْ ... شُهُبُ الْأَسِنّةِ فِي مُعْصَوْصَبٍ لَجِبِ
সে জিহাদে নাজ্জার গোত্রের অনেক সিংহ থাকবে, যাদের সামনে থাকবে উল্কাপিন্ডতুল্য তীর ও তরবারিধারী এক বিশাল সেনাবাহিনী। (সীরাতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি, দালায়িলুন নুবুওওয়াহ)
হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আরোও বলেন-
لَوْ كَانَ فِي الدّارِ قَرَمٌ مَاجِدٌ بَطَلُ ... أَلْوِي مِنْ الْقَوْمِ صَقْرٌ خَالُهُ حَضْرَتْ أَنَسٌ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ
যদি এ জনবসতিতে সম্প্রদায়ের কোন মর্যাদাবান ও সাহসী ব্যক্তি থাকতো! বাজ পাখির মত ক্ষীপ্র হতেন তিনি আর উনার আক্রমণ এবং যিনি হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ভাগ্নে,
إذَنْ وَجَدْتَ حَضْرَتْ خُبَيْبًا رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ مَجْلِسًا فَسِحًا ... وَلَمْ يُشَدّ عَلَيْكَ السّجْنُ وَالْحَرَسُ
তাহলে হে হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনি পেতেন এক প্রশান্ত অবস্থান। কেউ আপনাকে বন্দী করতে আসতো না এবং আপনি অন্তরীণ হতেন না।
وَلَمْ تَسُقْك إلَى التّنْعِيمِ زَعْنَفَةٌ ... مِنْ الْقَبَائِلِ مِنْهُمْ مَنْ نَفَتْ عُدَسُ
আপনাকে তানয়ীম নামক স্থানে টেনে হেঁচড়ে নিতে পারত না, সেই সব লোক যারা নিজেদের মিথ্যা বংশ পরিচয় দেয় (তারা বলে আমরা আদাস গোত্রীয়) অথচ আদাস গোত্রের প্রধান পুরুষরা তাদের অস্বীকার করে।
دَلّوكَ غَدْرًا وَهُمْ فِيهَا أُولُو خُلُفٍ ... وَأَنْتَ ضَيْمٌ لَهَا فِي الدّارِ مُحْتَبَسٌ
তারা আপনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আসলে বিশ্বাসঘাতকতাই তাদের চরিত্র। আহা! বন্দী অবস্থায় আপনিতো তাদের মাঝে অসহায় হয়ে পড়েন। (আর রওদ্বুল উন্ফ্, সীরাতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি)
হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সঙ্গে হুযাইল গোত্রের লোকেরা যে আচরণ করেছিল, সে সম্পর্কে হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি তাদের প্রতি নিন্দা জানিয়ে বলেন-
أَبْلِغْ بَنِي عَمْرٍو بِأَنّ أَخَاهُمْ ... شَرَاهُ امْرِئِ قَدْ كَانَ لِلْغَدْرِ لَازِمَا
বানূ আমরকে জানিয়ে দাও, নিশ্চয়ই তাদের লোককে এমন এক লোক বিক্রি করেছে, বিশ্বাসঘাতকতা করাই যার চরিত্র।
شَرَاهُ زُهَيْرُ بْنُ الْأَغَرّ وَجَامِعٌ ... وَكَانَا جَمِيعًا يَرْكَبَانِ الْمَحَارِمَا
উনাকে বিক্রি করেছে যুহাইর ইবনে আগার ও জামি’, অন্যায় অপরাধে লিপ্ত হওয়াই তাদের চরিত্র।
أَجَرْتُمْ فَلَمّا أَنْ أَجَرْتُمْ غَدَرْتُمْ ... وَكُنْتُمْ بِأَكْنَافِ الرّجِيعِ لَهَاذِمَا
তোমরা তাদের নিরাপত্তা দিলে, কিন্তু পরে নিরাপত্তা দিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করলে। তোমরা রাজী’র প্রান্তরে ঘাপটি মেরে ছিলে শাণিত তরবারি হাতে নিয়ে।
فَلَيْتَ حَضْرَتْ خُبَيْبًا رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ لَمْ تَخُنْهُ أَمَانَةٌ ... وَلَيْتَ حَضْرَتْ خُبَيْبًا رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ كَانَ بِالْقَوْمِ عَالِمَا
হায়! হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি যদি বিশ্বাসঘাতকতার শিকার না হতেন। হায়! তিনি যদি শক্রদের সম্পর্কে ওয়াকিফহাল থাকতেন। (সীরাতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি, আর রওদ্বূল উন্ফ্) (চলবে)
-আল্লামা সাইয়্যিদ শাবীব আহমদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৮)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৬)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৭)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৫)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৪)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৩)
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (২)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (১)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১০)
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৩)
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)