সম্মানিত সারিয়্যাতুল র্কুরা বা বি’রে মাঊনাহ উনার ঘটনা (৪)
, ১৯ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৪ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ০২ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ১৮ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) আইন ও জিহাদ
كَانَ يَقُولُ مَنْ رَجُلٌ مِّنْهُمْ لَمَّا قُتِلَ رَأَيْتُهٗ رُفِعَ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ حَتّٰى رَأَيْتُ السَّمَاءَ مِنْ دُوْنِهٖ؟ قَالُوْا هُوَ حَضْرَتْ عَامِرُ بْنُ فُهَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ
অর্থ: “আমির ইবনে তুফাইল (লোকদেরকে) জিজ্ঞাসা করছিল, আমি সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশকারী উনাদের মধ্যে একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে দেখলাম যে, উনাকে আকাশে উঠিয়ে নেয়া হচ্ছে এবং তিনি যেতে যেতে এক সময় চোখের আড়াল হয়ে গেলেন, তিনি কে ছিলেন? লোকেরা বলল, তিনি ছিলেন হযরত আমির ইবনে ফুহাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি।” সুবহানাল্লাহ!
বানূ সুলামীর সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের কারণ প্রসঙ্গে বলা হয়, হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, জাবার ইবনে সালমা ইবনে মালিক ইবনে জা’ফর খান্দানের জনৈক ব্যক্তি আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, কাট্টা কাফির ও ঘাতক আমিরের সাথে যোগদানকারীদের একজন ছিলেন হযরত জাবার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। তিনি পরবর্তীকালে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বলতেন, যে ঘটনাটি আমাকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করেছে তা এই যে, বি’রে মাঊনাহ উনার ঘটনার দিন আমি বর্শা দিয়ে উনাদের মধ্যে এক ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার দু’কাঁধের মাঝখানে আঘাত করি। উনার বক্ষ মুবারক ভেদ করে বর্শাটি যখন বের হয়ে আসলো, তখন আমি শুনতে পাই, তিনি বলছেন, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমি সফল হয়েছি। আমি এ কথা শুনে মনে মনে বললাম, উনার কিসের সাফল্য। তিনিতো আমার হাতে সম্মানিত শাহাদাত মুবারক গ্রহণ করলেন। পরে আমি অনেকের কাছে উনার এ উক্তি বর্ণনা করি। তারা আমাকে বলল, উনার সাফল্য হচ্ছে, সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক গ্রহণ করা। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি মুবারক নিয়ে বিদায় গ্রহণ করা। সুবহানাল্লাহ! আমি বিষয়টি উপলব্ধি করলাম, হ্যাঁ মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! এ সাফল্য তথা কামিয়াবী হচ্ছে হাক্বীক্বী কামিয়াবী। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বারা’র সন্তানদেরকে কাট্টা কাফির আমির ইবনে তুফাইলের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করে তোলার জন্য নিম্নোক্ত কবিতা আবৃত্তি করেন-
بَنِي أُمّ الْبَنِينَ أَلَمْ يَرْعَكُمْ ... وَأَنْتُمْ مِنْ ذَوَائِبِ أَهْلِ نَجْدٍ
হে উম্মুল বানীন- এর পুত্ররা! তোমরা নাজদের শীর্ষস্থানীয় লোক হয়েও লক্ষ্য করলে না-
تَهَكُّمُ عَامِرٍ بِأَبِي بَرَاءٍ.... .... لِيَخْفِرَهُ وَمَا خَطَأٌ كَعَمْدِ
আমির ইবনে তুফাইল কি আচরণ করল আবূ বারা’র সাথে? তারতো ইচ্ছাই ছিল আবূ বারা’র প্রতিশ্রুতির অবমাননা করা। ইচ্ছাজনিত অপরাধ কি অনিচ্ছাকৃত অন্যায়ের সমান হতে পারে?
أَلَا أَبْلِغْ رَبِيعَةَ ذَا الْمَسَاعِي ... فَمَا أَحْدَثْتَ فِي الْحَدَثَانِ بَعْدِي
সাবধান! সম্মানিত পুরুষ রবীআকে সংবাদ পৌঁছাও। শুনে তিনি বলবেন, আমার পরে তোমরা এ কি নতুন নিয়ম উদ্ভাবন করলে?
أَبُوك أَبُو الْحُرُوبِ أَبُو بَرَاءٍ ... وَ خَالُكَ مَاجِدٌ حَكَمُ بْنُ سَعْدِ
তোমার পিতা আবূ বারা’ ছিলো একজন লড়াকু ব্যক্তি। আর তোমার মামা হাকাম ইবনে সা’দ ছিলেন অত্যন্ত সম্মানিত লোক। (দালায়িলুন নুবুওওয়াহ, আল মু’জামুল কাবীর লিত-ত্ববারানী, সীরাতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি, উয়ূনুল আছার, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলক)
হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার অত্র কবিতায় উল্লেখ্য হাকাম ইবনে সা’দ ও উম্মুল বানীনের সম্পর্কে বলা হয়।
হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হাকাম ইবনে সা’দ হচ্ছে, কাইন ইবনে জাসর গোত্রের লোক। আর উম্মুল বানীন বলতে আমর ইবনে আমির ইবনে রাবীআ ইবনে আমির ইবনে ছা’ছা’য়াহ-এর কন্যাকে বোঝানো হয়েছে। তিনি ছিলেন, আবূ বারা’র মাতা। যার নাম ছিল লায়লা।
হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, রাবীআ ইবনে আমির ইবনে মালিক নামক এক ব্যক্তি সে একদিন আমির ইবনে তুফাইলের উপর আক্রমণ চালায়। এক আঘাতে তাকে খুন করতে গিয়ে ভুলবশতঃ তিনি আঘাত করে বসেন তার উরুতে। কিন্তু সে মারাত্মক আহত অবস্থায় ঘোড়ার পিঠ থেকে পড়ে যায়। সে বলে উঠে, এটা আবূ বারা’-এর কাজ। আমি যদি এতে মারা যাই, তবে আমার রক্তের দায়ী আমার চাচার অধিকারে থাকল। আর যদি বেঁচে যাই, তবে আমার করণীয় আমিই দেখব। (চলবে)
-আল্লামা সাইয়্যিদ শাবীব আহমদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৮)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৬)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৭)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৫)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৪)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৩)
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (২)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (১)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১০)
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৩)
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)