সম্মানিত মুতার জিহাদ মুবারক (৯)
, ১৯ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১০ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ০৯ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ২৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) আইন ও জিহাদ
এই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ সম্মানিত মুসলমান উনাদের ৩ জন সম্মানিত সেনাপতি এবং ৯ জন সম্মানিত মুজাহিদ অর্থাৎ মোট ১২ জন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আর অপরদিকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা হাজার হাজার কাফিরদেরকে কচুকাটা করে জাহান্নামে পাঠিয়ে দিয়ে সম্মানিত বিজয়ী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা কতো হাজার হাজার কাফিরদেরকে নিশ্চিহ্ন করে জাহান্নামে পাঠিয়ে দিয়েছেন এ বিষয়টি উপলদ্ধির জন্য সাইফুল্লাহিল মাসলূল হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার একখানা ক্বওল শরীফই যথেষ্ট। হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নিজে বলেছেন, সম্মানিত মুতার জিহাদ মুবারক উনার দিন উনার হাত মুবারক-এ ৯টি তরবারী ভেঙ্গেছে। শুধু একটি ছোট সাইজের ইয়েমেনী তরবারী অবশিষ্ট ছিলো। এ সম্পর্কে ‘ছহীহ বুখারী শরীফসহ’ অন্যান্য কিতাবে উল্লেখ রয়েছেন,
عَنْ حضرت خَالِدِ بْنِ الْوَلِيدِ رضي الله تعالى عنه قال لَقَدِ انْقَطَعَتْ فِي يَدِي يَوْمَ مُؤْتَةَ تِسْعَةُ أَسْيَافٍ فَمَا بَقِيَ فِي يَدِي إِلَّا صَفِيحَةٌ يَمَانِيَةٌ
অর্থ: “হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সম্মানিত মুতার জিহাদ মুবারক উনার দিন আমার হাত মুবারক-এ ৯টি তরবারী ভেঙ্গেছে। এরপর আমার হাতে একটি ইয়েমেনী ছোট তরবারী অবশিষ্ট ছিলো।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ্, মুসনাদে আবী ইয়া’লা, ফাদ্বাইলুছ ছাহাবাহ্ ইত্যাদি)
যদি শুধু হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার হাত মুবারক-এ এই সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার দিন ৯টি তরবারী ভাঙে, তাহলে ৩ জন সেনাপতিসহ আরো অন্যান্য হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের বীরত্ব মুবারক কিরূপ ছিলো? তাহলে এই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ কত সংখ্যক কাফির নিশ্চিহ্ন হয়ে জাহান্নামের পথে পাড়ি জমিয়েছে সেটা আর বলার অপেক্ষাই রাখে না। যার কারণে পরিশেষে যে সমস্ত কাফির জীবিত ছিলো তারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের ভয়ে পালিয়ে যেয়ে কোনো রকমে প্রাণে বেঁচেছে। ২ লাখেরও অধিক কাফিরদের বিরুদ্ধে মাত্র ৩ হাজার সৈন্য উনাদের এই বিশাল বিজয় এবং কাফিরদের এরূপ অপমানজনক কঠিন পরাজয় বিশ্ববাসী আর কখনও কি দেখেছে? না; কস্মিনকালেও না।
এই ছিলো হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের বীরত্ব মুবারক। যার কারণে কাফির-মুশরিকরা উনাদের নাম মুবারক শুনলে ভয়ে তাদের অন্তর আত্মা কেঁপে উঠতো। সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার ময়দানে উনাদের সম্মানিত চেহারা মুবারক দেখলে কাফিররা ময়দান ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়তো। জোর পূর্বক পায়ে শিকল বেঁধে তাদেরকে যুদ্ধের ময়দানে আটকিয়ে রাখা হতো। আর সম্মানিত মুসলমান উনাদের এই বীরত্ব মুবারক উনার মূল উৎস মুবারক হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মুহব্বত মুবারক, নিসবত-কুরবত মুবারক। এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মুহব্বত মুবারক, নিসবত-কুরবত মুবারক উনার কারণেই সম্মানিত মুসলমান উনারা সারা পৃথিবীর মালিক হয়েছেন এবং যতদিন পর্যন্ত সম্মানিত মুসলমান উনারা এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মুহব্বত মুবারক, নিসবত-কুরবত মুবারক ধরে রাখতে পেরেছেন, ততদিন পর্যন্ত উনারা সারা পৃথিবীতে মহাপ্রতাপের সাথে কর্তৃত্ব মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! যখন থেকে মুসলমানরা সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মুহব্বত মুবারক, নিসবত-কুরবত মুবারক থেকে দূরে সরে গেছে, তখন থেকে তারা কাফিরদের পা চাটা গোলামে পরণিত হয়েছে। আর কাফিরদের গোলাম হওয়ার কারণে তারা সারা পৃথিবীর সেই মালিকানা হারিয়ে ফেলেছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! সম্মানিত মুসলমান উনারা যদি আবারও সারা পৃথিবীর সেই মালিকানা ফিরে পেতে চান, তাহলে উনাদের জন্য আবশ্যক হচ্ছেন- হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা যেমন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মুহব্বত মুবারক-এ উনাদের মাল-জান, সময় সমস্ত কিছু বিলীন করে দিয়েছেন সেই অনুসরণে সকলের মাল-জান, সময় সমস্ত কিছু বিলীন করে দেয়া।
সেটাই মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন,
فَإِنْ آمَنُوا بِمِثْلِ مَا آمَنْتُمْ بِهِ فَقَدِ اهْتَدَوْا
অর্থ: “যদি পরবর্তী উম্মত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে ঈমান আনতে পারে, তাহলেই তারা হাক্বীক্বী হিদায়াত লাভ করতে পারবে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারাহ্ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩৭)
কাজেই সম্মানিত মুসলমান উনাদের জন্য আবশ্যক হচ্ছে- হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মুহব্বত মুবারক-এ নিজেদের মাল-জান, সময় সমস্ত কিছু বিলীন করে দেয়া।
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে ক্ববূল করুন। আমীন!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৪)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৩)
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (২)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (১)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১০)
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৩)
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত বনু কায়নুকার জিহাদ (৪)
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত বনু কায়নুকার জিহাদ (৩)
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সম্মানিত বনু কায়নুকার জিহাদ (২)
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (৯)
০৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)