সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রচার-প্রসারে পবিত্র বাইতুল মাল উনার গুরুত্ব ও তাৎপর্য (৩)
, ২৩ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৬ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০৫ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ২১ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
لِيُنفِقْ ذُوْ سَعَةٍ مِّنْ سَعَتِهِ ۖ وَمَنْ قُدِرَ عَلَيْهِ رِزْقُهُ فَلْيُنفِقْ مِمَّا اٰتَاهُ اللهُ لَا يُكَلِّفُ اللهُ نَفْسًا إِلَّا مَا اٰتَاهَا ۚ سَيَجْعَلُ اللهُ بَعْدَ عُسْرٍ يُّسْرًا
অর্থ: বিত্তশালী ব্যক্তি তার বিত্ত অনুযায়ী ব্যয় করবে। যে ব্যক্তি তার রিযিকের ব্যাপারে সংকীর্ণতা অনুভব করে সে যেন মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে যা দিয়েছেন, তা থেকে ব্যয় করে। মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে যা দিয়েছেন, তদপেক্ষা বেশী ব্যয় করার আদেশ কাউকে করেন না। মহান আল্লাহ পাক কষ্টের পর সুখ দেবেন। (পবিত্র সূরা ত্বলাক্ব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)
পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, সুলত্বানুন নাছীর ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি সুমহান সুন্নত পালনার্থে বিশ্বব্যাপী প্রতিটি জেলা, উপজেলা, থানা পর্যায়ে মসজিদ মাদরাসা স্থাপনের ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক নির্দেশে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন পবিত্র মসজিদে নববী শরীফসহ অসংখ্য পবিত্র মসজিদ। যে পবিত্র সম্মানিত মসজিদসমূহ ক্বিয়ামত পর্যন্ত সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বুনিয়াদী নিদর্শন ও গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে আলোকিত থাকবে। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عُثْمَانَ بْنُ عَفَّانٍ ذِى النُّوْرَيْنَ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ سَـمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ مَنْ بَنَى مَسْجِدًا لِلّٰهِ بَنَى اللهُ لَه فِي الْـجَنَّةِ مِثْلَه
অর্থ: হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার জন্য একটি মসজিদ তৈরি করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ ব্যক্তির জন্য জান্নাতে একটি বালাখানা তৈরি করে দিবেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ)
অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ، قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. إِنَّ مِـمَّا يَلْحَقُ الْمُؤْمِنَ مِنْ عَمَلِهِ وَحَسَنَاتِهٖ بَعْدَ مَوْتِهٖ عِلْمًا عَلَّمَهُ وَنَشَرَهُ وَوَلَدًا صَالِـحًا تَرَكَهُ وَمُصْحَفًا وَرَّثَهُ أَوْ مَسْجِدًا بَنَاهُ أَوْ بَيْتًا لِّاِبْنِ السَّبِيْلِ بَنَاهُ أَوْ نَـهْرًا أَجْرَاهُ أَوْ صَدَقَةً أَخْرَجَهَا مِنْ مَّالِهٖ فِيْ صِحَّتِهٖ وَحَيَاتِهٖ يَلْحَقُهُ مِنْ بَعْدِ مَوْتِهٖ
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মু’মিন উনার ইন্তিকালের পর উনার যে নেক আমলসমূহের ছওয়াব তিনি লাভ করতে থাকেন তা হচ্ছে- ইলিম যা তিনি শিক্ষা করেছেন এবং প্রচার করেছেন। নেক সন্তান যাকে তিনি দুনিয়ায় রেখে গিয়েছেন। পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার নুসখাহ, যা তিনি মিরাছস্বরূপ রেখে গেছেন। মসজিদ যা তিনি নির্মাণ করেছেন। মুসাফিরখানা যা তিনি সফরকারীদের জন্য তৈরী করেছেন। পানির জন্য যে কূপ খনন করেছেন এবং উনার সুস্থ এবং জীবিত অবস্থায় উনার মাল হতে যা কিছু দান করেছেন। সমস্ত কিছুই উনার আমলনামায় ছদকায়ে জারিয়াহ হিসেবে পৌঁছতে থাকবে। সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, বাইহাক্বী শরীফ, তাফসীরে কুরতুবী শরীফ)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার উম্মত উনাদেরকে বেশী বেশী পবিত্র মসজিদ, মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে এবং ইসলামী কিতাবাদী প্রকাশ, প্রচার-প্রসার করে সুন্নত আদায় করার মাধ্যমে বেশুমার ফযীলত-বরকত লাভ করতে এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে বুলন্দ করার বিষয়ে তাগিদ দিয়েছেন। কাজেই, প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক হচ্ছে, এই মহাসম্মানিত সুন্নত আদায় করার লক্ষ্যে মহান নেক কাজ তথা ছদকায়ে জারিয়ায় সার্বিকভাবে অংশগ্রহণ করতঃ মুসলিম উম্মাহর ঈমান-আক্বীদা ও আমল বিশুদ্ধ করার কাজে আর্থিকভাবে শরীক হওয়া। আর এই জন্য গঠন করা হয়েছে বাইতুল মাল। সুবহানাল্লাহ!
মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি যে কোটি কোটি কোটি মসজিদ, মাদরাসা, গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করবেন এবং কোটি কোটি কিতাবাদী প্রকাশ করবেন, সে মহান ছদকায়ে জারিয়ায় শরীক হওয়ার অন্যতম সুযোগ এই বাইতুল মাল। যা পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে সমাজের সকল মুসলমানের জন্য বাইতুল মালে শরীক হওয়ার মহান সুযোগ সর্বদা উন্মুক্ত। এছাড়াও বাইতুল মাল সমস্ত নেক কাজে ব্যবহার করা যায় বলে মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন। তাই যারা এই বাইতুল মালে শরীক থাকবেন তারা কোটি কোটি মসজিদ, মাদরাসা, গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা এবং কোটি কোটি কিতাবাদী প্রকাশ, প্রচার ও প্রসারের বেমেছাল ছদকায়ে জারিয়ার ফযীলত হাছিল করতে পারবেন বিনা সন্দেহে। যা ক্বিয়ামত পর্যন্ত জারী থাকবে। অর্থাৎ যারাই বাইতুল মালে শরীক থাকবেন, প্রত্যেকেই অনন্তকালব্যাপী ছদকায়ে জারিয়ার ছওয়াব লাভ করতেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি সকল মুসলমানকে হাক্বীক্বীভাবে বাইতুল মালে শরীক হওয়ার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন। (সমাপ্য)
-মীর মুহম্মদ তৈমুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সকল কাফিররাই মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৫)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৪)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১৩)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৭)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৯)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)