ইলমে তাছাওউফ
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে আদব-কায়দা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোকপাত (৩)
, ২৮ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৩ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ১১ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ২৭ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
৫. হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের সাথে আদব:
এ প্রসঙ্গে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ
অর্থ: “যে ব্যক্তি আমার প্রতি রুজু হয়েছেন উনাকে অনুসরণ করো।” (পবিত্র সূরা লুক্বমান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)
পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ عَادَ لِيْ وَلِيًّا فَقَدْ آذَنْتُهٗ بِالحَرْبِ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আমার ওলী উনার বিরোধিতা করে আমি তার বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করি।” (বুখারী শরীফ, মিশকাত শরীফ, মাছাবীহুস সুন্নাহ শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
اَحِبُّوْا اَوْلِيَاءَ اللهِ فَاِنَّـهُمْ هُمُ الْـمَقْبُوْلُوْنَ وَلَا تَبْغَضْوْهُمْ فَاِنَّـهُمْ هُمُ الْـمَنْصُوْرُوْنَ
অর্থ: “তোমরা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ওলীগণ উনাদেরকে মুহব্বত করো, নিশ্চয়ই উনারা মকবুল। আর উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করোনা, নিশ্চয়ই উনারা সাহায্যপ্রাপ্ত।” (কানযুল উম্মাল শরীফ)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা হিসেবে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মহান ওলীগণ উনাদের প্রতি এরূপ সুধারণা পোষণ করতে হবে যে, কোনো অবস্থাতেই যেন উনাদের সম্মানিত বিলায়ত মুবারকের ইহানত না হয়।
৬. ইনসান ও জিন উনাদের প্রতি পবিত্র আদব:
এ প্রসঙ্গে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَقُوْلُوْا لِلنَّاسِ حُسْنًا
অর্থ: “তোমরা মানুষের সাথে উত্তমভাবে কথা বলো।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৩)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَآتَى الْمَالَ عَلَى حُبِّهٖ ذَوِي الْقُرْبٰى وَالْيَتَامٰى وَالْمَسَاكِيْنَ وَابْنَ السَّبِيْلِ وَالسَّائِلِيْنَ وَفِي الرِّقَابِ
অর্থ: “খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতে মাল-সম্পদ দান করো নিকট আত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীন, মুসাফির, ভিক্ষুক এবং গোলামদেরকে।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৭৭)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى
অর্থ: “তোমরা পরস্পর পরস্পরকে নেকী ও পরহেযগারীর মধ্যে সাহায্য করো।” (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মুসলমান ওই ব্যক্তি যার যবান ও হাত থেকে অন্য মুসলমান উনারা নিরাপদ থাকেন।” (তিরমিযী শরীফ, নাসায়ী শরীফ, বায়হাক্বী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
অর্থাৎ খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দাগণ পরস্পর পরস্পরের প্রতি এতটুকু সুধারণা পোষণ করবে এবং সদ্ব্যবহার করবে যাতে কারো মান-সম্ভ্রম, ইজ্জত ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
৭. মাখলুক্বাত উনাদের প্রতি পবিত্র আদব:
এ প্রসঙ্গে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
هُوَ الَّذِي خَلَقَ لَكُمْ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا
অর্থ: “খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদের জন্য যমীনের সবকিছুই সৃষ্টি করেছেন।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)
আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْخَلْقُ عِيَالُ اللهِ فَأَحَبُّ الْخَلْقِ إِلَى اللهِ مَنْ أَحْسَنَ إِلَى عِيَالِهِ
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সমস্ত মাখলুক হচ্ছে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে ওই ব্যক্তি সর্বাধিক প্রিয়, যে তার পরিবারের নিকট উত্তম।”সুবহানাল্লাহ! (বায়হাক্বী শরীফ, মিশকাত শরীফ, মাছাবীহুস সুন্নাহ, মিরকাত শরীফ)
অর্থাৎ সমস্ত মাখলুক্বাত উনাদের প্রতি তার হক্ব অনুযায়ী সদাচরণ ও সদ্ব্যবহার করা দায়িত্ব ও কর্তব্য। এছাড়াও আরো অনেক প্রকার আদব রয়েছে। (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১৩)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৭)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৯)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় সম্মানিত মশহূর লক্বব মুবারক এবং এই সম্পর্কে কিছু আলোচনা
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় বেমেছাল খুছূছিয়ত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)