ইলমে তাছাওউফ
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে আদব-কায়দা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোকপাত (২)
, ২৭ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১২ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ১০ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ২৬ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
২. নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে পবিত্র আদব:
এ প্রসঙ্গে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا مُحَمَّدٌ إِلَّا رَسُولٌ
অর্থ: “খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রসূল ব্যতীত অন্য কিছু নন।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪৪)
এ প্রসঙ্গে পবিত্র আক্বাইদ উনার কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
مُـحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَبِيُّهٗ وَعَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ وَصَفِيُّهٗ وَنَقِيُّهٗ وَلَـمْ يَعْبُدِ الصَّنَمَ وَلَـمْ يُشْرِكْ بِاللهِ طَرْفَةَ عَيْنٍ قَطُّ وَلَـمْ يَرْتَكِبْ صَغِيْرَةً وَّلَا كَبِيْرَةً.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নবী এবং উনার বান্দা ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। উনার পক্ষ হতে মনোনীত ও পবিত্রতম। তিনি কখনো মূর্তিপূজা করেননি। চোখের পলকেও খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কখনো শিরক করেননি এবং কবীরা ও ছগীরা গুনাহতে লিপ্ত হননি।” সুবহানাল্লাহ! (আল ফিক্বহুল আকবর শরীফ, আকাইদে নাসাফী শরীফ)
অর্থাৎ উম্মত হিসেবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে খাতামুন নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে যেরূপ সুধারণা পোষণ করা প্রয়োজন ঠিক তদ্রƒপ সুধারণা পোষণ করা এবং উনার আদেশ-নিষেধ মুবারক উনাদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা এবং উনাকে অনুসরণ-অনুকরণ করা সকলের জন্য ফরযে আইন।
৩. হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে পবিত্র আদব:
এ প্রসঙ্গে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَنْ يَغُلَّ
অর্থ: “কোনো নবী আলাইহিস সালাম উনার পক্ষে খিয়ানত করা সম্ভব নয়।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৬১)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
مَا كَانَ لِبَشَرٍ أَنْ يُّؤْتِيَهُ اللهُ الْكِتَابَ وَالْحُكْمَ وَالنُّبُوَّةَ ثُمَّ يَقُوْلَ لِلنَّاسِ كُونُوْا عِبَادًا لِيْ مِنْ دُونِ اللهِ
অর্থ: “কোনো নবী আলাইহিস সালাম উনার পক্ষে সম্ভব নয় যে, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে পবিত্র কিতাব, পবিত্র শরীয়ত ও পবিত্র নুবুওওয়াত দিবেন। অতঃপর তিনি মানুষদেরকে বলবেন, তোমরা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত আমার ইবাদত করো।” নাউযুবিল্লাহ! (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৭৯)
উনাদের সুমহান প্রসঙ্গে পবিত্র আক্বাইদ উনার কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে-
اَلْأَنْبِيَاءُ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ كُلُّهُمْ مُنَزَّهُوْنَ عَنِ الصَّغَائِرِ وَالْكَبَائِرِ وَالْكُفْرِ وَالْقَبَائِحِ
অর্থ: “সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ছগীরা, কবীরা, কুফরী, শিরকী এমনকি অপছন্দনীয় কাজ থেকেও পবিত্র।” (আল ফিক্বহুল আকবর শরীফ)
অর্থাৎ খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা হিসেবে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি যেরূপ সুধারণা পোষণ করা প্রয়োজন ঠিক তদ্রƒপ সুধারণা পোষণ করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই এর খিলাফ আক্বীদা পোষণ করা যাবে না।
৪. হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সাথে পবিত্র আদব:
এ প্রসঙ্গে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ
অর্থ: “খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং উনারাও খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি সন্তুষ্ট।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আল বাইয়্যিনাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عُمَرَ الْفَارُوْقِ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَصْحَابِىْ كَالنُّجُومِ فَبِأَيِّهِمُ اقْتَدَيْتُمْ اِهْتَدَيْتُمْ
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা প্রত্যেকেই তারকা সদৃশ। উনাদের যে কাউকে যে কোনো ব্যক্তি অনুসরণ করবে সে হিদায়েতপ্রাপ্ত হবে।” (রযীন শরীফ, মিশকাত শরীফ, মাছাবীহুস সুন্নাহ শরীফ, মিরকাত শরীফ)
এ প্রসঙ্গে আক্বাইদের কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
اَلصَّحَابَةُ كُلُّهُمْ عُدُوْلٌ
অর্থ: “হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সকলেই ন্যায়, ইনছাফ ও সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত।” সুবহানাল্লাহ!
অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ উম্মত ও ছাহাবী হিসেবে উনার সমস্ত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি যেরূপ সুধারণা পোষণ করা প্রয়োজন তদ্রƒপ সুধারণা পোষণ করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই এর খিলাফ আক্বীদা পোষণ করা যাবে না।
(চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১৩)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৭)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৯)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় সম্মানিত মশহূর লক্বব মুবারক এবং এই সম্পর্কে কিছু আলোচনা
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় বেমেছাল খুছূছিয়ত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)