ইলমে তাছাওউফ
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে আদব-কায়দা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোকপাত (১)
, ২৬ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১১ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ০৯ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ২৫ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
অপরদিকে তরীক্বত সম্পর্কে বলা হয়েছে যে-
اَلطَّرِيْقَةُ كُلُّهٗ اَدَبٌ
অর্থ:“তরীক্বতের সবটুকুই আদব।” (মাকতুবাত শরীফ, মাদারিজুস সালিকীন)
আরো বলা হয়েছে যে-
اَلتَّصَوُّفُ كُلُّهٗ اَدَبٌ
অর্থ: “তাছাওউফ সম্পূর্ণই আদবের অন্তর্ভুক্ত।” (মাকতুবাত শরীফ, মাদারিজুস সালিকীন ইত্যাদি) আদবের গুরুত্বের প্রতি খেয়াল রেখেই আমরা এখানে যৎকিঞ্চিৎ আলোচনা করবো। প্রকৃতপক্ষে আদব শেখার কোনো শেষ নেই। যা কিছু স্বাভাবিক তাই শিখতে হবে, গ্রহণ করতে হবে।
আর আদব শিক্ষার অর্থ নিজের মধ্যে সচ্চরিত্রের সমাবেশ করা এবং তা রক্ষা করা। যার মধ্যে উত্তম স্বভাব বিদ্যমান, সে চরিত্রবান ও ভদ্র।
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يَاأَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا قُوْا أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيْكُمْ نَارًا
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেকে এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে জাহান্নাম হতে রক্ষা করো।” (পবিত্র সূরা তাহরীম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
অর্থাৎ পরিবারবর্গকে এমন আদব শিক্ষা দাও, যার ফলে তারা দোযখ হতে নিষ্কৃতি লাভ করতে পারে।
আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
حُسْنُ الْاَدَبِ مِنَ الْاِيْـمَانِ
অর্থ: “উত্তম আদব হলো পবিত্র ঈমান উনার অংশ।” অর্থাৎ উত্তম আদবই পবিত্র ঈমান।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهٗ قَالَ قَالَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَدَّبَنِيْ رَبِّيْ فَأَحْسَنَ تَأْدِيبِيْ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে আদব শিক্ষা দিয়েছেন এবং উত্তম আদব শিক্ষা দিয়েছেন।” (কানযুল উম্মাল শরীফ, ইবনুস সামআন)
কিতাবে বর্ণিত হয়েছে-
اَلْاَدَبُ خَيْرٌ مِّنَ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ
অর্থ: “আদব স্বর্ণ ও রৌপ্যের চেয়েও উত্তম ও শ্রেষ্ঠ।”
মূলকথা দুনিয়াবী হোক বা উখরবী হোক, সমস্ত কাজেই আদব ও শিষ্টতা রক্ষা করে চললে মানুষ তার মঞ্জিলে মকছূদে পৌঁছতে সমর্থ হবে।
আদব উনার শ্রেণী বিভাগ
আদব সাধারণভাবে ৯ প্রকার-
১. খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনার সাথে আদব:
এটি হচ্ছে পবিত্র তাওহীদ উনার সম্পর্কে। অর্থাৎ খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি হুসনে যন রাখা।
এ প্রসঙ্গে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ. اَللهُ الصَّمَدُ. لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ. وَلَمْ يَكُنْ لَّهٗ كُفُوًا أَحَدٌ.
অর্থ: “আমার সম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এক। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বেনিয়াজ। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কারো থেকে জন্মও নেননি এবং উনার সমকক্ষও কেউ নেই।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা ইখলাছ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১-৪)
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় পবিত্র আক্বাইদের কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
اَللهُ مُنَزَّهٌ عَنْ جِسْمٍ وَعَرْضٍ وَجَوْهَرٍ وَتَصْوِيْرٍ وَتَعْدِيْدٍ وَتَبْعِيْضٍ وَتَـجْزِئٍ وَتَرْكِيْبٍ وَتَنَاهِىٍّ وَتَـحْدِيْدٍ.
অর্থ: “খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি শরীর, চওড়া বা প্রশস্ততা, পরিধি বা ব্যাস বা বস্তু, ছূরত বা আকার-আকৃতি, সংখ্যা, টুকরা, অংশ, সম্মিলিত রূপ, শেষ হওয়া, সীমা ইত্যাদি থেকে পবিত্র।” (আক্বাইদে নাসাফী)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা বা সৃষ্টি হিসেবে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে খালিক্ব বা সৃষ্টিকর্তা হিসেবে যতটুকু সুধারণা পোষণ করা প্রয়োজন ততটুকু সুধারণা পোষণ করা এবং উনার আদেশ-নিষেধ মুবারকের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা কর্তব্য। (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করার কারণে উনার দাসীকে ক্বতল বা মৃত্যুদ-
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তা’লীম গ্রহণ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৭)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সত্যের মাপকাঠি
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৯)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে কোনো স্থানেই সরাসরি বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক দ্বারা সম্বোধন মুবারক করেননি। যা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বুলন্দী শান মুবারক উনারই বহিঃপ্রকাশ মুবারক (৪)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বাইতুল্লাহ বা পবিত্র মসজিদ ও বাইতুর রসূল বা পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলিম (১)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)