সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪২)
, ১৪ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২০ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ১৮ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ০২ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
আমীরুল মু’মিনীন, ইমামুল আউওয়াল, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার বর্ণনায় খলীফাতু রসূলিল্লাহ, হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার ঈমানদীপ্ত সুমহান শান মুবারক
একবার আমীরুল মু’মিনীন, আসাদুল্লাহিল গালিব, ইমামুল আউওয়াল, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি সমবেত মু’মিন-মুসলমানদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত এক খুৎবায় বলে উঠলেন, ‘হে লোক সকল! আপনারা কি জানেন, সবচাইতে বড় বীর কে?’ শ্রোতাদের মধ্য থেকে বলা হলো; আমীরুল মু’মিনীন! আপনিই তো সবচেয়ে বড় বীর। তিনি বললেন, এটা অবশ্য ঠিক; আমার সাথে যে কেউ লড়তে এসেছে আমি তার উপরই বিজয় লাভ করেছি। তবে আপনারা খুব ভালভাবেই জেনে রাখুন, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনিই হলেন সবচাইতে বড় বীর।
ঐতিহাসিক বদরের জিহাদের দিন আমরা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক নূরে মুজাসসাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য একটি ছাউনি করে আরজ করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার নিরাপত্তার দায়িত্বে এখানে কে থাকবে? যাতে কোন কাফির মুশরিক আপনার উপর আক্রমণ করার দুঃসাহস দেখাতে না পারে। মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমাদের মধ্যে সবার আগে খোলা তরবারী হাতে দাঁড়িয়ে পড়লেন হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম। অতঃপর যখন কোন কাফির, মুশরিক আক্রমন করতে উদ্যত হত; হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সাথে সাথে ঝাপিয়ে পড়ে তাদের ইহলীলা সাঙ্গ করে দিতেন। সুবহানাল্লাহ। জেনে রাখুন! হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনিই হলেন সবচাইতে বড় বীর। মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি এও দেখেছি যখন কাফিররা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বিভিন্নভাবে কষ্ট দিতো, তখন ঐ অবস্থায় হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত কারো পক্ষে সেখানে যাওয়ার সাহস হতো না।
সে অবস্থায় হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি ইশকে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ঈমানদীপ্ত দৃঢ়তায় সম্মুখে অগ্রসর হয়ে কাফিরদের কাউকে কচুকাটা করতেন, কারো সাথে ধস্তাধস্তি করতেন, কাউকে টান দিয়ে সরিয়ে দিতেন এবং বলতেন- তোমাদের সর্বনাশ হোক! তোমরা কি মহান রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শহীদ করতে চাও এই কারণে যে, তিনি আহবান করেন এক মহান আল্লাহ পাক তিনিই আমাদের পরওয়ারদিগার?’
এই পর্যন্ত বলে আমীরুল মু’মিনীন, ইমামুল আউওয়াল, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি শরীর মুবারকের চাঁদর টেনে নিলেন এবং এত বেশি কাঁদলেন যে, উনার দাড়ি মুবারক ভিজে সেখান থেকে পানি ঝড়ে পড়ছিল। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর তিনি বললেন, আমি আপনাদের নিকট মহান আল্লাহ পাক উনার নামে শপথ করে জানতে চাই- ফিরাউনের বংশের সেই মু’মিন ব্যক্তি উত্তম, না ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম? উপস্থিত সকলে নীরব থাকলেন। অতঃপর ইমামুল আউওয়াল, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! যদি ফিরাউনের বংশের মু’মিন দ্বারা এই যমীন পরিপূর্ণ হয়ে যায় এবং তাদের সকলের সারা জীবনের কবুলকৃত নেক আমলও থাকে তবুও সেগুলো অপেক্ষা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার এক ঘণ্টাও সর্বোত্তম। এর এটাও একটা কারণ এই যে, ফিরাউনের বংশের উক্ত ব্যক্তি তার ঈমানকে গোপন রাখেন আর হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার ঈমানকে প্রকাশ করার মত প্রকাশ করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
ঈমানদীপ্ত ইবরত:
মূলত: খলীফাতু রসূলিল্লাহ, হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার ফাযায়িল-ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা, ইশকে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে উনার আত্মত্যাগের মহত্ত্ব পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফে সুস্পষ্টরূপেই বর্ণিত আছে, যা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদের সকলেই অবগত ছিলেন।
এরপরও ইমামুল আউওয়াল, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি সকলের মাঝে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার ঈমানদীপ্ত শান মুবারক সম্পর্কে আলোচনা করলেন। যাতে প্রত্যেকেই সেই সুমহান শান মুবারক অনুসরণে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতে ফানা-বাক্বা লাভ করতে পারে।
বর্তমান যামানায় ছিদ্দীক্বী শানে জান-মালের কুরবানী দিয়ে দ্বীনের পথে অটল-অবিচল রয়েছেন; মহান মুজাদ্দিদ আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম এবং উনার সম্মানিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা। উনাদের মুবারক ছোহবতের বরকতেই উম্মাহর মাঝে ফিরে আসতে পারে ছিদ্দীক্বী শান মুবারকের মহান ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য। সুবহানাল্লাহ! (সমাপ্ত)
-মুহম্মদ মুহাজিরুল ইসলাম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)