সম্মানিত ও পবিত্র রমাদ্বান শরীফে রোযাদারদের জন্য প্রতিদিন সাহরী খাওয়া মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক (১)
, ০৭ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৯ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ১৮ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ০৪ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
সম্মানিত রমাদ্বান শরীফ উনার রোযা মু’মিন-মুসলমান উনাদের উপর ফরয। মহান আল্লাহ পাক তিনি মুসলমানদেরকে পুরো রমাদ্বান শরীফ মাস রোযা পালন করার ব্যাপারে সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। যুগে যুগে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের উম্মতের উপরও পবিত্র রোযা পালন করা ফরয ছিল। সে ধারাবাহিকতায় মহান আল্লাহ পাক তিনি আখিরী উম্মতের প্রতিও সম্মানিত রমাদ্বান শরীফ উনার রোযা ফরয করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
ياأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ.
অর্থ:- ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে, যেমনিভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরয করা হয়েছিল, যাতে করে তোমরা তাক্বওয়া হাছিল করতে পারো।’ (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ, সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ- ১৮৩)
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِىٓ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْءَانُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنٰتٍ مِّنَ الْهُدٰى وَالْفُرْقَانِ ۚ فَمَنْ شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ ۖ وَمَن ْكَانَ مَرِيْضًا أَوْ عَلٰى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۗ يُرِيدُ اللهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيْدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا اللهَ عَلٰى مَا هَدٰىكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ.
অর্থ:- পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস হল সেই মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথে চলার জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাসটি পাবে, সে যেন অবশ্যই এ মাসের রোযা রাখে। আর যে ব্যক্তি অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে রোযা রেখেও গণনা পূরণ করতে পারে। মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদের জন্য সহজ চান; তোমাদের জন্য কঠিন চান না, যাতে তোমরা রোযার গণনা পূরণ কর এবং তোমাদেরকে হেদায়েত দান করার কারণে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত মহত্ত্ব মুবারক বর্ণনা কর, তাহলে অবশ্যই তোমরা কৃতজ্ঞ বান্দাহর অন্তর্ভুক্ত হবে। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ :পবিত্র আয়াত শরীফ- ১৮৫)
আর রোযা রাখার প্রথম ধাপ হচ্ছে সাহরী করা। অর্থাৎ মুসলমানগণ সাহরী করার মাধ্যমে রোযা শুরু করেন এবং ইফতারের মাধ্যমে রোযা ভঙ্গ করেন।
সাহরী শব্দটি আরবী سحر (সাহার) বা سحور (সাহুর) থেকে উদগত। সাহরী শব্দের অর্থ হচ্ছে শেষ রাত বা ভোর রাতের খাবার। সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার পরিভাষায় রোযা রাখার নিয়তে ভোর রাতে যে খাবার খাওয়া হয় তাকে সাহরী বলে।
রোযা রাখার নিয়তে সাহরী খাওয়া নূরে মুজাসসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আখাচ্ছুল খাছ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক। অর্থাৎ সাহরী খেয়ে রোযা রাখাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাধারণতঃ সাহরী মুবারক খেয়েই রোযা রাখতেন এবং মুসলমানদেরকে সাহরী খেয়ে রোযা রাখার ব্যাপারে উৎসাহিত ও নির্দেশ মুবারক করেছেন।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ قَتَادَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ حَضْرَتْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ عَنْ حَضْرَتْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ تَسَحَّرْنَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ قُمْنَا إِلَى الصَّلَاةِ قُلْتُ كَمْ بَيْنَهُمَا قَالَ قَدْرُ قِرَاءَةِ خَمْسِيْنَ آيَةً.
অর্থ:- হযরত ক্বতাদাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন, আর তিনি হযরত যায়িদ বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে সাহরী খেলাম, এরপর নামাযে দাঁড়ালাম। রাবী হযরত ক্বতাদাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, সাহরী ও নামাযের মধ্যে কত সময়ের ব্যবধান ছিল? তিনি বলেন, পঞ্চাশ সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করার পরিমাণ সময়। (বুখারী শরীফ ৫৭৫, ১৯২১, মুসলিম শরীফ ১০৯৭, তিরমিযী শরীফ ৭০৩, নাসায়ী শরীফ ২১৫৫, ২১৫৬, আহমাদ শরীফ ২১০৮৫, দারেমী শরীফ ১৬৯৫)
-মুহম্মদ আলমগীর হুসাইন মুরাদী
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মৃত ব্যক্তির কবরে তালক্বীন দেয়া খাছ সুন্নত মুবারক
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
জানাযা নামাযের হুকুম-আহকাম ও মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক (২)
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুন্নতী খাবার পরিচিতি
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
জানাযা নামাযের হুকুম-আহকাম ও মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক (১)
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র আযানের জবাব দেয়ার হুকুম-আহকাম ও খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক (১)
০৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার যব ও যবের রুটি
০৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে (নববর্ষ) বা নওরোজ পালন করা হারাম (৩)
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘হাইস’
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে (নববর্ষ) বা নওরোজ পালন করা হারাম (২)
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)