সম্মানিত উহুদ জিহাদ: (৫১ পর্ব)
, ১৮ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৯ ছানী ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ০৯ মে, ২০২৩ খ্রি:, ২৬ বৈশাখ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) আইন ও জিহাদ
হযরত ইবনে ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, কাট্টা কাফির শাদ্দাদ ইবনে আসওয়াদ সে হযরত হানযালা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশে এই কবিতা আবৃত্তি করেছিল-
لَأَحْمِيَنَّ صَاحِبِي وَنَفْسِي ... بِطَعْنَةِ مِثْلِ شُعَاعِ الشَّمْسِ
‘আমি আমার বন্ধুকে এবং আমার নিজেকে এমন বর্শা দ্বারা হিফাযত করবো, যা সূর্যের কিরণের মত ঝলমলে হবে।’
এদিকে হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সেদিন উনার ধৈর্য্য ধারণের কথা ও হযরত হানযালা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বিরুদ্ধে ইবনে শা’উবের সাহায্য করার কথা উল্লেখ করে বলেন-
وَلَوْ شِئْتُ نَجَّتْنِي كُمَيْتٌ طِمَرَّةٍ ... وَلَمْ أَحْمِلْ النَّعْمَاءَ لِابْنِ شَعُوبِ
যদি আমি চাইতাম, তবে আমার তেজস্বী সাদা-কালো ঘোড়া আমাকে উদ্ধার করে নিত। আর আমার জন্য ইবনে শা’উবের অনুগ্রহ নেয়ার প্রয়োজন হত না।
أُقَاتِلُهُمْ وَأَدَّعِي يَا لَغَالِبٍ ... وَأَدْفَعُهُمْ عَنِّي بِرُكْنٍ صَلِيبِ
আমি তাদের সাথে লাগাতার লড়তে থাকি এবং হে বানূ গালিব বলে আহ্বান করতে থাকি এবং আমি দৃঢ় শক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করি।
أَبَاكِ وَإِخْوَانًا لَهُ قَدْ تَتَابَعُوا ... وَحُقَّ لَهُمْ مِنْ عَبْرَةٍ بِنَصِيبِ
হে বানূ গালিব! আপনাদের বাপ ও ভাইদের প্রতি খুব কান্না করে নিন। যারা একের পর এক নিহত হচ্ছিলেন, (এতে কোন ভৎর্সনাকারীর ভৎর্সনার প্রতি ভ্রƒক্ষেপ করা উচিত নয়), আর না অশ্রু ঝরাতে ক্লান্ত হওয়া উচিত। কেননা উনাদের কিছু হলেও আপনাদের অশ্রুর হক্বদার ছিলেন।
وَسَلَّى الَّذِي قَدْ كَانَ فِي النَّفْسِ أَنَّنِي ... قَتَلْتُ مِنْ النَّجَّارِ كُلَّ نَجِيبِ
আর ঐসব লোকদের সান্তনা দিন, যাদের মনে একথা রয়েছে যে, আমরা বানূ নাজ্জারের সকল সম্ভ্রান্ত লোকদের কেন হত্যা করে ফেললাম।
وَمِنْ هَاشِمٍ قَرْمًا كَرِيمًا وَمُصْعَبًا ... وَكَانَ لَدَى الْهَيْجَاءِ غَيْرُ هَيُوبِ
এবং সম্মানিত বানূ হাশিমের অভিজাত এক ব্যক্তিকে কেন শাহাদাতী ঘাঁটিতে পৌঁছে দিয়েছি, যিনি ছিলেন, অত্যন্ত কঠোর এবং জিহাদের ময়দানে নির্ভয়ে লড়াইকারী (অর্থাৎ সাইয়্যিদুশ শুহাদা হযরত হামযা আলাইহিস সালাম তিনি)
وَلَوْ أَنَّنِي لَمْ أَشْفِ نَفْسِي مِنْهُمْ ... لَكَانَتْ شَجًا فِي الْقَلْبِ ذَاتَ نُدُوبِ
অথচ উনাকে শহীদ করে আমার অন্তর যদি ঠান্ডা না করে নিতাম, তবে আমার অন্তরে এমন ক্ষত থেকে যেত, যার দাগ কখনও মুছতো না। নাউযুবিল্লাহ!
হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কবিতার জবাব কবিতা মুবারকের মাধ্যমে জবাব প্রদান করেন।
হযরত ইবনে হিশার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন। হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি কবিতার জবাবে এই কবিতা মুবারক রচনা করেন-
ذَكَرْتَ الْقُرُومَ الصَّيْدَ مِنْ آلِ هَاشِمٍ ... وَلَسْتَ لِزُورٍ قُلْتَهُ بِمُصِيبِ
আপনি হাশিম বংশীয় বীর-বাহাদুর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কথা উল্লেখ করেছেন। (নিঃসন্দেহে আপনি ভুল বলেননি, সত্যিই বলেছেন।) তাই বলে আপনার ভুল কথা সত্য হতে পারে না।
أَتَعْجَبُ أَنْ أَقَصَدْتُ حَضْرَتْ حَمْزَةَ عَلَيْهِ السَّلَامِ مِنْهُمْ ... نَجِيبًا وَقَدْ سَمَّيْتَهُ بِنَجِيبِ
আপনি কি এ ব্যাপারে গর্বিত যে, আপনি হাশিম বংশীয় সাইয়্যিদুশ শুহাদা হযরত হামযা আলাইহিস সালাম উনার মত অভিজাত ব্যক্তিকে অভিজাত বলে স্বীকার করেও শহীদ করছেন?
أَلَمْ يَقْتُلُوا عَمْرًا وَعُتْبَةُ وَابْنَهُ ... وَشَيْبَةَ وَالْحَجَّاجَ وَابْنَ حَبِيبِ
বলুনতো, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা কি আমর, উতবা ও উতাইবার ছেলে শায়বা, হাজ্জাজ ও ইবনে হাবীবাকে হত্যা করেননি?
غَدَاةَ دَعَا الْعَاصِي حَضْرَتْ عَلِيًّا عَلَيْهِ السَّلَامِ فَرَاعَهُ ... بِضَرْبَةِ عَضْبٍ بَلَّهُ بِخَضِيبِ
এ ঘটনা কি সেদিন সকালের নয় যেদিন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত জিহাদ মুবারকে আহ্বান করেছিল আস। আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম তিনি তাকে এমন তরবারির আঘাতে স্তব্ধ করে দিয়েছিলেন, যা রঙ্গীন রক্তে সিক্ত হচ্ছিল?
হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন। কাট্টা কাফির ইবনে শা’উব হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বলে-
وَلَوْلَا دِفَاعِي يَا ابْنَ حَرْبٍ وَمَشْهَدِي ... لَأَلْفَيْت يَوْمَ النّعْفِ غَيْرَ مُجِيبِ
হে ইবনে হারব! আমি যদি উপস্থিত থেকে আপনাকে রক্ষা না করতাম, তবে উহুদ যুদ্ধের সময় আপনাকে এমন অবস্থায় পাওয়া যেত যে, আপনার আওয়াজ শোনার মত কোন লোকই থাকতো না।
وَلَوْلَا مَكَرّي الْمُهْرِ بِالنّعْفِ قَرْقَرْت ... ضِبَاعٌ عَلَيْهِ أَوْ ضِرَاءُ كَلِيبِ
যদি আমি উহুদ পাহাড়ে আমার ঘোড়া না ছাড়তাম, তবে শৃগাল হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার উপর চারদিক থেকে ঝাপিয়ে পড়ত এবং খেয়ে ফেলত। (চলবে)
-আল্লামা সাইয়্যিদ শাবীব
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৮)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৬)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৭)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৫)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৪)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৩)
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (২)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (১)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১০)
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৩)
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)