সম্মানিত উহুদ জিহাদ: (৩৬ পর্ব)
, ০৭ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ৩০ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ২৮শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ১৪ই ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) আইন ও জিহাদ
সম্মানিত উহুদ জিহাদের প্রথম ভাগে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশক্রমে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা কাফির মুশরিকদের নয় জন পতাকাবাহী সৈন্যকে হত্যা করেন। পরবর্তীতে শত্রুদের বিপরীত দিক থেকে আক্রমণের ফলে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু এই পরিস্থিতিতে চিন্তিত হয়ে পড়েন। এ সময় ইবলিস শয়তান চীৎকার দিয়ে মিথ্যা ঘোষণা দিচ্ছিল, ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত শাহদাতী শান মুবারক গ্রহণ করেছেন’। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! এই ঘোষণার সত্যতা নিয়ে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা চিন্তায় পড়ে যান। বর্ণনাকারী বলেন, ঐ ঘোষণা সত্য বলে আমরা বিশ্বাস করে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখতে পাই, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুই ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনাদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে উনার নূরুল হুদা তথা মহাসম্মানিত মাথা মুবারক তুলেছেন। এ সময় আমাদের এমন অবস্থা হলো যেন আমাদের কোন কিছুই হয়নি তথা খুশিতে আমাদের অন্তর ভরে গেল। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এসে আমাদের মাঝে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اشْتَدَّ غَضَبُ اللَّهِ عَلَى قَوْمٍ دَمَّوْا وَجْهَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “ঐ সম্প্রদায়ের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার কঠিন আযাব ও অসন্তুষ্টি প্রবলভাবে নেমে আসুক, যারা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরুর রহমত বা মহাসম্মানিত মুখমন্ডল মুবারক নূরুন নাজাত বা মহাসম্মানিত রক্ত মুবারক রঞ্জিত করে দিয়েছে। আবার তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন-
اللَّهمّ إِنَّهُ لَيْسَ لَهُمْ أَنْ يَعْلُونَا
অর্থ: “আয় বারে ইলাহী মহান আল্লাহ পাক! কখনও তারা যেন আমাদের উপর বিজয়ী হতে না পারে।”
বলতে বলতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের নিকট তাশরীফ মুবারক গ্রহন করেন। অতঃপর তিনি কিছুক্ষণ বিশ্রাম মুবারক গ্রহণ করলেন। (মুসনাদে আহমদ, আল জামিউছ ছহীহু লিস সুনানে ওয়াল মাছায়িদ, আল মুসনাদুল জামি’ আল ফাতহুর রব্বানী, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُسِرَتْ رَبَاعِيَتُهُ يَوْمَ أُحُدٍ، وَشُجَّ فِي رَأْسِهِ، فَجَعَلَ يَسْلُتُ الدَّمَ عَنْهُ، وَيَقُولُ: ্রكَيْفَ يُفْلِحُ قَوْمٌ شَجُّوا نَبِيَّهُمْ، وَكَسَرُوا رَبَاعِيَتَهُ، وَهُوَ يَدْعُوهُمْ إِلَى اللهِ؟গ্ধ، فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: {لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি সম্মানিত উহুদ জিহাদের দিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মুখের নূরুল্লাহ বা মহাসম্মানিত দাঁত মুবারক শাহাদাতী শান মুবারক এবং উনার নূরুল হুদা বা মহাসম্মানিত মাথা মুবারক যখমী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তিনি নিজের নূরুর রহমত বা মহাসম্মানিত মুখমন্ডল মুবারক থেকে নূরুন নাজাত তথা মহাসম্মানিত রক্ত মুবারক মুছতে মুছতে ইরশাদ মুবারক করেন, যে ক্বওমের লোক তাদের মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরুল্লাহ অর্থাৎ মহাসম্মানিত দাঁত মুবারক ভেঙ্গে দিয়েছে, কি করে তাদের উন্নতি ও সফলতা আসবে? তিনি তাদের ব্যাপারে উক্ত দোয়া মুবারক করেছেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করলেন, ‘আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এই বিষয়ে আপনার কিছু করার প্রয়োজন নেই।’ অর্থাৎ আপনাকে মানহানী ও কষ্ট দেয়ার শাস্তি আমি স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক কাফির মুশরিকদের থেকে গ্রহণ করবো। তাদেরকে কঠিন আযাব গযবে নিপতিত করবো। সুবহানাল্লাহ! সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সুবহানা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম! (মুসলিম শরীফ: পবিত্র হাদীছ শরীফ নং- ৪৪৯৬, মুসনাদে আহমদ, সুনানে তিরমিযী, ইবনে হাব্বান, মা’রিফাতুস সুন্নাহ ওয়াল আছার, ফাতহুল বারী, উমদাতুল ক্বরী) (চলবে)।
-আল্লামা সাইয়্যিদ শাবীব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৮)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৬)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৭)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৫)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৪)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৩)
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (২)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (১)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১০)
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৩)
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)